close

ভিডিও দেখুন, পয়েন্ট জিতুন!

ম ধ্য প্রা চ্যে সং ঘাতে যু ক্ত রা ষ্ট্র কে জ ড়ি য়ে বড় জু য়া খেলছেন ট্রা ম্প..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
মার্কিন হামলায় ইরানের পরমাণু স্থাপনায় আগুন, ট্রাম্প বললেন ‘শান্তির পথে পদক্ষেপ’, বিশ্লেষকরা বলছেন—এটা ছিল যুদ্ধের বাজি। কী ঘটছে মধ্যপ্রাচ্যে?..

‘শান্তির দূত’ হয়ে হোয়াইট হাউসে ফিরে এসেছিলেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। কিন্তু বাস্তব চিত্র ভিন্ন—ইরান-ইসরায়েল সংঘাতে যুক্তরাষ্ট্রকে সরাসরি জড়িয়ে তিনি চালিয়ে দিলেন এক অপ্রত্যাশিত ও ঝুঁকিপূর্ণ পদক্ষেপ। ট্রাম্প প্রশাসনের সর্বশেষ অভিযানে ইরানের তিনটি গুরুত্বপূর্ণ পারমাণবিক স্থাপনায় হামলার পর এখন মধ্যপ্রাচ্য যেন পরিণত হয়েছে এক বিস্ফোরক বারুদের স্তূপে, যেখানে যে কোনো মুহূর্তে বিস্ফোরণ ঘটে যেতে পারে।

হোয়াইট হাউস থেকে জাতির উদ্দেশে দেওয়া টেলিভিশন ভাষণে ট্রাম্প বলেন, “এই অভিযান ছিল অসাধারণ সাফল্য”। তার দাবি—এই হামলার মাধ্যমে বিশ্ব শান্তির পথে এক সাহসী পদক্ষেপ নেওয়া হলো, যেখানে ইরান আর পারমাণবিক শক্তিধর হওয়ার কোনো সম্ভাবনাই থাকবে না।

কিন্তু বিপরীতে ইরান জানায়, ফোরদো পারমাণবিক স্থাপনাসহ হামলার শিকার হওয়া তিনটি স্থাপনায় ক্ষতি হয়েছে খুবই সামান্য। বাস্তবতা আসলে কোন দিকে—তা সময়ই বলবে। তবে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ খামেনির প্রতিক্রিয়া স্পষ্ট, “প্রতিশোধ আসবেই”

জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস সরাসরি হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, এই সংঘাতে যুক্তরাষ্ট্রের সরাসরি সম্পৃক্ততা মধ্যপ্রাচ্যকে বিশৃঙ্খলার গভীরতম গহ্বরে নিয়ে যেতে পারে।তার মতে, অঞ্চলটি ইতিমধ্যেই একটি অদৃশ্য আগুনের দ্বারপ্রান্তে।

মাত্র কয়েকদিন আগেই ট্রাম্প বলেছিলেন, “ইরানকে নিঃশর্তভাবে আত্মসমর্পণ করতে হবে, সময় আছে দুই সপ্তাহ।” কিন্তু বাস্তবে মাত্র দুই দিনেই যুক্তরাষ্ট্র ইরানে সরাসরি হামলা চালিয়ে বসে।

তাহলে কি সেই দুই সপ্তাহের সময়সীমা ছিল নিছক নাটক? কেউ কেউ বলছেন, এটা ছিল কৌশলগত ‘প্রলোভন’—ইরানকে শান্ত আলোচনায় রাজি করানোর জন্য। আবার কেউ সন্দেহ করছেন, ট্রাম্পের দূত স্টিভ উইটকফের শান্তি আলোচনা ভেস্তে যাওয়াতেই এমন সিদ্ধান্ত এসেছে।

হামলার পর ইরান কী প্রতিক্রিয়া জানায়, সেটাই এখন সবচেয়ে বড় প্রশ্ন। বিশেষ করে ফোরদো যেটি ইরানের পরমাণু কর্মসূচির ‘রাজকীয় রত্ন’ বলে বিবেচিত, সেই স্থাপনায় হামলা যে ভবিষ্যতে বড় প্রতিশোধের ইঙ্গিত দেয়, তা বলাই যায়। ট্রাম্প দাবি করছেন, “এটাই ছিল একমাত্র ও সফল অভিযান”—কিন্তু বাস্তবতা যদি তা না হয়, তাহলে যুক্তরাষ্ট্রকে আবারও পাল্টা পদক্ষেপ নিতে হতে পারে।

মার্কিন রাজনীতির অভ্যন্তরেও এই পদক্ষেপ রীতিমতো বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। শুধু ডেমোক্র্যাটরাই নন, বরং ট্রাম্পের নিজস্ব রাজনৈতিক প্ল্যাটফর্ম ‘আমেরিকা ফার্স্ট’ আন্দোলনের মধ্য থেকেও সমালোচনার ঝড় উঠেছে।

ভাইস প্রেসিডেন্ট জে ডি ভ্যান্স, পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও ও প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিট হেগসেথকে পাশে বসিয়ে জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেওয়া ছিল এক ধরনের বার্তা—দলের মধ্যে ঐক্য দেখানো। তবে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, “এটা ছিল নিজ দলের মধ্যেই শঙ্কা কমানোর প্রচেষ্টা।”

ট্রাম্প নিজেকে “শান্তির দূত” হিসেবে পরিচয় দিলেন , বাস্তবে এই আক্রমণ তার প্রথম মেয়াদের বড় এক বিপরীত পদক্ষেপ। নির্বাচনের সময় তিনি প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, আর কোনো নতুন যুদ্ধ নয়”—কিন্তু এখন তারই নেতৃত্বে মধ্যপ্রাচ্য এক সম্ভাব্য বিশ্বযুদ্ধের মুখোমুখি।

এখন শুধু সময়ের অপেক্ষা—ইরান কী প্রতিক্রিয়া জানাবে, বিশ্ব কীভাবে এর জবাব দেবে, এবং সবচেয়ে বড় কথা, ট্রাম্প আসলেই শান্তি চান, নাকি নির্বাচন ঘিরে এক ভয়ঙ্কর রাজনৈতিক খেলায় মেতে উঠেছেন? সব প্রশ্নের উত্তর সময়ই দেবে। তবে এ কথা নিশ্চিত করে বলা যায়—ট্রাম্প এবার এক বড় জুয়া খেলেছেন। এর পরিণতি হতে পারে পৃথিবীর ইতিহাসে আরেকটি ভয়াবহ যুদ্ধের সূচনা।

No comments found


News Card Generator