close

কমেন্ট করুন পয়েন্ট জিতুন!

নেতানিয়াহুর পক্ষে সাফাই গাইলেন ট্রা ম্প

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
ট্রাম্প নেতানিয়াহুকে যুদ্ধকালীন বীর আখ্যা দিয়ে দুর্নীতির বিচার বাতিলের দাবি তুলেছেন। ট্রুথ সোশ্যালে দিয়েছেন আবেগঘন বার্তা।..

যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আবারও বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে। এবার তিনি সরাসরি আহ্বান জানিয়েছেন, ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে চলমান দুর্নীতির বিচার অবিলম্বে বন্ধ করতে। নিজের ট্রুথ সোশ্যাল প্ল্যাটফর্মে দেওয়া এক আবেগঘন পোস্টে তিনি নেতানিয়াহুকে ‘যুদ্ধকালীন মহান নেতা’ হিসেবে অভিহিত করেছেন এবং তাকে আদালতের মুখোমুখি করা একেবারেই অনুচিত বলেও মন্তব্য করেছেন।

ট্রাম্প লিখেছেন, “যে ব্যক্তি এত কিছু দিয়েছেন, যিনি এত ত্যাগ স্বীকার করেছেন, তার বিরুদ্ধে এই ‘উইচ হান্ট’ মামলাগুলো সম্পূর্ণ কল্পনাতীত। নেতানিয়াহু শুধু একজন নেতা নন, তিনি ইসরায়েলের পবিত্র ভূমির প্রকৃত রক্ষক।”

ট্রাম্প জানান, তিনি সম্প্রতি জানতে পেরেছেন যে নেতানিয়াহুকে সোমবার আদালতে হাজিরা দিতে বলা হয়েছে। এরপর থেকেই তিনি সোচ্চার হয়েছেন এই বিচার প্রক্রিয়া বন্ধে। নিজের পোস্টে ট্রাম্প বলেন, “বিবি (নেতানিয়াহুর ডাকনাম) ও আমি একসঙ্গে নরকের মধ্য দিয়ে গেছি। আমরা একসাথে লড়েছি ইরানের মতো ভয়ংকর শত্রুর বিরুদ্ধে। এমন একজন মহান দেশপ্রেমিককে এভাবে বিচারের মুখোমুখি করা অন্যায়।”

তিনি আরও বলেন, “নেতানিয়াহুর প্রতি আমার অগাধ শ্রদ্ধা। একজন জাতীয় বীরের প্রতি এর চেয়ে বড় অবমাননা আর হতে পারে না। এই বিচার অবিলম্বে বাতিল করা উচিত অথবা তাকে ক্ষমা করা উচিত।”

প্রসঙ্গত, নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে দুর্নীতি, ক্ষমতার অপব্যবহার এবং প্রতারণাসহ একাধিক মামলার বিচার চলছে। এসব মামলা শুরু হয়েছিল ২০২০ সালের মে মাসে। তবে যুদ্ধ পরিস্থিতি, বিশেষ করে গাজা ও লেবাননে সাম্প্রতিক সংঘর্ষের কারণে বারবার বিচার পিছিয়েছে। নেতানিয়াহু নিজেও আদালতের কাছে বিচার স্থগিত রাখার অনুরোধ করেছেন।

তবে সবচেয়ে আলোচিত প্রথম মামলায় নেতানিয়াহু ও তার স্ত্রী সারা নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে বিলাসবহুল উপহার গ্রহণের অভিযোগ আনা হয়। অভিযোগ, রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তারের বিনিময়ে তারা বিভিন্ন ধনী ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে প্রায় দুই লাখ ৬০ হাজার ডলার মূল্যের উপহার – যেমন সিগার, দামি গহনা ও শ্যাম্পেন গ্রহণ করেছেন।

আরেকটি মামলায় অভিযোগ, নেতানিয়াহু কিছু প্রভাবশালী সংবাদমাধ্যমকে নিজের পক্ষে আনতে সংবাদ কভারেজে প্রভাব বিস্তারের চেষ্টাও করেছিলেন। যদিও নেতানিয়াহু বারবার এই সব অভিযোগ অস্বীকার করে এসেছেন এবং বলেছেন, এগুলো তার রাজনৈতিক ক্যারিয়ার নষ্ট করার ষড়যন্ত্রের অংশ।

ট্রাম্প বলেন, “আমাদের দেশ (যুক্তরাষ্ট্র) যেমন একসময় ইসরায়েলকে রক্ষা করেছে, এবারও যুক্তরাষ্ট্র নেতানিয়াহুকে রক্ষা করবে। আমরা কখনোই এমন একজন বন্ধুকে ভুলে যেতে পারি না, যিনি সংকটের সময় পাশে ছিলেন।”

ট্রাম্পের এই মন্তব্য নিয়ে ইতোমধ্যে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে নানা প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। অনেকেই বলছেন, ট্রাম্পের এই বক্তব্য ইসরায়েলের বিচার ব্যবস্থায় সরাসরি হস্তক্ষেপের শামিল। আবার কেউ কেউ বলছেন, নেতানিয়াহু ও ট্রাম্পের রাজনৈতিক সম্পর্ক বরাবরই ঘনিষ্ঠ, তাই এমন বক্তব্য আশ্চর্যের কিছু নয়।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই ঘটনার মাধ্যমে আবারও স্পষ্ট হলো, আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে ব্যক্তি সম্পর্ক কতটা প্রভাব ফেলতে পারে। যেখানে একদিকে চলমান দুর্নীতি মামলায় নেতানিয়াহু রাজনৈতিক চাপে, সেখানে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্টের এমন উষ্ণ সমর্থন হয়তো তাকে কিছুটা হলেও মনোবল জোগাবে।

নেতানিয়াহুর পক্ষ থেকে এখনো এ বিষয়ে কোনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। তবে ট্রাম্পের এই পোস্ট সোশ্যাল মিডিয়ায় ইতোমধ্যেই ভাইরাল হয়ে গেছে, এবং ইসরায়েলি রাজনীতিতেও এ নিয়ে আলোচনা তুঙ্গে।

কোন মন্তব্য পাওয়া যায়নি