সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে গত কয়েকদিন ধরে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছেন জনপ্রিয় কনটেন্ট ক্রিয়েটর রিপন মিয়া। একদিকে টেলিভিশনের প্রতিবেদনে তার বিরুদ্ধে উঠেছে মা–বাবাকে অবহেলার অভিযোগ, অন্যদিকে ভাইরাল হওয়া এক আবেগঘন ভিডিও — এই দুই বিপরীত চিত্র যেন মুহূর্তেই পাল্টে দিলো পুরো ঘটনার ধারা।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, জনপ্রিয় এই নির্মাতা বর্তমানে স্ত্রী ও সন্তানকে নিয়ে আলাদা থাকেন এবং নাকি মা-বাবার খরচ বহন করেন না। সেই প্রতিবেদনে রিপনের মায়ের কণ্ঠে উঠে আসে দীর্ঘশ্বাস ও অভিমান— “খুব কষ্ট করে মানুষ করছি, এখন পরিচয়ও দেয় না। আমরা গরিব, পরিচয় দিলে যদি ওর মান–ইজ্জত না থাকে!”
এই সংলাপ প্রকাশ পেতেই সামাজিক মাধ্যমে শুরু হয় তীব্র সমালোচনা। অনেকেই রিপন মিয়াকে “অহংকারী সন্তান”, “অবজ্ঞাকারী ছেলে” বলে অভিহিত করেন। তার ভিডিওতে আসে তীব্র নিন্দার ঝড়, কেউ কেউ তার কনটেন্ট বয়কটের আহ্বানও জানান।
তবে পুরো ঘটনা নাটকীয়ভাবে মোড় নেয় এক আবেগঘন ভিডিও প্রকাশের পর। ভিডিওতে দেখা যায়, কান্নায় ভেঙে পড়েছেন রিপন মিয়া, কাঁদতে কাঁদতে মাকে জড়িয়ে ধরছেন তিনি। গলায় কষ্টের স্বর, বলছেন—
তোমারে দেহি না আমি? আব্বারে দেহি না আমি? মা তুমি ইড্ডা কী করলা? আমার জীবনডা শেষ করলা!
এই হৃদয়বিদারক মুহূর্তে মাকেও কান্নায় ভেঙে পড়তে দেখা যায়। মা-ছেলের সেই আলিঙ্গন মুহূর্তেই ছড়িয়ে পড়ে সামাজিক মাধ্যমে। লক্ষাধিক মানুষ শেয়ার ও কমেন্ট করে জানান, “ভুল হতে পারে, কিন্তু অনুতাপই প্রমাণ করে ভালোবাসা এখনো আছে।”
এই ভিডিও প্রকাশের পর জনমতের দিক সম্পূর্ণ বদলে যায়। যারা কিছুক্ষণ আগেও রিপনকে কঠোর সমালোচনায় বিদ্ধ করছিলেন, তারাই এবার বলছেন— মা-ছেলের সম্পর্ক পবিত্র; ভুল হতেই পারে, কিন্তু হৃদয়ের সম্পর্ক কখনো মুছে যায় না।
উল্লেখ্য, নেত্রকোনার এক সাধারণ পরিবারের সন্তান রিপন মিয়া প্রথম আলোচনায় আসেন ২০১৬ সালে, একটি ভাইরাল ভিডিওর মাধ্যমে। সেই ভিডিওর সংলাপ ছিল—
“বন্ধু তুমি একা হলে আমায় দিয়ো ডাক, তোমার সাথে গল্প করব আমি সারা রাত।”
সহজ-সরল ভাষা ও আবেগের কারণে সেটি ছড়িয়ে পড়ে দেশজুড়ে। এরপর থেকে রিপন মিয়া হয়ে ওঠেন অনলাইন দুনিয়ার পরিচিত মুখ।
তবে জনপ্রিয়তার সঙ্গে সঙ্গে তাকে ঘিরে বিতর্কও বাড়তে থাকে। কখনো মন্তব্য, কখনো ব্যক্তিজীবনের নানা ঘটনার কারণে তিনি বারবার হয়েছেন আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু। আর এবার সেই আলোচনাই এক ভিডিওতে ফিরে পেয়েছে নতুন দিক— যেখানে কান্নার মধ্যেও দেখা মিলেছে এক সন্তানের ভালোবাসা ও অনুতাপের প্রতিচ্ছবি।