মোদিকে হাড়িভাঙ্গা আম উপহার পাঠাচ্ছেন ড. ইউনূস

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
To strengthen diplomatic ties, Dr. Muhammad Yunus sends 1,000 kg of Haribhanga mangoes to Indian Prime Minister Narendra Modi as a sweet symbol of Bangladesh-India friendship.

ড. ইউনূস ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির জন্য ১ হাজার কেজি হাড়িভাঙ্গা আম পাঠাচ্ছেন, যা দুই দেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ককে আরও দৃঢ় করতে ‘সৌহার্দ্য কূটনীতি’র অংশ।

বাংলাদেশ-ভারতের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কে নতুন মাত্রা যোগ করতে বাংলাদেশ সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির জন্য উপহার হিসেবে পাঠাচ্ছেন এক হাজার কেজি বিখ্যাত হাড়িভাঙ্গা আম। এ এক অভিনব কূটনৈতিক উদ্যোগ, যা দুই দেশের সম্পর্কের ইতিহাসে ‘আম কূটনীতি’ হিসেবে পরিচিত।

ঢাকায় ভারতের হাইকমিশন সূত্রে জানা গেছে, আগামী ১৫ জুলাই মঙ্গলবার নয়াদিল্লিতে পৌঁছাবে এই ‘মধুর’ চালান। শুধুমাত্র ভারতের প্রধানমন্ত্রী মোদিই নন, এই আম পাঠানো হবে আরো বেশ কয়েকজন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির জন্যও—যাদের মধ্যে আছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, ভারত সরকারের উচ্চপর্যায়ের কূটনীতিক ও কর্মকর্তারা।

বাংলাদেশ-ভারতের সম্পর্ক শুধুমাত্র রাজনীতি ও অর্থনীতির স্তরেই সীমাবদ্ধ নয়, বরং একে আরও প্রাণবন্ত করেছে নানা সাংস্কৃতিক ও কূটনৈতিক প্রথা। এর মধ্যে অন্যতম 'আম কূটনীতি', যা প্রতিবছরই দুই দেশের নেতাদের মধ্যে মৌসুমি ফল বিনিময়ের মাধ্যমে বন্ধুত্ব ও সৌহার্দ্য প্রকাশের একটি উল্লেখযোগ্য উপায়।

বাংলাদেশ বহু বছর ধরে ভারতের রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী ও রাজ্য প্রধানদের জন্য উপহার হিসেবে হাড়িভাঙ্গা বা ল্যাংড়া জাতের সুস্বাদু আম পাঠিয়ে আসছে। একইভাবে ভারতও বিভিন্ন উৎসবে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী এবং গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের জন্য বিশেষ উপহার পাঠিয়ে থাকে।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সার্বিক তত্ত্বাবধানে এবং নির্দিষ্ট রপ্তানিকারকের মাধ্যমে এই বিশাল আমের চালানটি পাঠানো হচ্ছে। বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলের বিখ্যাত আম অঞ্চল চাপাইনবাবগঞ্জ ও রাজশাহী থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে এই হাড়িভাঙ্গা আম।

গত ১০ জুলাই বৃহস্পতিবার, একই উদ্যোগের অংশ হিসেবে ত্রিপুরা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ও স্থানীয় বিশিষ্ট ব্যক্তিদের জন্যও ৩০০ কেজি আম পাঠানো হয় আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে। সে চালানটি ছিল মোট ৬০টি কার্টনে, যা বিকেল ৫টা ১৫ মিনিটে সীমান্ত অতিক্রম করে।

এই উদ্যোগ শুধু সৌহার্দ্যের বার্তাই নয়, বরং দেশের আম শিল্প এবং কৃষিপণ্য রপ্তানির জন্য একটি সম্মানজনক প্রচারণাও বটে।

এই ধরনের ‘সফট কূটনীতি’ অনেক সময় কঠিন রাজনৈতিক বার্তা বা চুক্তির চেয়ে অনেক বেশি প্রভাব ফেলতে পারে। এক প্যাকেট মিষ্টি ফল বহুবার উষ্ণ সম্পর্কের ভিত্তি গড়ে তুলেছে, যেখানে শত মিটিংও ব্যর্থ হয়েছে।

ড. ইউনূসের এই ব্যতিক্রমী আম উপহার প্রেরণ কেবল প্রটোকল পালনের অংশ নয়, বরং তা দুই দেশের জনগণের মাঝে পারস্পরিক শ্রদ্ধা, সৌহার্দ্য ও হৃদ্যতার প্রতীক হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।

এই হাড়িভাঙ্গা আমের প্রতিটি রসালো কামড়ে রয়েছে দুই প্রতিবেশী দেশের সম্পর্কের সুমিষ্ট ভবিষ্যৎ। এই উপহারের মাধ্যমে প্রমাণিত হয়, কখনো কখনো একটি ফলও হতে পারে কূটনীতির সবচেয়ে শক্তিশালী অস্ত্র।

コメントがありません