close

কমেন্ট করুন পয়েন্ট জিতুন!

মা র্কি ন হা ম লার পর ই স রা য়ে লে র ১০ এলাকায় আ ঘা ত হেনেছে ই রা নি ক্ষে প ণা স্ত্র..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
মার্কিন হামলার পর তেল আবিবসহ ইসরায়েলের ১০ এলাকায় ইরানের ভয়াবহ ক্ষেপণাস্ত্র হামলা। আহত অন্তত ৮৬ জন, ধ্বংসস্তূপে চলছে উদ্ধার অভিযান।..

মার্কিন বাহিনীর ইরানের তিনটি পারমাণবিক স্থাপনায় বড় ধরনের বিমান হামলার পর মধ্যপ্রাচ্যে ছড়িয়ে পড়েছে উত্তেজনার নতুন সুর। এরই প্রতিক্রিয়ায়, ইরান রোববার ভোরে ইসরায়েলের অন্তত ১০টি শহরে ভয়াবহ ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে। এ হামলায় ইসরায়েলের রাজধানী তেল আবিব, বন্দরনগরী হাইফা এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ শহরগুলো কেঁপে ওঠে।

ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) এক বিবৃতিতে জানায়, রোববার সকালে ইরান থেকে প্রায় ২০টি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হয়। এগুলো মূলত ইসরায়েলের মধ্যাঞ্চল ও উত্তরাঞ্চলকে লক্ষ্য করে ছোড়া হয়। এসব ক্ষেপণাস্ত্রের কয়েকটি তেল আবিব, হাইফা এবং আশপাশের শহরে সরাসরি আঘাত হানে। এর ফলে বহু ভবন বিধ্বস্ত হয় এবং গুরুতর আহত হয়েছেন অন্তত ৮৬ জন।

ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম ‘জেরুজালেম পোস্ট’ জানায়, হামলার সময় তেল আবিবজুড়ে প্রচণ্ড বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়। ক্ষেপণাস্ত্রগুলোর আঘাতে কিছু স্থানে বড় বড় দোতলা ভবন পুরোপুরি ধসে পড়ে। জরুরি পরিষেবা সংস্থা ‘মেগান ডেভিড আদম’ (MDA) জানায়, হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত অন্তত ১০টি এলাকায় উদ্ধারকর্মীরা দ্রুত মোতায়েন করা হয়েছে।

একজন উদ্ধারকর্মী মোতি নিশান জানান, “এটি একটি ভয়াবহ ধ্বংসের চিত্র। বেশ কিছু আবাসিক ভবন আংশিক ও সম্পূর্ণ ধসে পড়েছে। বহু মানুষ ধ্বংসস্তূপে আটকে আছে। আমরা দমকল বাহিনী ও হোম ফ্রন্ট ইউনিটের সঙ্গে উদ্ধার কাজ চালিয়ে যাচ্ছি।”

হামলার আগে হাইফাসহ কয়েকটি শহরে কোনো সতর্কতামূলক সাইরেন বাজেনি বলে জানিয়েছে ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম ‘টাইমস অব ইসরায়েল’। এ কারণে অনেক বাসিন্দা সম্পূর্ণ অপ্রস্তুত অবস্থায় হামলার মুখে পড়ে। ক্ষেপণাস্ত্র আঘাতে বহু গাড়ি, দোকানপাট ও রাস্তার অবকাঠামো চূর্ণবিচূর্ণ হয়ে গেছে।

ইসরায়েলের দমকল বাহিনী জানিয়েছে, উপকূলীয় এলাকা, তেল আবিব মেট্রোপলিটন অঞ্চলসহ অন্তত ১০টিরও বেশি স্থানে সরাসরি ক্ষেপণাস্ত্র হানা হয়। ঘটনাস্থলে পৌঁছে উদ্ধারকর্মীরা আহতদের বের করে দ্রুত হাসপাতালে পাঠাতে থাকে।

ইসরায়েলের আইডিএফ জানায়, প্রাথমিক পর্যায়ে মধ্যাঞ্চলে হামলা হয়। এরপর উত্তরাঞ্চলে দ্বিতীয় দফা ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হয়। সাইরেনের শব্দে আতঙ্কিত মানুষজন দ্রুত বাংকারে আশ্রয় নেয়। তবে ততক্ষণে অনেক জায়গাতেই ক্ষয়ক্ষতি হয়ে গেছে।

আহতদের মধ্যে কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানা গেছে। শফেলা এলাকাতেও একজন আহত হয়েছেন বলে নিশ্চিত করেছে এমডিএ। বর্তমানে সেখানে হেলিকপ্টার ও অ্যাম্বুলেন্স মোতায়েন করা হয়েছে।

ইরানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা বলেছেন, “আমাদের প্রতিক্রিয়া শুরু হয়েছে মাত্র। যদি আমাদের স্থাপনাগুলোর ওপর এমন হামলা চলতেই থাকে, তবে আমরা আরও কঠোর জবাব দিতে বাধ্য হবো।”

বিশ্লেষকরা বলছেন, এই হামলা মধ্যপ্রাচ্যে এক নতুন যুদ্ধপর্বের সূচনা করতে পারে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ইসরায়েল ও ইরান—এই তিন দেশের সামরিক উত্তেজনা এখন সর্বোচ্চ পর্যায়ে রয়েছে। এই সংঘর্ষ বড় পরিসরে ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা করছেন অনেকেই।

মধ্যপ্রাচ্যে চলমান উত্তেজনা এখন শুধু আঞ্চলিক বিষয় নয়, বরং আন্তর্জাতিক নিরাপত্তার জন্য এক বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। ইরান ও ইসরায়েলের এই পাল্টাপাল্টি হামলার ধারাবাহিকতায় সামনে আরও ভয়ঙ্কর পরিণতি ডেকে আনতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা। এখন বিশ্ব তাকিয়ে আছে, এই উত্তপ্ত পরিস্থিতি কতদূর গড়ায়।

Ingen kommentarer fundet