close

কমেন্ট করুন পয়েন্ট জিতুন!

মহাসড়কে ডাকাতির সময় ধারালো অস্ত্রসহ ৬ ডাকাত গ্রেফতার

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
Police foiled a major robbery attempt on the Dhaka-Chattogram highway, arresting 6 armed robbers with sharp weapons in Narayanganj.

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের বন্দরে ভয়াবহ ডাকাতির প্রস্তুতিকালে দেশীয় অস্ত্রসহ ৬ ডাকাতকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তাদের কাছ থেকে উদ্ধার হয়েছে কুড়াল, চাপাতি ও ধারালো অস্ত্র।

নারায়ণগঞ্জের বন্দরে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে ভয়াবহ ডাকাতির পরিকল্পনা ভেস্তে দিল পুলিশ। রবিবার দিবাগত রাত দেড়টার দিকে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে দেশীয় অস্ত্রশস্ত্রসহ ৬ ডাকাতকে গ্রেফতার করে বন্দর থানা পুলিশ। এ ঘটনায় এলাকায় স্বস্তি নেমে এসেছে এবং সাধারণ যাত্রীরা পুলিশকে ধন্যবাদ জানাচ্ছেন।

বন্দর থানার পুলিশ জানায়, গ্রেফতারকৃতরা হলো—খায়রুল বাদশ (৩২), মো. সোহেল (৩৫), মো. ইমন (২৪), মেহেদী হাসান (২৮), মো. রবিন (৩২) ও মো. শাহ আলম (৩৫)। এরা দীর্ঘদিন ধরে মহাসড়কের বিভিন্ন এলাকায় যাত্রীবাহী বাস ও মালবাহী ট্রাককে টার্গেট করে ডাকাতি করত বলে প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে।

রবিবার গভীর রাতে বন্দরের মুরাদপুর-দেওয়ানবাগ এলাকায় একদল ডাকাত মহাসড়কে নেমে নাইট কোচ থামিয়ে যাত্রীদের সর্বস্ব লুট করার পরিকল্পনা করছিল। এসময় পুলিশের বিশেষ টহল দল ঘটনাস্থলে পৌঁছে যায়। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে ৫-৬ জন ডাকাত পালিয়ে গেলেও ৬ জনকে হাতেনাতে আটক করা হয়। তাদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয় চাইনিজ কুড়াল, চাপাতি, ছুরি, ধারালো ছেন দা এবং টর্চলাইটসহ বিভিন্ন দেশীয় অস্ত্র।

বন্দর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) লিয়াকত আলী বলেন, “গোপন সংবাদের ভিত্তিতে আমরা খবর পাই মহাসড়কে ডাকাতির প্রস্তুতি চলছে। তৎক্ষণাৎ অভিযান চালিয়ে দেশীয় অস্ত্রসহ ৬ ডাকাতকে গ্রেফতার করা হয়। তাদের বিরুদ্ধে ডাকাতি ও অস্ত্র আইনে মামলা হয়েছে। এছাড়া পালিয়ে যাওয়া অন্যদের শনাক্তের কাজ চলছে।”

তিনি আরও জানান, মহাসড়কে ডাকাতির কারণে যাত্রীদের মধ্যে ভয়ভীতি বিরাজ করছিল। বিশেষ করে গভীর রাতে চলাচল করা যাত্রী ও চালকরা নিরাপত্তাহীনতায় ছিলেন। এই চক্রকে ধরতে পারায় মহাসড়কে কিছুটা হলেও স্বস্তি ফিরবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।

গ্রেফতারকৃত ডাকাতদের সোমবার দুপুরে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, পালিয়ে যাওয়া ডাকাতদেরও দ্রুত আইনের আওতায় আনা হবে। এছাড়া মহাসড়কে নিয়মিত টহল জোরদার করা হবে যাতে যাত্রীরা নির্বিঘ্নে ভ্রমণ করতে পারেন।

স্থানীয়দের দাবি, মহাসড়কে দীর্ঘদিন ধরেই সংঘবদ্ধ ডাকাত চক্র সক্রিয়। তারা বাস, ট্রাক, কাভার্ডভ্যান থেকে শুরু করে প্রাইভেটকার ও মোটরসাইকেল আরোহীদের টার্গেট করত। রাতের অন্ধকারে রাস্তার গাছ কেটে ফেলা বা কৃত্রিমভাবে দুর্ঘটনা ঘটিয়ে গাড়ি থামানোই ছিল তাদের কৌশল। কিন্তু সম্প্রতি পুলিশের বাড়তি তৎপরতায় তাদের কার্যক্রমে ভাটা পড়েছে।

এই ঘটনায় স্থানীয় পরিবহন শ্রমিক ও যাত্রীদের মধ্যে স্বস্তি ফিরে এসেছে। এক ট্রাকচালক বলেন, “রাতে মহাসড়কে চলাচল করতে আমরা ভয় পেতাম। ডাকাতরা অস্ত্র ঠেকিয়ে সব কিছু নিয়ে যেত। এবার পুলিশ যেভাবে অভিযান চালিয়েছে তাতে আমরা নিরাপদ বোধ করছি।”

এদিকে পুলিশ জানিয়েছে, মহাসড়কের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বিশেষ টহল দল নিয়মিত দায়িত্ব পালন করবে। একইসাথে সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপনের কাজও এগিয়ে নেয়া হবে।

এই ঘটনায় প্রমাণিত হলো, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতা থাকলে কোনো অপরাধ চক্রই দীর্ঘদিন সক্রিয় থাকতে পারে না। তবে পালিয়ে যাওয়া ডাকাতদের দ্রুত গ্রেফতার ও চক্রটিকে চূড়ান্তভাবে ভেঙে ফেলা এখন বড় চ্যালেঞ্জ।

No comments found