লসএঞ্জেলেসের আগুনের পেছনে ইসরাইলের ভূমিকা: মার্কিনদের প্রতি প্রকৃতির প্রতিশোধ?


লেখক: আব্দুল্লাহ আল মামুন
লসএঞ্জেলেস, ক্যালিফোর্নিয়া – গত এক সপ্তাহ ধরে, যুক্তরাষ্ট্রের পশ্চিম উপকূলে, বিশেষ করে লসএঞ্জেলেসে ভয়াবহ দাবানল চলছে। শহরের রাস্তাঘাট, বিলাসবহুল বাড়ি, এবং লাখো মানুষের জীবন আজ ধ্বংসের পথে। এমন পরিস্থিতিতে, সোশ্যাল মিডিয়ায় এক ব্যাপক আলোচনা শুরু হয়েছে, যেখানে অনেকেই এই আগুনকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্যালেস্টাইনের প্রতি সহিংসতার ফল হিসেবে দেখছেন। এই দাবানলকে ইসরাইলের প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থনের ফলশ্রুতি হিসেবে বর্ণনা করছেন অনেকে।
যুক্তরাষ্ট্রের পাপ এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগ
সম্প্রতি অনেক সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারকারী দাবি করেছেন যে, যুক্তরাষ্ট্রের প্যালেস্টাইনকে সমর্থন করে ইসরাইলকে অস্ত্র সরবরাহ করার কারণেই এই অগ্নিকাণ্ড ঘটছে। তাদের মতে, এই আগুনের পেছনে এক রূপক প্রাকৃতিক প্রতিশোধ রয়েছে, যেখানে 'সৃষ্টিকর্তা' নিজে যুক্তরাষ্ট্রকে শাস্তি দিচ্ছেন তাদের অপরাধের জন্য। এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ক্যালিফোর্নিয়ার মানুষ তাদের এই দুর্যোগকে প্যালেস্টাইনের প্রতি মার্কিন নীতি ও সহিংসতা থেকে উৎসারিত একটি শাস্তি হিসেবে দেখছেন।
লসএঞ্জেলেসের ধ্বংসস্তূপ
লসএঞ্জেলেসের সাধারণ নাগরিকদের জন্য গত এক সপ্তাহ ছিল দুর্বিসহ। আগুনের কারণে লাখো মানুষ তাদের বাড়িঘর হারিয়েছেন। বিলাসবহুল বাড়িগুলি আগুনের লেলিহান শিখায় ছাই হয়ে গেছে। রাজ্যের বিভিন্ন স্থান থেকে হাজার হাজার মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। ক্ষুধা, বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্নতা, এবং একের পর এক শহরে আগুনের বিস্তার জনজীবনকে অস্বাভাবিকভাবে দুর্বিষহ করে তুলেছে। এমন অবস্থায়, বহু ধনী ব্যক্তি, যাদের অনেকেই ইসরাইলের প্রতি সমর্থন জানাতেন, এখন তারা কষ্ট পাচ্ছেন এবং সহায়তা চাইছেন।
প্রকৃতির শাস্তি: এক অভূতপূর্ব বিপর্যয়
এদিকে, অনেকেই মনে করছেন যে এই বিপর্যয় শুধুমাত্র লসএঞ্জেলেস পর্যন্ত সীমাবদ্ধ নয়, বরং এটি একটি বিশ্বব্যাপী বার্তা। মানুষ মন্তব্য করছে যে, এই আগুনের মাধ্যমে 'সৃষ্টিকর্তা' যুক্তরাষ্ট্রকে তার অপ্রতিরোধ্য শক্তির গর্ব থেকে শিক্ষা দিতে চাইছেন। একদিকে যেখানে লাখ লাখ প্যালেস্টাইনি নিহত হচ্ছেন এবং হাজার হাজার মানুষ বাড়ি-ভিটে হারাচ্ছেন, সেখানে অন্যদিকে লসএঞ্জেলেসের মানুষ তাদের বিলাসবহুল জীবনযাত্রার মাঝে একই দুর্ভোগের সম্মুখীন হচ্ছেন।
মার্কিন প্রেসিডেন্টের ভূমিকা: জনসাধারণের ক্ষোভ
প্রেসিডেন্ট বাইডেনের প্যালেস্টাইনের প্রতি ইসরাইলের আক্রমণের প্রতি সহায়তা এবং বিপুল পরিমাণ অস্ত্র সরবরাহের বিষয়টি এই ঘটনাগুলির পেছনে একটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ হিসেবে দেখা হচ্ছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় অনেকেই মন্তব্য করছেন, যুক্তরাষ্ট্রের এই নীতির জন্য শাস্তি হিসেবে তাদেরই দেশের মানুষের ওপর আছড়ে পড়েছে এই বিপর্যয়।
প্যালেস্টাইনের প্রতি সহানুভূতি: এক নতুন চেতনা
এখন, এই পরিস্থিতিতে অনেক লসএঞ্জেলেসের বাসিন্দারা তাদের দুঃখ-দুর্দশা নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় মন্তব্য করছেন, যেখানে তারা প্যালেস্টাইনের প্রতি আরও সহানুভূতির কথাও তুলে ধরছেন। কিছু সামাজিক মিডিয়া ব্যবহারকারী জানান, এখন তারা বুঝতে পারছেন যে, প্যালেস্টাইনে কী ধরনের নৃশংসতা চলছে এবং কত বিপদগ্রস্ত পরিস্থিতিতে রয়েছে সাধারণ মানুষ।
বিগত এক সপ্তাহের এই ঘটনাগুলির মাধ্যমে একটি বার্তা পরিষ্কার হয়ে উঠেছে: শক্তিশালী দেশগুলি যে কোনওভাবে শক্তির অপব্যবহার করলে, প্রকৃতি নিজেই একটি শিক্ষা দিতে পারে। প্যালেস্টাইনের মানুষ যেমন তাদের দেশ ও জীবন বাঁচানোর জন্য সংগ্রাম করছে, ঠিক তেমনই লসএঞ্জেলেসের সাধারণ মানুষও বর্তমানে একই দুর্ভোগের মুখোমুখি। এটি একটি প্রাকৃতিক শিক্ষা, যেখানে ক্ষমতাধর দেশগুলির রাজনৈতিক নীতি তাদেরই নাগরিকদের ওপর বিপর্যয়ের রূপে ফিরে আসছে।
এই ঘটনা আগামীদিনে অনেকেই মনে রাখতে পারবে, যখন কেউ পৃথিবীর সবচেয়ে শক্তিশালী রাষ্ট্রের সমর্থক হয়, তখন তাকে হিসেব করে কাজ করতে হবে।
Không có bình luận nào được tìm thấy