close

লাইক দিন পয়েন্ট জিতুন!

মবতন্ত্র’ মেনে নেওয়াই সরকারের প্রধান ব্যর্থতা: গোলাম মাওলা রনি..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
সাবেক এমপি গোলাম মাওলা রনি বিস্ফোরক মন্তব্য করে বলেন, দেশের সর্বত্র 'মবতন্ত্র' ছড়িয়ে পড়েছে। প্রশাসন, ধর্মীয় স্থাপনা, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমনকি করপোরেট অফিসেও চলছে মবসন্ত্রাসের তাণ্ডব। এই অবস্থা..

রাজনীতির এক পরিচিত ও স্পষ্টভাষী মুখ, সাবেক সংসদ সদস্য গোলাম মাওলা রনি এক বিস্ফোরক অভিযোগ এনেছেন বর্তমান সরকারের বিরুদ্ধে। তাঁর ভাষায়, "সরকারের সকল ব্যর্থতার মূল শিকড় হলো ‘মবতন্ত্র’কে মেনে নেওয়া।" রাজধানীতে আয়োজিত এক আলোচনায় তিনি বলেন, এই ‘মবতন্ত্র’ আজ দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য, প্রশাসন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, এমনকি ধর্মীয় উপাসনালয় পর্যন্ত গ্রাস করে ফেলেছে।

রনি তার বক্তব্যে তুলে ধরেন, কিভাবে টানা দশ মাস ধরে দেশের প্রতিটি খাতে ‘মব’ বা সংঘবদ্ধ গোষ্ঠীগুলোর নিয়ন্ত্রণ বিস্তার পেয়েছে। তিনি অভিযোগ করেন, বিশ্ববিদ্যালয়, স্কুল-কলেজ, মসজিদ, মন্দির, গির্জা—কোন কিছুই রক্ষা পায়নি এই সন্ত্রাসী তাণ্ডব থেকে। রনির মতে, “মবসন্ত্রাসীরা নির্বিচারে মানুষকে টার্গেট করেছে, আক্রমণ চালিয়েছে, প্রতিষ্ঠান ধ্বংস করেছে। এমনকি টেলিভিশন স্টেশনেও হামলা চালিয়ে ‘কিবোর্ড থেকে বদনা’—সব কিছু গুঁড়িয়ে দিয়েছে।”

তিনি আরও অভিযোগ করেন, করপোরেট অফিসে ঢুকে সিন্দুক ভেঙে টাকা ও চেকবই লুট করা, মালিকদের জিম্মি করে কোটি কোটি টাকা আদায় করা হয়েছে। এগুলো ছিল একেকটা সুপরিকল্পিত হামলা, যার পেছনে ছিল সংঘবদ্ধ অপরাধী চক্রের মদদ।

রনি আরও এক ভয়াবহ চিত্র তুলে ধরেন। তিনি বলেন, “যেখানে মারধরের প্রয়োজন, সেখানে তারা মারধর করেছে। আর ধর্ষণের সুযোগ পেলেই তারা ধর্ষণ করেছে।” তাঁর ভাষায়, “এ এক অদ্ভুত বিশৃঙ্খলা।” এই পরিস্থিতি প্রমাণ করে, দেশে গণবিপ্লব বা ‘জনযুদ্ধ’ সৃষ্টি হওয়ার বাস্তব সম্ভাবনা রয়েছে।

তিনি জানান, শুধু শহরেই নয়, গ্রামাঞ্চলেও চুরিচামারির মতো অপরাধ আশঙ্কাজনকভাবে বেড়ে গেছে। এসব ঘটনা প্রমাণ করে, সমাজে গভীর অস্থিরতা তৈরি হয়েছে এবং জনগণের ভিতরে জমে থাকা ক্ষোভ যেকোনো সময় বিস্ফোরিত হতে পারে।

গোলাম মাওলা রনির বক্তব্য থেকে স্পষ্ট যে, তিনি দেশের সার্বিক পরিস্থিতিকে অস্থির ও সংকটপূর্ণ বলেই মনে করছেন। তাঁর মতে, একটি সুসংগঠিত ও সুশৃঙ্খল রাষ্ট্রে ‘মবতন্ত্র’ কখনোই স্থান পাওয়ার কথা নয়। কিন্তু বর্তমান সরকার এই 'মবতন্ত্র'কে কোনোভাবে থামাতে ব্যর্থ হয়েছে। বরং অনেক ক্ষেত্রে সরকারের নীরবতা বা উদাসীনতা এই চক্রকে আরও শক্তিশালী করেছে।

তিনি বলেন, "সরকার যদি সময়মতো শক্ত অবস্থান না নেয়, তাহলে এই মবতন্ত্রের বিস্তার আরও ভয়াবহ রূপ নেবে। তখন নিয়ন্ত্রণ ফিরিয়ে আনা কঠিন হবে।

গোলাম মাওলা রনির বক্তব্য শুধু রাজনৈতিক বিরোধিতার ভাষ্য নয়—এটি দেশের এক ভয়াবহ বাস্তবতার প্রতিচ্ছবি। যেভাবে তিনি রাষ্ট্রের প্রতিটি স্তরে মবতন্ত্রের প্রভাব তুলে ধরেছেন, তা নতুন করে ভাবতে বাধ্য করে—আমরা কী এক গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে আছি, নাকি একটি সংঘবদ্ধ বিশৃঙ্খলার শাসনে?

No se encontraron comentarios