close

লাইক দিন পয়েন্ট জিতুন!

মস্তিষ্ক ছাড়াই জন্ম নেওয়া অ্যালেক্স সিম্পসনের ২০তম জন্মদিন পালন..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
যদি কেউ তার আশপাশে মানসিক চাপে থাকে, অ্যালেক্স সেটা টের পায়। কিছু না ঘটলেও সে অনুভব করে। যেমন—আমার দাদি যদি ব্যথায় কষ্ট পান, অ্যালেক্সও সেটা বুঝতে পারে।..

যুক্তরাষ্ট্রের নেব্রাস্কার এক তরুণী অ্যালেক্স সিম্পসন চিকিৎসা বিজ্ঞানে এক অলৌকিক দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। জন্মের সময় চিকিৎসকরা যিনি চার বছরের বেশি বাঁচবেন না বলে আশঙ্কা করেছিলেন, সেই অ্যালেক্স সিম্পসন সম্প্রতি পালন করেছেন তার ২০তম জন্মদিন। বিরল রোগ হাইড্রানেনসেফালিতে (Hydranencephaly) আক্রান্ত এই তরুণী মানবদেহের অভিযোজন ক্ষমতা এবং অলৌকিক জীবনশক্তির এক অনন্য উদাহরণ।

অ্যালেক্স সিম্পসনের জন্মের দুই মাস পর চিকিৎসকরা জানান, তিনি হাইড্রানেনসেফালি নামে এক বিরল স্নায়বিক রোগে আক্রান্ত। এই রোগের কারণে তার মাথায় স্বাভাবিক মস্তিষ্ক গঠিত হয়নি।

  • শারীরিক অবস্থা: চিকিৎসকদের তথ্য অনুযায়ী, অ্যালেক্সের মস্তিষ্কের যে অংশ দেখা, শোনা ও বোঝার কাজ করে, তা সম্পূর্ণরূপে অনুপস্থিত। তার মাথার ভেতরে কেবল মেরুদণ্ডের গোড়ায় আঙুলের ডগার চেয়েও ছোট অল্প কিছু মস্তিষ্ক কোষ রয়েছে।

  • ভবিষ্যৎবাণী ভুল: জন্মের সময় চিকিৎসকরা অ্যালেক্সের পরিবারকে বলেছিলেন, তিনি চার বছরের বেশি বাঁচবেন না। কিন্তু সেই আশঙ্কাকে ভুল প্রমাণ করে অ্যালেক্স বর্তমানে ২০ বছর বয়সেও সুস্থ আছেন, যা চিকিৎসা ইতিহাসে বিরল।

অ্যালেক্সের পরিবার মনে করে, মস্তিষ্কের কার্যকারিতা অনুপস্থিত থাকা সত্ত্বেও তিনি আশপাশের পরিবেশ অনুভব করতে পারেন, যা এই ঘটনাটিকে আরও অলৌকিক করে তুলেছে।

  • বাবার বিশ্বাস: অ্যালেক্সের বাবা শন সিম্পসন বলেন, "২০ বছর আগে আমরা ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম; কিন্তু বিশ্বাসই আমাদের টিকিয়ে রেখেছে।"

  • ভাইয়ের পর্যবেক্ষণ: অ্যালেক্সের ১৪ বছর বয়সী ভাই এসজে তার বোনের এই অনুভূতি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করেন। এসজে বলেন:

    "যদি কেউ তার আশপাশে মানসিক চাপে থাকে, অ্যালেক্স সেটা টের পায়। কিছু না ঘটলেও সে অনুভব করে। যেমন—আমার দাদি যদি ব্যথায় কষ্ট পান, অ্যালেক্সও সেটা বুঝতে পারে।"

এসজে আরও জানান, তিনি গর্বিত যে অ্যালেক্স তার বোন এবং তাকে আরও ভালোভাবে সহায়তা করার জন্য তিনি নিজের সময় ব্যয় করে বিষয়টি নিয়ে পড়াশোনা করেন।

চিকিৎসকরা অ্যালেক্স সিম্পসনকে জীবন্ত বিস্ময় হিসেবে অভিহিত করেছেন। তাদের মতে, মস্তিষ্ক ছাড়াই একজন মানুষের এত দীর্ঘ সময় সুস্থভাবে বেঁচে থাকা চিকিৎসা ইতিহাসে অত্যন্ত বিরল ঘটনা।

এই জীবন মানব শরীরের অভিযোজন ক্ষমতার এক অনন্য উদাহরণ। এটি প্রমাণ করে যে, মানবদেহ সবচেয়ে কঠিন পরিস্থিতিতেও টিকে থাকার জন্য অপ্রত্যাশিত জৈবিক কৌশল তৈরি করতে পারে, যা বিজ্ঞানীদের কাছেও গবেষণার নতুন দিগন্ত খুলে দিয়েছে।

অ্যালেক্স সিম্পসনের ২০ বছর বয়স পর্যন্ত টিকে থাকা শুধু তার পরিবারের কাছেই নয়, বরং পুরো বিশ্বের চিকিৎসা সম্প্রদায়ের কাছে এক অলৌকিক দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।

Ingen kommentarer fundet


News Card Generator