নির্বাচিত প্রতিনিধি না থাকায় দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ হচ্ছে না: আমীর খসরু..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
Without elected representatives, no administration is accountable — that's why local and foreign investments are stagnant, says BNP's Amir Khasru. He warns Bangladesh risks becoming a failed..

নির্বাচন ছাড়া কোনো প্রশাসন দায়বদ্ধ থাকে না, আর এজন্য দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ বন্ধ — বললেন আমীর খসরু। হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, নির্বাচিত সরকার ছাড়া দেশ ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত হবে।

নির্বাচিত প্রতিনিধি ছাড়া কোনো দেশ এগোতে পারে না — এমন মন্তব্য করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, দেশে এখন পুলিশ ও সরকারি কর্মকর্তারা দায়হীনভাবে কাজ করছে, যার ফলাফল হচ্ছে বিনিয়োগ স্থবিরতা। স্থানীয় বিনিয়োগকারীরা অপেক্ষা করছেন একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য, আর বিদেশি বিনিয়োগকারীরা সরে দাঁড়াচ্ছেন রাজনৈতিক অনিশ্চয়তার কারণে।

আজ রোববার রাজধানীর সেগুনবাগিচার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) আয়োজিত এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। ‘উত্তাল জুলাইয়ে ফ্যাসিবাদ পতন আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে আহত ভাসানী জনশক্তি পার্টির চেয়ারম্যান শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলুসহ রাজনীতিবিদ, ছাত্র-জনতার অবদান এবং আগামীর বাংলাদেশ’ শীর্ষক এই সভার আয়োজন করেছিল ভাসানী জনশক্তি পার্টি।

আমীর খসরু বলেন, “নির্বাচিত সরকার না থাকায় আজ দেশে বিনিয়োগ নেই, উন্নয়ন নেই। দেশে প্রশাসন দায়মুক্ত হয়ে গেছে। বিশ্বজুড়ে আমরা দেখেছি — বিপ্লবের মাধ্যমে স্বাধীন হওয়া অনেক দেশ যখন গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া মেনে নির্বাচন করেছে, তখন তারা এগিয়ে গেছে। আর যারা নির্বাচন থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে, তারা ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে।”

তিনি আরও বলেন, “জুলাইয়ের আন্দোলনের মূল উদ্দেশ্য ছিল জনগণের মালিকানা পুনঃপ্রতিষ্ঠা, সাংবিধানিক অধিকার পুনরুদ্ধার। বিএনপি কখনও আন্দোলনের কৃতিত্ব দাবি করেনি, বরং ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের মাধ্যমে সরকারের পতনের লক্ষ্যেই কাজ করছে। আন্দোলনে সবচেয়ে বেশি ত্যাগ করেছে বিএনপির নেতাকর্মীরা — তবুও আমরা আন্দোলনের কৃতিত্ব কুড়িয়ে নিতে চাইনি। আমরা চাই, নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠিত হোক।”

জুলাই আন্দোলন নিয়ে বিভ্রান্তি ছড়ানোর চেষ্টা চলছে বলেও অভিযোগ করেন খসরু। তিনি বলেন, “আন্দোলন হাইজ্যাকের কোনো সুযোগ নেই। যারা নির্বাচন ভয় পায়, তাদের প্রতি আমার পরামর্শ — নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করাই ভালো। হাসিনার পতন ছাড়া দেশে স্থিতিশীলতা ফিরবে না। যদি ৫ আগস্টের মধ্যে সরকারের পতন না ঘটত, তাহলে আমরা ঘরে ফিরতাম না।”

বিএনপির এই নেতা আরও বলেন, গণতন্ত্রের মূল সৌন্দর্য হলো — প্রশাসন জবাবদিহির মধ্যে থাকে। নির্বাচনের মাধ্যমে নির্বাচিত সরকার থাকলে প্রত্যেক কর্মকর্তা-কর্মচারী ভয় পায় জনগণের কাছে জবাবদিহি করতে। আর সেটা না থাকলেই শুরু হয় দুর্নীতি, অপব্যবস্থা ও প্রশাসনিক অব্যবস্থাপনা।

তিনি স্পষ্টভাবে বলেন, “আমরা বাকশালের পথে হাঁটছি না, যেমনটা শেখ হাসিনার পিতা করেছিলেন। আজ শেখ হাসিনার পালানোর পর জনগণের চিন্তা পাল্টে গেছে। সেই চিন্তা মাথায় রেখে এখন রাজনৈতিক দলগুলোকে এগোতে হবে, গণআন্দোলনকে এগিয়ে নিতে হবে।”

সভায় সভাপতিত্ব করেন ভাসানী জনশক্তি পার্টির চেয়ারম্যান শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু এবং সঞ্চালনা করেন দলটির মহাসচিব আবু ইউসুফ সেলিম।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার, গণফোরামের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি সুব্রত চৌধুরী, বাসদের সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশীদ ফিরোজ, জেএসডির সাধারণ সম্পাদক শহীদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন ও নাগরিক ঐক্যের সাধারণ সম্পাদক শহীদুল্লাহ্ কায়সার প্রমুখ।

没有找到评论