মুক্তিযুদ্ধের সময়ও আওয়ামী লীগ পালিয়ে গিয়েছিল , মঈন খান..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
ঢাবির অনুষ্ঠানে মঈন খান বলেন, মুক্তিযুদ্ধের সময়ও আওয়ামী লীগ পালিয়েছিল। জাতীয়তাবাদ গঠনে ব্যর্থ দলটি আজও গণতন্ত্রকে ধ্বংস করছে।..

আজ ঢাকার ঐতিহ্যবাহী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আধুনিক ভাষা ইনস্টিটিউটের সেমিনার কক্ষে অনুষ্ঠিত হলো এক ব্যতিক্রমধর্মী আলোচনা সভা ও কবিতা পাঠ অনুষ্ঠান। শিরোনাম ছিল—শহীদ জিয়া ও বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদ।
আয়োজক: জাতীয়তাবাদী লেখক ফোরাম

এই অনুষ্ঠানের প্রধান আকর্ষণ ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী ড. আব্দুল মঈন খান। তিনি তার বক্তব্যে সরাসরি অভিযোগ করে বলেন—পালিয়ে যাওয়াই আওয়ামী লীগের চরিত্র। মুক্তিযুদ্ধের সময়ও তারা দেশ ছেড়ে পালিয়ে গিয়েছিল।

মঈন খান বলেন, গত ১৬ বছর ধরে দেশের মানুষের দুঃখ দুর্দশা বোঝেনি আওয়ামী লীগ। তারা সবসময়ই ক্ষমতার মোহে বুঁদ হয়ে থেকেছে। একসময় যেমন পালিয়েছিল, আজও দেশ ছেড়ে পালাতে বাধ্য হচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, মাত্র ১১ মিনিটের সংসদ অধিবেশনে গণতন্ত্রকে হত্যা করে আওয়ামী লীগ একদলীয় শাসন কায়েম করেছিল। কিন্তু শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান সেই স্বৈরতন্ত্র ভেঙে বহুদলীয় গণতন্ত্র ফিরিয়ে দেন—এটাই বাংলাদেশের বাস্তব ইতিহাস।

আলোচনায় বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদের গুরুত্ব তুলে ধরে মঈন খান বলেন,শহীদ জিয়া বলেছিলেন—বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদ এক পুষ্পমাল্য, যেখানে বাঙালি হলো একটি বড় ফুল, আর এই মালায় থাকা অন্যান্য ফুল হলো চাকমা, মারমা, সাঁওতাল, হাজং, খাসিয়া, মুন্ডা, কোচ, রাজবংশী প্রভৃতি জাতিগোষ্ঠী। সবাই মিলে গঠিত হয়েছে একটি শক্তিশালী জাতীয়তাবাদ, যার নাম ‘বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদ’। এই দৃষ্টিভঙ্গিই আমাদের একতার প্রতীক।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে মঈন খান বলেন, জাতীয়তাবাদ কোনো একক গোষ্ঠীর বিষয় নয়। শুধু বাঙালি পরিচয় দিয়ে জাতিকে সংজ্ঞায়িত করা যাবে না। বাংলাদেশে প্রায় ৫০টি আদিবাসী জাতিগোষ্ঠী রয়েছে, তাদের স্বীকৃতি ও মর্যাদা দিয়েই গঠন করতে হবে আমাদের জাতীয়তাবাদ।

অনুষ্ঠানের মূল আলোচক ছিলেন অর্থনীতিবিদ ড. মাহবুব উল্লাহ। তিনি বলেন, আমরা নিজেদের পরিচয় নিয়ে যতক্ষণ গর্বিত হতে পারব না, ততক্ষণ আমাদের সার্বভৌমত্ব হুমকির মুখে থাকবে।
তিনি বাংলা ভাষার গৌরব, শক্তি ও মর্যাদা নিয়েও কথা বলেন, এবং সেনাবাহিনীতে এর ব্যবহার তুলে ধরে জানান—এটি শুধু মধুর নয়, প্রয়োজন পড়লে অত্যন্ত তেজস্বীও হতে পারে।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন কবি শাহীন রেজা এবং সঞ্চালনা করেন কবি ড. শহিদ আজাদ। উদ্বোধনী বক্তব্য দেন কবি আল মুজাহিদি। সভায় বক্তারা রাজনৈতিক চিন্তা, সাহিত্য এবং জাতীয়তাবাদের সংমিশ্রণে নতুন দৃষ্টিভঙ্গির প্রস্তাব রাখেন।

ড. মঈন খানের এই বক্তব্য যে রাজনীতিতে নতুন আলোড়ন তুলবে, তা বলাই বাহুল্য।
বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদ বনাম বাঙালি জাতীয়তাবাদ বিতর্ক আবারও সামনে চলে এসেছে এই বক্তব্যের মাধ্যমে।
বিশেষত, মুক্তিযুদ্ধ ও গণতন্ত্রকে ঘিরে এমন মন্তব্য দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন বিতর্কের জন্ম দেবে বলে ধারণা রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের।

Nema komentara