বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় এই হৃদয়বিদারক ঘটনার পর পুরো এলাকায় নেমে আসে শোকের ছায়া।
২৫ বছর বয়সী রেশমা খাতুন—সৌদি আরব প্রবাসী রহিদুল ইসলামের স্ত্রী। আর লামিয়া খাতুন, মাত্র আড়াই বছরের শিশু—ছিল তাঁদের একমাত্র সন্তান। বাড়ির ঘরের ভেতর দুজনের ঝুলন্ত মরদেহের দৃশ্য দেখে স্বজনরা ভেঙে পড়েন কান্নায়।
পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, দুই বছর আগে উপার্জনের আশায় সৌদিতে যান রহিদুল। কিন্তু দেশে থাকা স্ত্রী ও সন্তানের প্রতি দায়িত্ব পালন ও নিয়মিত যোগাযোগ—কোনোটাই ঠিকমতো করতেন না তিনি। লামিয়া জন্ম থেকেই শারীরিকভাবে অসুস্থ ছিল। অর্থাভাবে সন্তানের চিকিৎসা করতে না পেরে মানসিকভাবে ভেঙে পড়ছিলেন রেশমা। সংসারের খরচ না পাঠানো ও যোগাযোগ বিচ্ছিন্নতা নিয়ে চলছিল দাম্পত্য কলহ।
অর্থহীনতা, অশান্তি আর একা লড়াই—শেষ পর্যন্ত দমে গেলেন রেশমা।
খবর পেয়ে রাতে ঘটনাস্থলে পৌঁছায় পুলিশ। কুষ্টিয়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ভেড়ামারা সার্কেল) দেলোয়ার হোসেন বলেন, “স্বজনরা দরজা ভেঙে ঘরে ঢুকে প্রথমে ঝুলন্ত অবস্থায় লাশ দেখতে পান। শিশুটির গলায় ছিল ওড়না, আর মায়ের গলায় গামছা। সুরতহাল, স্বজনদের বক্তব্য ও প্রাথমিক তথ্য বিশ্লেষণে ধারণা—শিশুকে হত্যা করে মা আত্মহত্যা করেছেন। তিনি আরও জানান, রেশমার এটি ছিল তৃতীয় বিয়ে। তিনি নিজেও অসুস্থ ছিলেন। হতাশা ও দীর্ঘদিনের মানসিক চাপ—মর্মান্তিক এই সিদ্ধান্ত নেওয়ার পেছনে বড় কারণ বলে মনে করছে পুলিশ।
দৌলতপুর থানার ওসি সোলাইমান শেখ বলেন, আর্থিক সংকট, সন্তানের অসুস্থতা ও পারিবারিক অশান্তি—সব মিলিয়ে রেশমা মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছিলেন বলে মনে হচ্ছে। ঘটনায় হত্যা মামলা প্রক্রিয়াধীন। পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে রাতেই থানায় নেয়। শুক্রবার সকালে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয় কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের মর্গে।
গ্রামজুড়ে এখন একই প্রশ্ন, যদি কেউ পাশে দাঁড়াত, যদি একটু ভালোবাসা ও সহানুভূতি পেত রেশমা—হয়তো এই ট্র্যাজেডি রোধ করা যেত।
close
কমেন্ট করুন পয়েন্ট জিতুন!
Tidak ada komentar yang ditemukan



















