মাওলানা ভাসানীর আদর্শকে সামনে রেখেই একটি বৈষম্যহীন, শ্রমজীবী মানুষের বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয় ঘোষণা করেছেন এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম।
মাওলানা ভাসানীর আদর্শকে ভিত্তি করেই একটি বৈষম্যহীন ও শ্রমজীবী মানুষের বাংলাদেশ গড়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)-এর আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। তিনি বলেন, “মাওলানা ভাসানী যে মেহনতি মানুষের জন্য রাজনীতি করেছেন, যে বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন দেখেছেন, এনসিপিও ঠিক সেই লক্ষ্যেই যাত্রা শুরু করেছে।”
সোমবার (২৮ জুলাই) রাতে জুলাই অভ্যুত্থান স্মরণে আয়োজিত পদযাত্রায় অংশ নিতে টাঙ্গাইলে এসে মাওলানা ভাসানীর মাজার জিয়ারত শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
নাহিদ ইসলাম বলেন, “মাওলানা ভাসানী ছিলেন কৃষক-শ্রমিক তথা পরিশ্রমজীবী জনগণের রাজনীতির নেতা। তিনি কখনোই ক্ষমতার রাজনীতিকে অনুসরণ করেননি, বরং তিনি জনগণের অধিকার আদায়ে রাজনীতি করেছেন। পাকিস্তানের পিণ্ডি আর ভারতের দিল্লীর আধিপত্যের বিরুদ্ধে যিনি লড়াই করেছেন, তিনি ছিলেন প্রকৃত জাতীয়তাবাদী। আজকের বাংলাদেশে এমন আদর্শিক নেতৃত্বের ঘাটতি রয়েছে।”
তিনি আরও বলেন, “ভাসানী ছিলেন ঊনসত্তরের গণ-অভ্যুত্থানের কারিগর। তার দেখানো পথ ধরেই এনসিপি রাজনীতির ময়দানে এসেছে। আমরা দলীয় স্বার্থে নয়, জনগণের স্বার্থে কাজ করতে চাই। আমরা চাচ্ছি এমন এক বাংলাদেশ, যেখানে বৈষম্য থাকবে না, প্রতিটি মানুষ পাবে ন্যায্য অধিকার।”
এ সময় পদযাত্রা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “জুলাই অভ্যুত্থান ছিল দমন-পীড়নের বিরুদ্ধে মানুষের প্রতিবাদ। সেই আন্দোলনের মূলমন্ত্রকে সামনে রেখেই আমরা টাঙ্গাইলে এই কর্মসূচির আয়োজন করেছি। ইতিমধ্যে জেলা নাগরিক পার্টির নেতাকর্মীরা পদযাত্রা সফল করতে সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে।”
মাজার জিয়ারতের পর জেলা এনসিপির নেতারা রাত কাটান টাঙ্গাইল সার্কিট হাউজে। পরদিন সকালে জেলার শামসুল হক তোরণ থেকে পদযাত্রা শুরু হয়। সকাল সাড়ে ১০টায় পদযাত্রাটি শুরুর পর শহরের বিভিন্ন সড়ক ঘুরে নিরালা মোড়ে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে গিয়ে শেষ হয়।
এই কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে টাঙ্গাইল জেলায় রাজনৈতিক উত্তাপও কিছুটা বেড়েছে। সাধারণ মানুষও ভাসানীর আদর্শের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে এই কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করে। অনেক তরুণ-তরুণীও এনসিপির ব্যানারে শামিল হয়ে সামাজিক ও অর্থনৈতিক বৈষম্যের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের সুর তোলেন।
এনসিপির এই পদক্ষেপকে অনেকেই বলছেন ভবিষ্যতের রাজনীতিতে একটি সাহসী উদ্যোগ। বিশেষ করে, গণতন্ত্র ও ন্যায়বিচারের প্রশ্নে দলটি যে সরাসরি ভাসানীর আদর্শকে পুনর্জাগরিত করতে চাইছে, সেটি রাজনৈতিক অঙ্গনে ভিন্ন মাত্রা যোগ করছে।