এ সময় ড. হিলালী বক্তব্যে বলেন, ছাত্রদল নেতা শামিম নিখোঁজ হওয়ার পর একদিন, দুদিন করে ১০ দিন পার হয়ে গেছে। প্রথম দিকে ধারণা ছিল, হয়তো কোথাও বন্ধু-বান্ধবের সঙ্গে গেছেন, কিংবা মোবাইল হারিয়ে যোগাযোগ বিঘ্নিত হয়েছে। কিন্তু তিন দিন পার হওয়ার পরই আমরা নিশ্চিত হই, এটি কোনো দুর্ঘটনা বা পরিকল্পিত গুমও হতে পারে।
ড. হিলালী আরো বলেন, আমি ব্যক্তিগতভাবে এবং দলীয়ভাবে প্রশাসনের সর্বোচ্চ পর্যায়ে যোগাযোগ করেছি। জেলা বিএনপির আহ্বায়ক ডা. আনোয়ার সাহেব, পুলিশ সুপার, ওসি, সবার সাথেই কথাবার্তা বলেছি। তাঁরা আন্তরিকতার আশ্বাস দিয়েছেন, তবে আশ্বাসে তো সন্তানের কষ্ট লাঘব হয় না।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, ১০ দিনেও যদি একজন রাজনৈতিক কর্মীর হদিস না মেলে, তবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও প্রশাসন ব্যর্থ। আমরা তো এখনও কোনো মিছিল-মিটিং করিনি, আইন নিজের হাতে নেইনি। প্রশাসনের প্রতি বিশ্বাস রেখেছি। কিন্তু এখন ধৈর্যের বাঁধ ভেঙে যাচ্ছে।
রফিকুল ইসলাম হিলালী বলেন, সিলেটের বিএনপি নেতা ইলিয়াস আলীসহ এইসব গুমের ইতিহাস আমাদের চোখের সামনে। তবে এখন তো আওয়ামী লীগ সরকার নাই, ইউনুস সাহেবের সরকার। তাহলে এখন কেন এমন গুম? এখন কেন প্রশাসনের ব্যর্থতা?
তিনি প্রশাসনের উদ্দেশে বলেন, "আগামী তিন দিনের মধ্যে শামিমের নিখোঁজের সুনির্দিষ্ট কারণ বের করে আনতে হবে। না হলে জনগণের ন্যায়বিচার ও নিরাপত্তার দাবিতে গ্রামবাসীকে নিয়ে দলমত নির্বিশেষে আমরা কর্মসূচি ঘোষণা করব।"
ড. হিলালী আরো বলেন, পুলিশ ব্যর্থ হলে আমরা সেনাবাহিনী, র্যাব, সিআইডি, সকল সংস্থার দ্বারস্থ হব। আমরা শান্তিপূর্ণভাবে সর্বোচ্চ পর্যায়ে চাপ দিচ্ছি। তবে পরিবারের কান্না শুধু সান্ত্বনা দিয়ে বন্ধ হবে না।
শেষে তিনি আল্লাহর দরবারে ফরিয়াদ করে বলেন, আল্লাহ যেন আমাদের ভাই শামিমকে সুস্থভাবে ফিরিয়ে দেন। আমরা ন্যায়বিচার চাই, আইন ও মানবতার শাসন চাই।
উল্লেখ, কেন্দুয়া উপজেলার গন্ডা ইউনিয়ন ছাত্রদলের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম শামিম। গত ২ জুলাই রাতে পাহারপুর এলাকা থেকে তিনি নিখোঁজ হন। নিখোঁজের পরদিন ৩ জুলাই বড় ভাই মো. সাইফুল ইসলাম কেন্দুয়া থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিড) করেন।
পরবর্তীতে ৫ জুলাই রাত ১০টার দিকে শামুকজানি নদীর ব্রিজের নিচ থেকে কচুরিপানায় ঢাকা অবস্থায় শামিমের ব্যবহৃত মোটরসাইকেল উদ্ধার করা হয়। তবে তার কোনো সন্ধান এখনো পাওয়া যায়নি।