চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে জুমার নামাজের পূর্বে মসজিদে দাঁড়িয়ে দোয়া চাওয়ার সময় জামায়াতের মনোনীত প্রার্থী আনোয়ার সিদ্দিক চৌধুরীকে লাঞ্ছিতের চেষ্টা করে ছাত্রলীগ ও যুবলীগের সন্ত্রাসীরা। পুলিশ আসলে তারা পালিয়ে যায়।
চট্টগ্রাম-৪ সীতাকুণ্ড আসনে রাজনৈতিক উত্তেজনা নতুন মাত্রা পেয়েছে। গত শুক্রবার (তারিখ) উপজেলার সলিমপুর ইউনিয়নের হযরত কালুশাহ জামে মসজিদে এক অভূতপূর্ব ঘটনা ঘটে, যা স্থানীয় পর্যায়ে ব্যাপক আলোচনা ও সমালোচনার জন্ম দিয়েছে। বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী চট্টগ্রাম উত্তর জেলার সাংগঠনিক সম্পাদক এবং চট্টগ্রাম-৪ আসনের মনোনীত সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী আনোয়ার সিদ্দিক চৌধুরী জুমার নামাজের পূর্বে মসজিদের মুসল্লিদের উদ্দেশ্যে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য রাখার সময় একদল যুবলীগ ও ছাত্রলীগের কর্মী মসজিদের ভেতরে ঢুকে তাকে লাঞ্ছিত ও অপমান করার চেষ্টা করে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, আনোয়ার সিদ্দিক চৌধুরী সেই সময়ে মসজিদ কমিটির অনুমতি নিয়ে বক্তব্য দিচ্ছিলেন। বক্তব্যে তিনি নিজের ব্যক্তিগত ও পারিবারিক পরিচিতি তুলে ধরে মুসল্লিদের কাছে দোয়া চান। তিনি রাজনৈতিক কোনো বক্তব্য দেননি। কিন্তু মসজিদের বাইরে অপেক্ষমাণ ২০-৩০ জন যুবলীগ ও ছাত্রলীগের কর্মী হঠাৎ ভেতরে ঢুকে উচ্চস্বরে কটূক্তি শুরু করে এবং বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে। উপস্থিত মুসল্লিদের দাবি, এদের অধিকাংশের বিরুদ্ধে নানা অপরাধের মামলা রয়েছে এবং তারা এলাকায় সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত।
এ সময় পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠলে খবর পেয়ে পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে যায়। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে অভিযুক্তরা দ্রুত পালিয়ে যায়। ফলে কোনো বড় ধরনের সংঘর্ষ ঘটেনি, তবে ঘটনাটি মসজিদে উপস্থিত মুসল্লিদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ ও উদ্বেগের সৃষ্টি করেছে।
ঘটনার শিকার প্রার্থী আনোয়ার সিদ্দিক চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, “বিগত দুই মাস ধরে আমি উপজেলার বিভিন্ন মসজিদে জুমার নামাজের পূর্বে মুসল্লিদের কাছে দোয়া চাইছি। মসজিদ কমিটির অনুমতি নিয়ে মাত্র দুই-চার মিনিটের বক্তব্য দিচ্ছি। কিন্তু আজ কিছু সন্ত্রাসী পরিকল্পিতভাবে আমার সম্মান নষ্ট করার চেষ্টা করেছে।”
স্থানীয় মুসল্লি সেলিম মেম্বার বলেন, “এর আগে আওয়ামী লীগের এমপি ও উপজেলা চেয়ারম্যানও মসজিদে এসে বক্তব্য দিয়েছেন। কিন্তু আজ একজন বিরোধী দলের প্রার্থী হওয়ায় তাকে অপমানের চেষ্টা করা হয়েছে। বিষয়টি নিন্দনীয়।”
আরেক মুসল্লি ব্যবসায়ী তারেকের দাবি, এই হামলার পেছনে সাবেক খতিব ওমাইয়া রেজবির ভক্ত কিছু যুবলীগ–ছাত্রলীগ কর্মী জড়িত। তারা পূর্বপরিকল্পিতভাবে মসজিদে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করেছে।
সীতাকুণ্ড থানার ওসি মুজিবুর রহমান বলেন, “এ ঘটনায় এখনও কেউ থানায় অভিযোগ বা মামলা করেনি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
ঘটনার পর থেকে এলাকায় রাজনৈতিক উত্তেজনা বিরাজ করছে। স্থানীয়রা মনে করছেন, নির্বাচনের আগে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের এ ধরনের হয়রানি পরিস্থিতিকে আরও অস্থির করে তুলতে পারে।