close

কমেন্ট করুন পয়েন্ট জিতুন!

নিজেকে মেয়র ঘোষণার আরজি ফয়জুল করীমের

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
বরিশাল সিটি নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ এনে নিজের বিজয় দাবি করলেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের শীর্ষ নেতা মুফতি ফয়জুল করিম। আদালতে দাখিল করা মামলায় তিনি দাবি করেছেন, প্রকৃত বিজয়ী তিনিই, নৌকা প্রতীক নয়।..

বরিশাল সিটি করপোরেশনের ২০২৩ সালের নির্বাচনে ভোট কারচুপির অভিযোগ এনে নিজেকে বিজয়ী ঘোষণার আবেদন করেছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের নায়েবে আমির এবং হাতপাখা প্রতীকের মেয়র প্রার্থী মুফতি সৈয়দ মো. ফয়জুল করিম। এই দাবির ভিত্তিতে তিনি গত বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) বরিশাল সদর সিনিয়র সহকারী জজ ও নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালে একটি মামলা দায়ের করেছেন।

আদালত মামলাটি আমলে নিয়েছে এবং এখন আদেশের জন্য অপেক্ষায় রাখা হয়েছে। ফয়জুল করিমের পক্ষে মামলাটি দায়ের করেন অ্যাডভোকেট শেখ আব্দুল্লাহ নাসির।

এজাহার সূত্রে জানা গেছে, ২০২৩ সালের ১২ জুন অনুষ্ঠিত বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মোট সাতজন প্রার্থী মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। এর মধ্যে অন্যতম ছিলেন ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থী মুফতি ফয়জুল করিম (হাতপাখা) এবং আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ফুফাতো ভাই আবুল খায়ের আব্দুল্লাহ (নৌকা)।

নির্বাচনের ফলাফলে দেখা যায়, আবুল খায়ের আব্দুল্লাহ পেয়েছেন ৮৭ হাজার ৮০৮ ভোট এবং ফয়জুল করিম পেয়েছেন ৩৩ হাজার ৮২৮ ভোট। তবে মামলার বাদী ফয়জুল করিমের দাবি, এই ফলাফল ছিল পুরোপুরি মনগড়া ও কারসাজিপূর্ণ।

তিনি অভিযোগ করেন, নির্বাচনের দিন ব্যাপকভাবে ‘ভোট ডাকাতি’ করা হয়েছে। প্রশাসনের নিরব ভূমিকা, ভোটকেন্দ্রে গোপন বুথে সন্ত্রাসীদের দাপট এবং গননাকেন্দ্রে ফলাফল পাল্টে দেয়া—সব মিলিয়ে এই নির্বাচনে জনগণের রায়কে বিকৃত করা হয়েছে।

ফয়জুল করিম মামলায় উল্লেখ করেন, যদি নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হতো, তবে তিনি বিপুল ভোটের ব্যবধানে জয়ী হতেন। নৌকা প্রতীকের প্রার্থী আবুল খায়েরের প্রকৃত ভোট তার চেয়ে অনেক কম ছিল বলেও তিনি দাবি করেন।

ফলে আদালতের কাছে তিনি আবেদন করেছেন, এই নির্বাচনকে বাতিল করে নৌকা প্রতীকের প্রার্থীকে অবৈধ ঘোষণা করা হোক এবং তাঁকে (ফয়জুল করিমকে) বরিশাল সিটি করপোরেশনের বৈধ ও বিজয়ী মেয়র হিসেবে ঘোষণা করা হোক।

এদিকে এই মামলার পর বরিশাল রাজনৈতিক অঙ্গনে শুরু হয়েছে নতুন আলোচনার ঝড়। ফয়জুল করিমের এই উদ্যোগকে কেউ কেউ ‘সাহসী’ পদক্ষেপ হিসেবে দেখছেন, আবার কেউ বলছেন, এটি রাজনৈতিক চাপ সৃষ্টির কৌশল।

নির্বাচনী ট্রাইব্যুনাল সূত্রে জানা গেছে, মামলার পরবর্তী কার্যক্রম শুরু হবে আদালতের আদেশ জারির পর। যদি মামলাটি পরবর্তী পর্যায়ে গড়ায়, তাহলে প্রমাণ সংগ্রহ, সাক্ষ্যগ্রহণ এবং সংশ্লিষ্ট প্রার্থীদের জবানবন্দি গ্রহণের মতো গুরুত্বপূর্ণ ধাপগুলো অতিক্রম করতে হবে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ইসলামী আন্দোলন বরিশাল শাখার নেতৃবৃন্দ বলেন, “আমরা আদালতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। জনগণের ভোটে কারচুপি করে একজন অযোগ্যকে জয়ী ঘোষণা করা হয়েছে। আমরা আশা করছি, আদালত সত্যের পক্ষে রায় দেবে।”

অন্যদিকে, নৌকা প্রতীকের প্রার্থী আবুল খায়ের আব্দুল্লাহর পক্ষ থেকে এখনো কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। তবে তাঁর ঘনিষ্ঠ মহল দাবি করছে, নির্বাচন সুষ্ঠুভাবেই সম্পন্ন হয়েছে এবং এই মামলা ভিত্তিহীন।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, যদি আদালত মামলাটি গুরুত্ব দিয়ে শুনানির মাধ্যমে রায় দেন, তবে তা হতে পারে দেশের স্থানীয় সরকার নির্বাচনে নজিরবিহীন একটি ঘটনা।

এখন দেখার বিষয়, বরিশালের এই মামলার রায় কেমন হয়—আদালত কি ভোট ডাকাতির অভিযোগে পুনঃগণনার নির্দেশ দেবে, না কি তা খারিজ করে দেবে?

Комментариев нет