close

লাইক দিন পয়েন্ট জিতুন!

নানা আয়োজনে সুন্দরবনে মধু আহরণ শুরু

শেখ আমিনুর হোসেন, সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টার, সাতক্ষীরা avatar   
চলতি মৌসুমে ১ হাজার ৫০০ কুইন্টাল মধু ও ৪০০ কুইন্টাল মোম আহরণের লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে সুন্দরবনে মধু আহরণ শুরু হয়েছে..
শেখ আমিনুর হোসেন, জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক, সাতক্ষীরা: চলতি মৌসুমে ১ হাজার ৫০০ কুইন্টাল মধু ও ৪০০ কুইন্টাল মোম আহরণের লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে সুন্দরবনে মধু আহরণ শুরু হয়েছে।
 
সোমবার (৭ এপ্রিল '২৫) সকালে বুড়িগোয়ালিনী ফরেস্ট ৭১নং প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বনবিভাগের আয়োজনে খুলনা বিভাগীয় বন কর্মকর্তা এজেডএম হাসানুর রহমানের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি শ্যামনগর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রুনী খাতুন মৌসুমের উদ্বোধন করেন। এসময় বিশেষ অতিথি ছিলেন  শ্যামনগর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) আব্দুল্লাহ্ আল রিফাত, সাতক্ষীরা রেঞ্জের সহকারী বনসংরক্ষক (এসিএফ) মশিউর রহমান, শ্যামনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হুমায়ুন কবির মোল্লা, বুড়িগোয়ালিনী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান গাজী নজরুল ইসলাম। এসময় আরও বক্তব্য রাখেন, মধু গবেষক মইনুল ইসলাম,  সাংবাদিক কল্যাণ ব্যানার্জি, মৌয়াল আব্দুল হাকিম গাজী, আবু মুসা প্রমুখ।
 
এছাড়া বিজিবি, কোস্টগার্ড, নৌপুলিশ, ট্যুরিস্ট পুলিশ, বিভিন্ন এনজিও প্রতিনিধিগণ, সমাজসেবক, সাংবাদিকসহ মৌয়ালদের নিয়ে উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শুরু হয়।
 
আগামী ৩০ জুন পর্যন্ত পর্যন্ত ওই সমস্ত এলাকায় মধু সংগ্রহ করতে পারবেন মৌয়ালরা।
 
বক্তারা বলেন, এবার প্রতি কুইন্টাল (১০০ কেজি) মধুর জন্য সরকারকে ১ হাজার ৬০০শ টাকা এবং মোমের জন্য ২ হাজার ২০০ টাকা রাজস্ব দিতে হবে। সাতক্ষীরা রেঞ্জের আওতায় মৌয়ালরা সুন্দরবনের পুষ্পকাটি, নোটাবেকী, দোবেকি ও কাচিকাটা এলাকায় মধু আহরণ করতে পারবেন। 
সুন্দরবনের মধু একটি ঐতিহ্যবাহী ও বিশ্বমানের প্রাকৃতিক সম্পদ। এই মধুর গুণগতমান বজায় রাখতে মৌয়ালদের সততা ও নিয়ম মেনে আহরণ নিশ্চিত করতে হবে।
 
তারা আরও বলেন, সুন্দরবনের মধুকে বিশ্ব দরবারে সেরা মধু হিসেবে তুলে ধরতে হলে এর বিশুদ্ধতা রক্ষা করা জরুরি।
 
অনুষ্ঠানে স্থানীয় মৌয়ালরাও অংশ নেন এবং তাদের সচেতনতা বৃদ্ধিতে নানা দিকনির্দেশনা প্রদান করা হয়।
 
মৌয়ালদের মধ্যে মোঃ আবু মুসা বলেন, মৌচাক থেকে যদি সময় মত মধু আহরণ না করা যায় তাহলে সেই অঞ্চলে মধু হয় না। অভয়ারণ্য এলাকা যদি খুলে দেওয়া হয়। তাহলে সুন্দরবনে মধুর অভাব হবে না। অভয়ারণ্যে সময় মত মধু কাটা হয় না বলে প্রতিনিয়ত সুন্দরবনের মধু কমে যাচ্ছে। আমাদের দাবি মধুর সময় অভয়ারণ্য এলাকাকে মুক্ত করে দেওয়া।
 
সোনার বাংলা ম্যানগ্রোভ ইকো ট্যুরিজম এর সত্ত্বাধিকারী নাজমুল শাহাদাত পলাশ বলেন, সুন্দরবনের মধু ব্যবসায়ীদের বন বিভাগের পক্ষ থেকে নিবন্ধন দিতে হবে। তারা যেন বুঝাইতে পারে এটা সুন্দরবনের মধু আমরা ছাড়া অন্য কেউ বিক্রি করতে পারবেনা। তা না হলে অনলাইনে যেভাবে মধু বিক্রি শুরু হয়েছে অধিকাংশ ক্রেতারা সুন্দরবনের মধুর উপরে ভিন্ন ধারণা তৈরি হচ্ছে।
তিনি আরো বলেন সুন্দরবনের অধিকাংশ জায়গা বাংলাদেশের ভিতরে অথচ জিআই সুবিধা নিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ। সুন্দরবনের মধু যেন জিআই স্বীকৃতি পায় সেজন্য তিনি উপজেলা প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।
 
শ্যামনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোছাঃ রনী খাতুন বলেন, সুন্দরবনের খলিসা ফুলের মধুকে জিআই স্বীকৃতি পাওয়ার জন্য সব ধরনের চেষ্টা করা হবে। আশা করি আগামী দুই এক বছরের মধ্যে এই সফলতা আপনারা দেখতে পারবেন। 
 
বিভাগীয় বন কর্মকর্তা হাছানুর রহমান বলেন, ২০২৪ সালের সাতক্ষীরা রেঞ্জে ৩৬৪ পাশে ২৪৭১ মাধ্যমে ১২৩৫.৫০ কুইন্টাল মধু আহরণ করা হয় ও ৩৭০.৬৫ কুইন্টাল মোম সংগ্রহ হয়। এতে সরকারি রাজস্ব আদায় হয় ২৭,৯২,২৩০ টাকা। ২০২৫ সালে ১৫শত কুইন্টাল মধু ৪শত কুইন্টাল মোম আহরণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। পহেলা এপ্রিল থেকে এখনো পর্যন্ত ৩৭ টা মধুর পাশ হয়েছে।
コメントがありません