close

ভিডিও দেখুন, পয়েন্ট জিতুন!

মধ্যপ্রাচ্যে বারুদের ঘ্রাণ: ২৪ ঘণ্টায় যেকোনো মুহূর্তে ছড়িয়ে পড়তে পারে সর্বাত্মক যুদ্ধ!..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
ইরান-ইসরাইল যুদ্ধ এখন আর শুধু দুই দেশের লড়াই নয়—পর্দার আড়ালে ঢুকে পড়েছে যুক্তরাষ্ট্র। ট্রাম্পের বিস্ফোরক বার্তা ঘিরে ভয়াবহ যুদ্ধের আশঙ্কা। শুরু হয়ে গেছে হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলা, ছড়াচ্ছে আগুন। এই..

বিশ্ব রাজনীতির হঠাৎ হিমশীতল বাতাস যেন ধেয়ে আসছে আগ্নেয়গিরির মতো বিস্ফোরিত একটি ভবিষ্যতের দিকে। যুদ্ধের দামামা আর বুলেটের শব্দে কাঁপছে মধ্যপ্রাচ্য। এবং এই মুহূর্তে, আগামী ২৪ ঘণ্টা বিশ্ববাসীর জন্য হতে পারে চরম দুশ্চিন্তার—কারণ পরিস্থিতি যেভাবে গড়াচ্ছে, যে কোনো সময় বিস্ফোরিত হতে পারে বিশ্বযুদ্ধের স্ফুলিঙ্গ।

মঙ্গলবার, যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তার ট্রুথ সোশ্যাল অ্যাকাউন্টে এমন এক বিস্ফোরক বার্তা দেন যা মুহূর্তেই উত্তাল করে তোলে কূটনৈতিক মহল। তিনি বলেন, “আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে বোঝা যাবে ইসরাইল হামলা বাড়াবে না কমাবে।” এর অর্থ, সামনের ২৪ ঘণ্টা জুড়ে ঝুলে আছে যুদ্ধের সর্বোচ্চ ঝুঁকি।

তিনি আরও বলেন, “ইরানের আকাশ এখন আমাদের নিয়ন্ত্রণে… আমরা জানি আয়াতুল্লাহ খামেনি কোথায় আছেন, কিন্তু এখনই তাকে হত্যা করব না।” এবং এর পরেই দিলেন আলটিমেটাম—“নিঃশর্ত আত্মসমর্পণ করতেই হবে ইরানকে।”

এটি স্পষ্টতই জানিয়ে দিলো, এই যুদ্ধ আর কেবল ইসরাইল বনাম ইরান নয়—এই লড়াইয়ে নেতৃত্ব দিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র, আর লক্ষ্যে আছে ‘বিশ্বশান্তি’ নয়, বরং শাসন প্রতিষ্ঠা।

জবাব দিতে দেরি করেনি ইরান। বুধবার ভোরে তারা চালিয়ে দেয় ইতিহাসের অন্যতম ভয়ংকর অস্ত্র—হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র ‘ফাত্তাহ’।
রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন ও ইসলামি বিপ্লবী গার্ড বাহিনীর (আইআরজিসি) বরাতে জানা গেছে, অপারেশন True Promise III-এর অংশ হিসেবে এই ক্ষেপণাস্ত্র ইসরাইলের আকাশ প্রতিরক্ষা ভেদ করে ঢুকে পড়ে।

আইআরজিসির মুখপাত্র কর্নেল ইমান তাজিক বলেন, “এই হামলা প্রমাণ করে, আমরা ইসরাইলের আকাশে পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করেছি।”

ইসরাইলও চুপ থাকেনি। তারা সরাসরি হামলা চালিয়েছে তেহরান থেকে মাত্র ৪০ কিলোমিটার দূরের আলবোর্জ প্রদেশের পায়াম বিমানবন্দরের কাছে। বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে রাজধানীর পূর্বাঞ্চলেও।
ইসরাইলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাৎজ দাবি করেছেন, তারা ইরানি সরকারের "অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা সদর দপ্তর" ধ্বংস করে দিয়েছে।

মাত্র ছয়দিনেই ইসরাইল দাবি করেছে, তারা ১১০০ লক্ষ্যে শত শত ক্ষেপণাস্ত্র ও ১০০০ ড্রোন হামলা চালিয়েছে।

এই সংঘর্ষের সবচেয়ে বিপজ্জনক দিকটি হলো—ইসরাইল হামলা করেছে ইরানের দুইটি সেন্ট্রিফিউজ উৎপাদন কেন্দ্রে।
আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থা (IAEA) জানিয়েছে, তেহরান রিসার্চ সেন্টার ও কারাজের TESA প্ল্যান্টে সরাসরি বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরাইল।
টেলিগ্রামে ইসরাইলি বাহিনীর বিবৃতি অনুযায়ী, ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচিকে ক্ষতিগ্রস্ত করাই তাদের মূল উদ্দেশ্য।

হিউম্যান রাইটস অ্যাকটিভিস্টসের রিপোর্ট অনুযায়ী, ইরানজুড়ে ইসরাইলের হামলায় এ পর্যন্ত নিহত হয়েছেন ৫৮৫ জন, আহত হয়েছেন ১,৩২৬ জন
এর মধ্যে বেসামরিক নাগরিক ২৩৯ জন, এবং ১২৬ জন নিরাপত্তা সদস্য রয়েছেন।
তবে ইরান সরকারের সরকারি হিসেবে এখনো নিহত সংখ্যা ২২৪, আহত ১,২৭৭

গোলান মালভূমির দক্ষিণে একটি ইরানি ড্রোন ঢুকে পড়ার পর ইসরাইলি প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সেটিকে গুলি করে নামায়।
সেনাবাহিনীর ভাষ্য, এটি ইরান থেকেই সরাসরি পাঠানো হয়েছিল, এবং এর মাধ্যমে বোঝা যায় যে সংঘাত আর কোনো সীমার মধ্যে নেই—বিস্তার ঘটছে গোপন ঘাঁটি থেকেও।

বিরলভাবে, ইসরাইল জানিয়ে দিয়েছে তাদের কিছু অঞ্চলে ধাপে ধাপে স্বাভাবিক কার্যক্রম ফিরিয়ে আনা হচ্ছে।
প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাৎজ এটিকে বলেছেন ‘বিজয়ের বার্তা’।
তবে বিশ্লেষকদের মতে, এটি একটি কৌশল মাত্র—বাস্তবে যুদ্ধ এখনো থামার পথে নেই।

ইরান, ট্রাম্পের ‘মধ্যস্থতা’র দাবি উড়িয়ে দিয়েছে। জাতিসংঘে ইরানি মিশন বলেছে, “কোনো ইরানি কর্মকর্তা কখনো হোয়াইট হাউজে মাথা নোয়ায়নি।
ট্রাম্পের মিথ্যা চেয়ে ঘৃণ্য তার কাপুরুষোচিত হুমকি। ইরান কখনো চাপিয়ে দেওয়া শান্তি গ্রহণ করবে না।

এই মুহূর্তে পুরো মধ্যপ্রাচ্য একটি বিস্ফোরক টাইম বোমা—কখন ফেটে পড়ে কেউ জানে না।
ডোনাল্ড ট্রাম্পের ‘পরবর্তী ৪৮ ঘণ্টা’ মন্তব্য এবং ইরান-ইসরাইলের সরাসরি হামলা পাল্টা হামলার এই বাস্তবতায়, আসন্ন ২৪ ঘণ্টা হতে চলেছে আন্তর্জাতিক কূটনীতির জন্য এক কঠিন পরীক্ষা।

আর একটি ভুল সিদ্ধান্ত, একটি ভুল বোতাম চাপ—পরিণতি হতে পারে আরেকটি বিশ্বযুদ্ধ।

 
कोई टिप्पणी नहीं मिली