উত্তরায় বিমান বিধ্বস্তে নিহত পাইলট তৌকির ইসলামের প্রথম জানাজা আজ ঢাকায়, পরে রাজশাহীর সপুরা গোরস্থানে দাফন করা হবে।
রাজধানীর উত্তরায় বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর একটি প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত হয়ে নিহত ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট তৌকির ইসলাম সাগরের জানাজা আজ মঙ্গলবার (২২ জুলাই) অনুষ্ঠিত হবে। ঢাকা সেনানিবাসে দুপুরে তার প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হওয়ার পর মরদেহ নেওয়া হবে তার নিজ শহর রাজশাহীতে। সেখানে বিকেলে দ্বিতীয় জানাজা শেষে তাকে দাফন করা হবে রাজশাহী নগরীর সপুরা কবরস্থানে।
তৌকিরের পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, ঢাকা সেনানিবাসে জানাজার সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। পরিবারের সদস্যরাও সেখানে উপস্থিত থাকবেন। রাজশাহীতে তার দ্বিতীয় জানাজা শেষে গ্রামের আত্মীয়-স্বজন, বন্ধু-বান্ধব ও সহকর্মীরা তাকে শেষ বিদায় জানাবেন। তৌকিরের নানা আজিজুর রহমান জানিয়েছেন, “আমরা চেয়েছিলাম তার শেষ বিদায়টা প্রিয় শহরেই হোক। সে যেভাবে দেশের জন্য জীবন দিল, আমরা গর্বিত কিন্তু গভীরভাবে শোকাহত।”
উল্লেখ্য, সোমবার (২১ জুলাই) দুপুর ১টা ১৮ মিনিটে উত্তরার দিয়াবাড়ি এলাকার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের প্রাথমিক শাখার ভবনে বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর একটি এফ-৭ বিজিআই প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত হয়। দুর্ঘটনার সময় এলাকায় ছিল প্রচণ্ড গরম ও হালকা ঝড়ো বাতাস। স্থানীয়রা বিকট শব্দ শুনে ছুটে এসে দেখতে পান ভবনের একটি বড় অংশ ধসে পড়েছে এবং ধোঁয়া উঠছে।
তাৎক্ষণিকভাবে উদ্ধার কাজ শুরু করে ফায়ার সার্ভিস ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে তৌকির ইসলামকে দ্রুত সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) নেওয়া হয়। কিন্তু চিকিৎসকদের সর্বোচ্চ চেষ্টা সত্ত্বেও তাকে বাঁচানো সম্ভব হয়নি। দুর্ঘটনার মুহূর্তের একটি ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হলে তা জনমনে গভীর শোক ও ক্ষোভের জন্ম দেয়।
তৌকির ইসলাম সাগর ছিলেন বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর উদীয়মান ও সাহসী এক অফিসার। প্রশিক্ষণ চলাকালীন এ ধরনের দুর্ঘটনায় তার প্রাণহানিতে সহকর্মীরা ভেঙে পড়েছেন। বিমানবাহিনীর পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, এ ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত হবে এবং ভবিষ্যতে যাতে এমন দুর্ঘটনা না ঘটে তা নিশ্চিত করা হবে।
এ ঘটনায় নিহত পাইলটের পরিবার, সহকর্মী এবং দেশের সাধারণ মানুষ সবাই শোকে স্তব্ধ। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অনেকে লিখছেন, “একজন তরুণ পাইলটের এভাবে চলে যাওয়া মেনে নেওয়া কঠিন। তার আত্মত্যাগ জাতি মনে রাখবে।”
তৌকির ইসলামের অকাল মৃত্যু যেনো আরেকবার মনে করিয়ে দিল, যারা আকাশে দেশের জন্য দায়িত্ব পালন করেন, তাদের জীবন প্রতিদিনই ঝুঁকির মধ্যে থাকে।