নেত্রকোনার পূর্বধলা উপজেলায় ট্রেনের টিকিট বিক্রিতে অনিয়মের অভিযোগে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ও ময়মনসিংহ রেলওয়ে থানা পুলিশের যৌথ অভিযানে বলাকা কমিউটার ট্রেনের টিকিট মাস্টারসহ তিনজনকে আটক করা হয়েছে।
গতকাল সোমবার বিকেলে এই অভিযান পরিচালিত হয়। আটককৃত ব্যক্তিরা হলেন বলাকা কমিউটার ট্রেনের টিকিট মাস্টার মো. সিরাজুল ইসলাম, বলাকা কমিউটার ট্রেনের টিকিট কাউন্টারের এজেন্ট বদরুল আলম ঝুমন এবং কাউন্টার পরিচালনার দায়িত্বে থাকা স্থানীয় ব্যক্তি আবুল কাশেম ওরফে জাপান।
রেলওয়ে পুলিশ ও সেনাবাহিনী সূত্রে জানা গেছে, বলাকা কমিউটার ট্রেনের যাত্রীরা টিকিট না পেয়ে ক্ষুব্ধ হয়ে যৌথ বাহিনীকে খবর দেন। খবর পেয়ে যৌথ বাহিনী ঘটনাস্থলে উপস্থিত হলে টিকিট কাউন্টারের বাইরে বিক্রির বিষয়টি সামনে আসে।
জিজ্ঞাসাবাদে অভিযুক্তরা প্রথমে টিকিট শেষ হয়ে যাওয়ার কথা বলেন। কিন্তু পরবর্তীতে টিকিট বিক্রির টাকা এবং বিক্রি হওয়া টিকিটের সংখ্যা মেলাতে গিয়ে দেখা যায়, টিকিট বিক্রির মোট ১৬ হাজার ৫৬০ টাকা থাকার কথা থাকলেও কাউন্টারে পাওয়া যায় মাত্র ১২ হাজার ৭৫০ টাকা। টিকিট বিক্রির সাথে তিন হাজার ৮৯০ টাকা কম পাওয়ায় তাঁদেরকে প্রশ্ন করা হলে তাঁরা সন্তোষজনক কোনো উত্তর দিতে পারেননি।
পরে তিনজনকে আটক করে ময়মনসিংহ রেলওয়ে থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়। ময়মনসিংহ রেলওয়ে থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আখতার হোসেন জানান, যৌথ বাহিনীর অভিযানে তিন ব্যক্তিকে আটক করে থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে এবং এই ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে স্থানীয় জনসাধারণ ও যাত্রীরা নিরাপত্তা ও সেবা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। টিকিট বিক্রিতে অনিয়মের এই ঘটনা শুধু আর্থিক ক্ষতি নয়, বরং যাত্রীদের যাতায়াতে অসুবিধার সৃষ্টি করেছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এমন ঘটনা রোধে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের আরও কঠোর মনিটরিং প্রয়োজন। ভবিষ্যতে এমন ঘটনা এড়াতে প্রযুক্তিগত সমাধানের পাশাপাশি সঠিক ও কার্যকর যাচাই-বাছাই প্রক্রিয়া নিশ্চিত করতে হবে। রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ যদি সেবা উন্নত করতে সফল হয়, তাহলে যাত্রীদের আস্থা পুনরুদ্ধার করা সম্ভব হবে।
এই ঘটনা দেশের রেলওয়ে ব্যবস্থার উপর গুরুত্ব আরোপ করছে এবং এটি প্রমাণ করছে যে সঠিক ব্যবস্থাপনার অভাবে কীভাবে যাত্রীদের দুর্ভোগ বাড়তে পারে। কর্তৃপক্ষের উচিত দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করে যাত্রী সেবার মান উন্নয়ন করা।