close

ভিডিও দেখুন, পয়েন্ট জিতুন!

মাইলস্টোন ট্র্যাজেডি: এবার চলে গেল সপ্তম শ্রেণির জারিফ

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
Another life lost in the Milestone school plane crash—7th grader Zarif has died, taking the death toll to 34.

মাইলস্টোন স্কুলে যুদ্ধবিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় প্রাণ হারাল আরও এক শিশু—সপ্তম শ্রেণির ছাত্র জারিফ। মোট মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ৩৪ জনে।

রাজধানীর উত্তরা দিয়াবাড়ির মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে যুদ্ধবিমান বিধ্বস্তের মর্মান্তিক ঘটনায় মৃত্যুর মিছিল যেন থামছেই না। সর্বশেষ শনিবার সকাল ৯টা ১০ মিনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছে সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থী জারিফ। চিকিৎসকরা দগ্ধ অবস্থায় তাকে বাঁচাতে আপ্রাণ চেষ্টা করলেও শেষরক্ষা হয়নি। এই নিয়ে প্রাণহানির সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩৪ জনে।

দুর্ঘটনাটি ঘটে ২১ জুলাই, দুপুর ১টা ১৮ মিনিটে। বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর একটি যুদ্ধবিমান নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সোজা আছড়ে পড়ে মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের ক্যাম্পাসে। দুর্ঘটনার ভয়াবহতায় মুহূর্তেই ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটির একটি ভবনের বড় অংশ।

এ দুর্ঘটনায় ঘটনাস্থলেই নিহত হন বিমানটির পাইলটসহ বেশ কয়েকজন শিক্ষক, অভিভাবক এবং কোমলমতি শিশুশিক্ষার্থী। শুক্রবার পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা ছিল ৩৩ জন, এবং শনিবার সকালে জারিফের মৃত্যুর মাধ্যমে সেই সংখ্যা আরও বাড়লো। ভয়াবহ আগুন ও ধ্বংসাবশেষের কারণে হতাহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছেন চিকিৎসকরা।

দেড় শতাধিক আহতের মধ্যে অধিকাংশই শিশু। রাজধানীর বিভিন্ন হাসপাতালে এখনো চিকিৎসাধীন অন্তত ৫০ জন। আহতদের শরীরের অধিকাংশ অংশই পুড়ে গেছে। কারও কারও অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাদের লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়েছে।

আহতদের চিকিৎসা নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ সরকারের আমন্ত্রণে চীন, ভারত ও সিঙ্গাপুরের মেডিকেল টিম বাংলাদেশে এসেছে। তারা রাজধানীর জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের চিকিৎসকদের সঙ্গে সমন্বয় করে চিকিৎসা প্রদান করছেন। চিকিৎসকদের মতে, অনেকের সুস্থ হতে লম্বা সময় লাগবে এবং অনেকে চিরস্থায়ী ক্ষত নিয়ে বেঁচে থাকবেন।

ঘটনার দিনই আইএসপিআর (আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর) থেকে জানানো হয়, একটি উচ্চপর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। এ কমিটি দুর্ঘটনার প্রকৃত কারণ অনুসন্ধান করছে এবং একটি পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন প্রস্তুত করবে। তদন্ত কমিটির সদস্যরা ইতিমধ্যে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন এবং বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ করছেন।

এদিকে সরকার এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, তারা ভবিষ্যতে এ ধরনের দুর্ঘটনা যেন আর না ঘটে সে জন্য জাতীয় নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করবে। বিমানবাহিনী ও বেসামরিক উড়োজাহাজ চলাচল নিয়ন্ত্রণে প্রযুক্তিগত আধুনিকায়ন এবং কন্ট্রোল পদ্ধতিতে বড় ধরনের পরিবর্তন আনার পরিকল্পনাও নেওয়া হচ্ছে।

এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনা দেশের মানুষকে কাঁদিয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় শোক জানিয়ে অসংখ্য মানুষ লেখছেন—“শিশুদের কফিন সবচেয়ে ভারী হয়”।

এই দুর্ঘটনা কেবল একটি সংখ্যা নয়, প্রতিটি মৃত্যুই একটি পরিবারের পুরো পৃথিবী হারানোর গল্প। বিশেষ করে শিশু জারিফের মৃত্যুতে বন্ধুরা, শিক্ষকরা এবং এলাকার মানুষ শোকে মুহ্যমান। তাদের একটাই প্রশ্ন—এ জীবনগুলো এত সহজে শেষ হয়ে যাবে?

সরকার এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে জনসাধারণের দাবি—এই দুর্ঘটনার প্রকৃত কারণ প্রকাশ করতে হবে এবং দায়ীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে।

Nema komentara