close

ভিডিও আপলোড করুন পয়েন্ট জিতুন!

নারীকে কুপ্রস্তাবের অভিযোগ জামায়াত নেতার বিরুদ্ধে, অডিও ভাইরাল..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
Jamaat leader Akram Hossain Palash from Pabna faces serious allegations of bribery and making indecent proposals to a woman in connection with VWB card distribution. A leaked audio has sparked public ..

পাবনার আটঘরিয়ায় ভিডব্লিউবি কার্ড নিয়ে অনিয়মের পাশাপাশি এক নারীকে কুপ্রস্তাব দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে জামায়াত নেতা আকরাম হোসেন পলাশের বিরুদ্ধে। অডিও ভাইরাল হতেই এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে।

পাবনার আটঘরিয়া উপজেলার দেবোত্তর ইউনিয়নে লনারেবল উইমেন বেনিফিট (ভিডব্লিউবি) কার্ড বিতরণ ঘিরে ভয়াবহ অনিয়ম ও অপব্যবহারের অভিযোগ উঠে এসেছে। স্থানীয়ভাবে বিতর্কিত হয়ে ওঠা এই ঘটনার কেন্দ্রে রয়েছেন ইউনিয়ন জামায়াতের প্রচার সম্পাদক আকরাম হোসেন পলাশ। অভিযোগ উঠেছে, কার্ড বিতরণে প্রতি সুবিধাভোগীর কাছ থেকে ২ হাজার টাকা ঘুষ নেওয়া হচ্ছে। পাশাপাশি এক নারীকে কুপ্রস্তাব দেওয়ার একটি অডিও ক্লিপ ভাইরাল হওয়ার পর সমগ্র এলাকায় ব্যাপক আলোড়ন তৈরি হয়েছে।

ভাইরাল হওয়া অডিওতে স্পষ্টভাবে শোনা যায়, একজন নারী আকরাম হোসেন পলাশের সঙ্গে ফোনে কথা বলছেন। তিনি নিজের পরিচয় দেওয়ার পর আকরাম বলেন, “আপনাকে বলেছি ভাবী, আমার সঙ্গে দেখা করেন। একটু কোলাকুলি করি, আর কাজটাও করে দিই।” এরপর আরও অশালীন মন্তব্য করেন তিনি, যা সংবাদমাধ্যমে প্রকাশযোগ্য নয়।

আকরাম হোসেন পলাশ হলেন শ্রীকান্তপুর গ্রামের মো. আলাউদ্দিন খানের ছেলে এবং পাবনা জেলা জামায়াতের নায়েবে আমির ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মাওলানা জহুরুল ইসলাম খানের ভাতিজা। রাজনৈতিক ও সামাজিকভাবে প্রভাবশালী এই নেতার বিরুদ্ধে এমন আচরণের অভিযোগ সাধারণ মানুষের মনে ক্ষোভের আগুন জ্বালিয়ে দিয়েছে।

দেবোত্তর ইউনিয়নের বাসিন্দারা জানিয়েছেন, ভিডব্লিউবি কার্ড যারা পাওয়ার কথা, তারা নয় বরং রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা থাকলেই সুবিধা পাওয়া যাচ্ছে। অনেকেই অভিযোগ করছেন, টাকা ছাড়া কোনো কার্ড দেওয়া হচ্ছে না। এমন অনৈতিক কর্মকাণ্ডে নারীর প্রতি অসম্মানজনক আচরণ যুক্ত হওয়ায় ব্যাপারটি আরও জটিল রূপ নিয়েছে।

অভিযোগ অস্বীকার করেছেন আকরাম হোসেন পলাশ। তিনি বলেন, “আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র হচ্ছে। অডিওটি উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে বানানো, এটা একটি রাজনৈতিক অপপ্রচার।

তবে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান রতন মোল্লা বিষয়টি নিয়ে স্বচ্ছতা রাখার চেষ্টা করছেন। তিনি জানান, দেবোত্তর ইউনিয়নে মোট ৩৪০টি ভিডব্লিউবি কার্ড বরাদ্দ ছিল। কিন্তু অজ্ঞাত কারণে জামায়াত নেতাদের অনুরোধে ১৮টি কার্ড তাদের হাতে তুলে দেওয়া হয়। এ সিদ্ধান্ত কোথা থেকে এসেছে, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে।

এ বিষয়ে আটঘরিয়া উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা রামকৃষ্ণ পাল বলেন, “যদি কেউ দুর্নীতি করে থাকে, আমরা তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।” তিনি আরও জানান, এই কার্ড মূলত হতদরিদ্র নারীদের জন্য, যাদের প্রকৃতই সহায়তার প্রয়োজন।

সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্যটি এসেছে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মিনহাজুল ইসলামের কাছ থেকে। তিনি জানিয়েছেন, “গত ৭ জুলাই এক নারী আমার কাছে এসে মৌখিক অভিযোগ করেছেন এবং সেই ভাইরাল অডিও আমাকে শুনিয়েছেন। আমি তাকে আইনি প্রক্রিয়ার আশ্রয় নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছি।”

এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে দেবোত্তর ইউনিয়নসহ আটঘরিয়া উপজেলার বিভিন্ন মহলে নিন্দার ঝড় বইছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে চলছে তীব্র আলোচনা-সমালোচনা। এলাকার সাধারণ মানুষ প্রশ্ন তুলেছেন—যেখানে অসহায় নারীদের জন্য সহায়তা বরাদ্দ, সেখানে একজন রাজনৈতিক নেতা কীভাবে অনৈতিকভাবে প্রভাব খাটিয়ে ব্যক্তিস্বার্থে তা ব্যবহার করেন?

এখন দেখার বিষয় হচ্ছে, প্রশাসন ও সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলো এই ঘটনার প্রেক্ষিতে কী পদক্ষেপ নেয় এবং নারী নিরাপত্তা ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে আদৌ কোনো কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয় কিনা।

לא נמצאו הערות