close

কমেন্ট করুন পয়েন্ট জিতুন!

মিস্টার ট্রাম্প, আমরা কারা জানতে কারবালার ইতিহাস পড়ুন

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
ইরানের ইসলামিক রিপাবলিক এবং সামরিক বাহিনী যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে সরাসরি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছে— “আমাদের চিনতে চাইলে কারবালার ইতিহাস পড়ুন।” ট্রাম্পের পারমাণবিক মন্তব্য ও তেহরা..

আন্তর্জাতিক উত্তেজনার আবহে আবারও আলোচনায় উঠে এলেন সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তবে এবার তার মন্তব্যের জবাবে একেবারে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে ইরানের সামরিক বাহিনী এবং ইসলামিক রিপাবলিক অফ ইরান— যেটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপকভাবে ভাইরাল হয়ে পড়েছে।

সম্প্রতি ট্রাম্প তার সামাজিক মাধ্যম 'ট্রুথ সোশ্যাল'-এ একটি পোস্টে বলেন, “সবারই অবিলম্বে তেহরান ছেড়ে যাওয়া উচিত!” তবে কেন এই সতর্কবার্তা, সে বিষয়ে তিনি বিস্তারিত কিছু বলেননি। একই পোস্টে তিনি ইরানের পারমাণবিক কার্যক্রম নিয়েও ক্ষোভ প্রকাশ করেন।

ট্রাম্পের বক্তব্য ছিল—

ইরানকে যে ‘চুক্তি’ স্বাক্ষর করতে বলেছিলাম, তাতে স্বাক্ষর করা উচিত ছিল। কী লজ্জাজনক এবং মানব জীবনের অপচয়! আমি বহুবার বলেছি, ইরান পারমাণবিক অস্ত্র পেতে পারে না।

এই বক্তব্যের পরপরই, ইরানের মিলিটারি বাহিনী তাদের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে এবং ইসলামিক রিপাবলিক অফ ইরান নামের এক্স (সাবেক টুইটার) হ্যান্ডেল থেকে ট্রাম্পকে উদ্দেশ করে লেখে

মিস্টার ডোনাল্ড ট্রাম্প! আপনি যদি না জানেন আমরা কারা, তাহলে কারবালার ইতিহাস পড়ুন।

এই একটি লাইনই মুহূর্তেই ভাইরাল হয়ে পড়ে। সামাজিক মাধ্যমে লক্ষাধিক ব্যবহারকারী পোস্টটি শেয়ার ও মন্তব্য করতে থাকেন। বিশেষ করে শিয়া মুসলিমদের জন্য কারবালা একটি ঐতিহাসিক প্রতীক, যেখানে জুলুমের বিরুদ্ধে ইমাম হোসাইন আত্মত্যাগ করে অন্যায়ের কাছে মাথা নত না করার বার্তা দিয়েছেন। ইরান সেই ঐতিহ্যকেই নিজের শক্তির উৎস হিসেবে তুলে ধরছে বলে বিশ্লেষকদের ধারণা।

অনেক বিশ্লেষক বলছেন, ট্রাম্পের এই হুঁশিয়ারি মূলত ইসরায়েলকে ঘিরে মধ্যপ্রাচ্যে বাড়তে থাকা উত্তেজনার অংশ। ইরান ইতোমধ্যেই ইসরায়েলের বিরুদ্ধে সরাসরি প্রতিরোধ গড়ে তুলছে, এবং গাজা-লেবাননের পরিস্থিতিতেও সক্রিয়ভাবে যুক্ত আছে। এই পরিস্থিতিতে ইরানকে “পারমাণবিক ক্ষমতা থেকে বিরত রাখতে হবে”— এমন বার্তা বহুবার ট্রাম্প দিয়েছেন, যা আবারও উঠে এসেছে।

অন্যদিকে, ইরানের প্রতিক্রিয়া এবার আর কূটনৈতিক ভাষায় নয়— বরং সরাসরি ঐতিহাসিক ও ধর্মীয় প্রতীক ব্যবহার করে। ইরানের বার্তার মাধ্যমে তারা একটি স্পষ্ট বার্তা দিতে চেয়েছে— "আমরা ভয় পাই না, আমরা লড়াই করি ন্যায়ের পক্ষে।"

এই বিবৃতি এমন এক সময় এল, যখন মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা চরমে। একদিকে ইসরায়েল-গাজা সংঘর্ষ, অন্যদিকে হিজবুল্লাহ ও অন্যান্য প্রতিরোধ গোষ্ঠীগুলোর সক্রিয় অবস্থান, ইরান এই পুরো পরিস্থিতিতে নিজেদের এক শক্তিশালী পক্ষ হিসেবে দেখাতে চায়।

বিশ্লেষণ:

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, কারবালার ইতিহাস উদ্ধৃত করে ইরান শুধু ট্রাম্পকে নয়, গোটা পশ্চিমা দুনিয়াকেই সতর্ক করেছে। তারা চায় বিশ্বের সবাই জানুক— ইরান শুধু অস্ত্রে নয়, আদর্শেও শক্তিশালী। কারবালা হলো সেই আদর্শ যেখানে সত্য, ন্যায় ও আত্মত্যাগ মিলিত হয়েছে এক মহৎ সংগ্রামে।

ডোনাল্ড ট্রাম্পের সতর্কতা এবং ইরানের প্রতিক্রিয়া— এ দুটি ঘটনা মধ্যপ্রাচ্যে নতুন করে উত্তেজনার ইঙ্গিত দিচ্ছে। আগামী দিনে পরিস্থিতি কোন দিকে মোড় নেয়, সেটাই এখন দেখার বিষয়। তবে একটি বিষয় স্পষ্ট— ইরান কোনো হুমকিকে চুপচাপ মেনে নেবে না।

Hiçbir yorum bulunamadı