আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে নির্বাচন কমিশনের প্রস্তাবিত সীমানা পুনর্নির্ধারণের খসড়ায় নারায়ণগঞ্জ-৫ আসন থেকে বন্দর উপজেলাকে বাদ দেওয়ার উদ্যোগের বিরুদ্ধে আজ শুক্রবার বিকেলে এক জোরালো মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়েছে।
জুমার নামাজের পর বন্দরের নবীগঞ্জ বাসস্ট্যান্ডে আয়োজিত মানববন্ধনে অংশগ্রহণ করেন এলাকার সর্বস্তরের জনগণ। সাধারণ মানুষ, রাজনৈতিক কর্মী, শিক্ষক, ছাত্র, ইমাম, ব্যবসায়ীসহ বিভিন্ন শ্রেণিপেশার প্রতিনিধিরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে উপস্থিত হয়ে তাদের প্রতিবাদ জানান।
এ সময় বক্তারা বলেন, “বন্দর উপজেলা ইতিহাস-ঐতিহ্যে ভরপুর এবং দীর্ঘদিন ধরে নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের অংশ হিসেবে উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডে যুক্ত। হঠাৎ করে বন্দরকে এই আসন থেকে বাদ দেওয়ার যে ষড়যন্ত্র চলছে, তা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং জনবিচ্ছিন্ন সিদ্ধান্ত।”
মানববন্ধনে বক্তৃতা রাখেন সমাজসেবক মোদাসসির রহমান, যুবনেতা কাওসার শুভ, মাওলানা বদরুল আলম, ওয়াজিন উদ্দিন দীপ্তি, নাজির হোসেন ও আদনান পলকসহ অনেকে। তারা বলেন, নির্বাচন কমিশন যদি এই খসড়া অনুযায়ী সীমানা চূড়ান্ত করে, তাহলে বন্দরবাসী কঠোর আন্দোলনে যেতে বাধ্য হবে।
নির্বাচন কমিশনের খসড়ায় দেখা যায়, নারায়ণগঞ্জ-৩ আসনের সঙ্গে যুক্ত করা হচ্ছে বন্দরের পাঁচটি ইউনিয়ন। অপরদিকে, নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের ২৭টি ওয়ার্ডকে রাখা হয়েছে নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের অন্তর্ভুক্ত।
এই পরিবর্তনের ফলে বন্দর উপজেলাবাসীর রাজনৈতিক প্রতিনিধিত্ব এবং উন্নয়ন কার্যক্রমে অংশগ্রহণ ব্যাহত হবে বলেও মন্তব্য করেন অনেকে। সাধারণ মানুষ আশঙ্কা প্রকাশ করেন, এ ধরনের বিভাজন এলাকায় বিভ্রান্তি, উন্নয়ন অচলাবস্থা এবং নেতৃত্বহীনতা তৈরি করবে।
স্থানীয়দের দাবি, নির্বাচন কমিশন যেন পুনর্বিবেচনার মাধ্যমে এই খসড়া বাতিল করে পূর্বের সীমানা বহাল রাখে। তারা হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, “এই আন্দোলন ছিল প্রতীকী। তবে দাবি উপেক্ষিত হলে বৃহত্তর কর্মসূচি ও অবরোধের ডাক আসবে।”
বন্দর উপজেলা নারায়ণগঞ্জ জেলার একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশাসনিক ও ঐতিহাসিক অংশ, যা শিল্প, ব্যবসা এবং জনসংখ্যার দিক থেকে বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ। তাই এলাকাবাসীর মতামতকে উপেক্ষা করে কোনো সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হলে তা গণবিরোধী বলেই গণ্য হবে।