লায়লা-মামুন ‘অশ্লীলতা’ বিতর্কে নতুন মোড়: সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবীর লিগ্যাল নোটিশ, ভিডিও ফাঁস ও ফেসবুক লাইভে গালিগালাজে উত্তাল সোশ্যাল মিডিয়া
নিজস্ব প্রতিবেদক, বিনোদন ডেস্ক:
এক সময়ের আলোচিত ও বিতর্কিত টিকটক জুটি লায়লা ও প্রিন্স মামুন আবারও এসে গেলেন সংবাদের শিরোনামে। প্রেম, বিচ্ছেদ, মামলা—সব পেরিয়ে এবার তারা সরাসরি আইনের মুখোমুখি। সামাজিক মাধ্যমে অশ্লীল ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগে এই দুইজনের বিরুদ্ধে আইনি নোটিশ পাঠানো হয়েছে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবীর পক্ষ থেকে।
দীর্ঘদিন ধরে টিকটক, ফেসবুক ও ইউটিউবে কনটেন্ট তৈরি করে জনপ্রিয়তা ও বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে ছিলেন প্রিন্স মামুন ও লায়লা। বিশেষ করে বয়সের পার্থক্য নিয়ে তাদের ‘অসম প্রেম’ সামাজিক মাধ্যমে ব্যাপক চর্চিত হয়। কিন্তু সেই সম্পর্ক খুব বেশি দিন টিকলো না। নানা ঝগড়া-বিবাদের মধ্য দিয়ে সম্পর্কের ইতি ঘটে। পরে লায়লা মামুনের বিরুদ্ধে ধর্ষণের মামলা করেন, যার জেরে মামুনকে কারাবরণ করতে হয়।
জেল থেকে বের হওয়ার পর সাময়িক সময়ের জন্য সম্পর্ক মেরামতের আভাস মিললেও খুব তাড়াতাড়িই আবারও শুরু হয় চরম দ্বন্দ্ব। এরই মধ্যে হঠাৎ করে সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয় মামুন ও আরেক টিকটকার ঐশী অনামিকার বেশ কিছু অন্তরঙ্গ মুহূর্তের ভিডিও। যা আরও নতুন করে বিতর্কের জন্ম দেয়।
মামুনের দাবি, তার এই ব্যক্তিগত ভিডিও ফাঁস করেছে লায়লাই। সেই অভিযোগ নিয়েই সম্প্রতি তিনি লায়লার বাসায় গিয়ে ফেসবুক লাইভে আসেন। প্রায় ৩০ মিনিটের ওই লাইভে তিনি সরাসরি লায়লাকে গালিগালাজ করেন এবং তার বিরুদ্ধে হওয়া মামলাগুলো নিয়ে কড়া মন্তব্য করেন। দুইজনের মধ্যে লাইভ চলাকালীন সময়েই ঘটে তীব্র বাকবিতণ্ডা।
এমন অশ্লীল কনটেন্ট ও আচরণের পরিপ্রেক্ষিতে দেশের সামাজিক ও ধর্মীয় মূল্যবোধে আঘাতের অভিযোগ তুলে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. সিরাজুল ইসলাম আইনি পদক্ষেপ নেন। তিনি সাধারণ নাগরিকদের পক্ষ থেকে লায়লা ও মামুনের বিরুদ্ধে লিগ্যাল নোটিশ পাঠান।
নোটিশে উল্লেখ করা হয়, এই জুটি টিকটক, ফেসবুক ও ইউটিউবে ধারাবাহিকভাবে অশ্লীল ও অনৈতিক কনটেন্ট ছড়িয়ে দেশের সামাজিক কাঠামো ও ধর্মীয় মূল্যবোধে চরম আঘাত হেনেছেন। এই ধরনের কর্মকাণ্ড দেশের তরুণ সমাজকে বিপথে ঠেলে দিচ্ছে বলেও অভিযোগ করা হয়।
প্রসঙ্গত, ২০২৪ সালে লায়লা প্রিন্স মামুনের বিরুদ্ধে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ধর্ষণের অভিযোগ এনে রাজধানীর ক্যান্টনমেন্ট থানায় মামলা করেন। মামুন কিছুদিন কারাগারে থাকার পর জামিনে মুক্ত হন। জামিনের পর কিছুদিন ভালো সম্পর্ক থাকলেও পুরনো ক্ষত নতুন করে জেগে ওঠে।
বর্তমানে মামুনের বিরুদ্ধে নতুনভাবে ভিডিও ভাইরাল, লায়লার সঙ্গে বাকযুদ্ধ, গালাগালি এবং আইনি নোটিশ সব মিলিয়ে ঘটনাগুলো দিনে দিনে নতুন মাত্রা নিচ্ছে। একদা জনপ্রিয় টিকটক জুটি আজ হয়ে উঠেছে সামাজিক বিতর্কের প্রতীক।
সামাজিক মাধ্যমে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দেখা যাচ্ছে এই ঘটনাকে ঘিরে। কেউ বলছেন, ‘এরা তরুণদের জন্য বিষফোঁড়া’, আবার কেউ মন্তব্য করছেন, ‘ব্যক্তিগত জীবন এভাবে পাবলিক করে অশ্লীলতা ছড়ানো বন্ধ হওয়া উচিত।’
আইনি নোটিশ প্রাপ্তির পর লায়লা বা মামুন কেউ এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো বক্তব্য দেননি। তবে মামুনের সাম্প্রতিক লাইভ ও তার ভক্তদের সঙ্গে কমেন্ট সেকশনে চলা কথোপকথনে বোঝা যাচ্ছে, তিনি নিজেকে নির্দোষ প্রমাণে বদ্ধপরিকর।
এই ঘটনায় ভবিষ্যতে আইন কী সিদ্ধান্ত নেয় এবং সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মগুলো কী পদক্ষেপ গ্রহণ করে, সেটিই এখন দেখার বিষয়।
এই প্রতিবেদন তৈরির সময় পর্যন্ত কোনো পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক বিবৃতি পাওয়া যায়নি। তবে দেশের আইনি ব্যবস্থা যেহেতু সক্রিয় হয়েছে, ভবিষ্যতে আদালতের নির্দেশে আরো কঠিন পদক্ষেপের সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।