close

ভিডিও আপলোড করুন পয়েন্ট জিতুন!

“মিডিয়া ছুটাই দেব”—পুলিশ সুপারের হুমকি, কুড়িগ্রামে সাংবাদিকের ফোন কেড়ে ভিডিও ডিলিট!..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
কুড়িগ্রামের চিলমারীতে সংবাদ সংগ্রহের সময় এক সাংবাদিকের মোবাইল ফোন কেড়ে নিয়ে ভিডিও ডিলিট করার অভিযোগ উঠেছে পুলিশ সুপারের বিরুদ্ধে। ঘটনাস্থলে সাংবাদিককে হুমকি দিয়ে তিনি বলেন, "মিডিয়া ছুটাই দে..

কুড়িগ্রাম জেলার চিলমারী উপজেলায় সাংবাদিক নির্যাতনের এক অস্বস্তিকর ঘটনা সামনে এসেছে, যা পুরো সাংবাদিক সমাজকে নাড়া দিয়েছে। বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) রাত সাড়ে ১০টার দিকে চিলমারীর হরিপুর তিস্তা সেতু সংলগ্ন এলাকায় সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে এক সাংবাদিককে তার মোবাইল ফোন থেকে ভিডিও ডিলিট করে দিতে বাধ্য করা হয়। এই ঘটনায় সরাসরি জড়িত থাকার অভিযোগ উঠেছে কুড়িগ্রামের পুলিশ সুপার মো. মাহফুজুর রহমানের বিরুদ্ধে।

প্রত্যক্ষদর্শী ও ভুক্তভোগী সূত্রে জানা গেছে, ওই রাতে চিলমারী-সুন্দরগঞ্জ উপজেলার হরিপুর শহরের মোড়ে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়, যখন মা-মেয়েকে উত্ত্যক্ত করার অভিযোগে এলাকাবাসী দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়ে। স্থানীয় প্রশাসন ও নিরাপত্তা বাহিনী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে দ্রুত পদক্ষেপ নেয়। সেনাবাহিনীও সেখানে উপস্থিত হয়ে সংঘর্ষ থামাতে সহায়তা করে।

পরবর্তীতে, পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের জন্য জেলা পুলিশ সুপার মো. মাহফুজুর রহমান ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যান। এ সময় ‘স্বদেশ প্রতিদিন’ পত্রিকার চিলমারী প্রতিনিধি ও চিলমারী সাংবাদিক ফোরামের সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম সাদ্দাম ঘটনাস্থলের ছবি ও ভিডিও ধারণ করছিলেন। ঠিক তখনই পুলিশ সুপার সাংবাদিকের দিকে তেড়ে এসে ক্ষিপ্ত ভাষায় বলেন, “ফোন দেন, ভিডিও করছেন কেন?” এরপর পাশে থাকা এক পুলিশ সদস্য সাংবাদিকের মোবাইল ফোনটি নিয়ে তাৎক্ষণিকভাবে ধারণ করা ভিডিও ও ছবি ডিলিট করে দেন।

সেখানে থেমে থাকেননি এসপি মাহফুজুর। সাংবাদিককে উদ্দেশ করে তিনি সরাসরি হুমকি দেন, “মিডিয়া ছুটাই দেব।”
এই উক্তিটি দ্রুত সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে এবং সাংবাদিকদের মাঝে তীব্র প্রতিক্রিয়া তৈরি করে।

ভুক্তভোগী সাংবাদিক জাহাঙ্গীর আলম সাদ্দাম ঘটনার বিস্তারিত বর্ণনা দিয়ে বলেন, “আমি সংবাদ সংগ্রহের জন্য গেলে এসপি সাহেব আমার ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। তিনি আমার সাংবাদিক পরিচয় জানার পর আরও উত্তেজিত হন এবং বলেন, ফোন কেড়ে নাও। সাথে থাকা পুলিশ সদস্য তাৎক্ষণিকভাবে ফোন নিয়ে ভিডিও ডিলিট করে দেন।”

এ ঘটনায় কুড়িগ্রাম জেলার সাংবাদিকরা একজোট হয়ে প্রতিবাদে মুখর হন। কুড়িগ্রাম প্রেস ক্লাবের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মাহফুজার রহমান টিউটর জানান, “একজন সরকারি কর্মকর্তা এ ধরনের আচরণ করতে পারেন না। তিনি প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী। এমন আচরণ কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। তাঁর উচিত জনসমক্ষে ক্ষমা চাওয়া।”

এ ঘটনায় পুলিশ প্রশাসনের দায়িত্বশীল আচরণ নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন উঠেছে। সংবাদ মাধ্যমের স্বাধীনতা ও নিরাপত্তা নিয়ে যে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে, তা শুধু কুড়িগ্রাম নয়—পুরো দেশের সাংবাদিক সমাজে নাড়া দিয়েছে।

ঘটনার বিষয়ে জানতে কুড়িগ্রাম জেলা পুলিশ সুপার মো. মাহফুজুর রহমানের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি এবং মেসেজেরও কোনো উত্তর দেননি।

সাংবাদিক নেতারা বলছেন, এ ঘটনার ন্যায়বিচার না হলে ভবিষ্যতে সংবাদকর্মীরা পেশাগত দায়িত্ব পালনে চরম ঝুঁকির মধ্যে পড়বেন। একইসাথে তাঁরা ঘটনার উচ্চপর্যায়ে তদন্ত দাবি করেছেন।

לא נמצאו הערות


News Card Generator