বিশ্ব শরণার্থী দিবসের প্রেক্ষাপটে রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে দৃঢ় অবস্থান নিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেওয়া এক বিবৃতিতে তিনি বলেছেন, মিয়ানমার থেকে বিতাড়িত হয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের নিরাপদ, সম্মানজনক ও স্বেচ্ছামূলক প্রত্যাবাসনের জন্য এখনই সময় মিয়ানমারের ওপর কূটনৈতিক চাপ জোরদার করার।
তারেক রহমানের বক্তব্যে উঠে এসেছে, কক্সবাজারসহ আশেপাশের অঞ্চলে বর্তমানে প্রায় ১৪ লাখ রোহিঙ্গা বাস করছে। তাদের আশ্রয় দিয়ে বাংলাদেশ যে মানবিকতার নজির স্থাপন করেছে, তা আন্তর্জাতিক মহলে প্রশংসিত হলেও, বাস্তবতায় এই সংকট এখন দেশের জন্য ভয়াবহ সামাজিক ও অর্থনৈতিক চাপে পরিণত হয়েছে।
তিনি বলেন, "বিশ্ব শরণার্থী দিবসে আমরা কেবল প্রতীকী সহানুভূতি নয়, বরং কার্যকর পদক্ষেপ দেখতে চাই। এই সংকট শুধুমাত্র একটি বৈশ্বিক মানবিক ইস্যু নয়, এটি বাংলাদেশের দৈনন্দিন বাস্তবতা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
তারেক রহমান আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে এই সংকটের প্রতি আরও বেশি দায়িত্বশীল হওয়ার অনুরোধ জানান। তিনি বলেন, "জাতিসংঘ, ওআইসি, ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ বৃহৎ শক্তিগুলোকে এখন কঠিন ভাষায় মিয়ানমার সরকারের প্রতি বার্তা দিতে হবে—রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে ফেরত নিতে হবে, এবং তা অবশ্যই নিরাপদ, সম্মানজনক ও স্বেচ্ছায় হতে হবে।
তিনি বাংলাদেশের বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতিও আহ্বান জানান, যেন রোহিঙ্গা ইস্যুতে জাতীয় কূটনীতিকে সক্রিয় ও জোরালো করা হয়। তার ভাষায়, "এই সংকট এখনো শেষ হয়নি। একে দীর্ঘমেয়াদী করে ফেলা যাবে না।
তারেক রহমানের মতে, এই ধরণের শরণার্থী সংকটের স্থায়ী সমাধান ছাড়া বাংলাদেশের সামাজিক স্থিতিশীলতা, নিরাপত্তা ও অর্থনৈতিক উন্নয়নে বিঘ্ন ঘটবে। তিনি বলেন, "আমরা চাই, প্রত্যেক শরণার্থী যেন তার নিজের মাটিতে ফিরে যেতে পারে, সম্মান ও নিরাপত্তার সঙ্গে।
তিনি জাতিকে আহ্বান জানান—এই মানবিক বিপর্যয়ের শেষ দেখতে আমাদের ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। "আসুন, আমরা প্রতিজ্ঞা করি, একটি শান্তিপূর্ণ ও ন্যায্য ব্যবস্থার জন্য সবাই মিলে কাজ করবো—যাতে আর কেউ নিজের ঘর ছেড়ে অন্য দেশে আশ্রয় নিতে বাধ্য না হয়।
তারেক রহমানের এই বক্তব্য রাজনৈতিক গণ্ডি ছাড়িয়ে একটি মানবিক এবং আন্তর্জাতিক বার্তা বহন করছে। বর্তমান বৈশ্বিক সংকট এবং বাংলাদেশের সীমিত সম্পদের মধ্যে রোহিঙ্গা ইস্যু একটি জ্বলন্ত বাস্তবতা। এই প্রেক্ষাপটে তাঁর বক্তব্য একদিকে যেমন বাংলাদেশ সরকারের জন্য কূটনৈতিক দিকনির্দেশনা, অন্যদিকে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের জন্য একটি বিবেকের প্রশ্ন তুলে দেয়।