close

কমেন্ট করুন পয়েন্ট জিতুন!

কুষ্টিয়ায় মাদ্রাসা শিক্ষকের বর্বরতা: ১০ বছর বয়সী ছাত্রকে বেধড়ক মারধর..

Badsha Alamgir avatar   
Badsha Alamgir
কুষ্টিয়া সদর উপজেলার মোল্লাতেঘোড়িয়া মোড়ে অবস্থিত *ফুরকানিয়া হাফেজিয়া মাদ্রাসা, এতিমখানা ও লিল্লাহ বোর্ডিং*-এ এক হৃদয়বিদারক ঘটনা ঘটেছে। মাত্র ১০ বছর বয়সী এক হেফজ বিভাগের ছাত্রকে শারীরিক ও মানসিকভাবে লা..

প্রত্যক্ষদর্শী ও মাদ্রাসা সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার (২২ জুলাই) ফজরের নামাজের আগ মুহূর্তে মো. রাকিবুল ইসলাম নামের ওই ছাত্র পড়া দিতে দেরি করায় ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন শিক্ষক আব্দুল আল মামুন। তিনি কোনো রকম সতর্কতা ছাড়াই শিশুটিকে লাঠি ও হাত দিয়ে বেধড়ক মারধর করেন। এ সময় শিশুটির আর্তনাদে আশপাশের কিছু শিক্ষার্থী জেগে ওঠলেও কেউ তাকে রক্ষা করতে সাহস পাননি।

নির্যাতনের ফলে রাকিবুলের শরীরের বিভিন্ন অংশে গুরুতর আঘাতের চিহ্ন দেখা গেছে। তার হাত ও উরুতে লালচে দাগ ও ফুলে যাওয়ার মতো পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। বর্তমানে সে শারীরিকভাবে অসুস্থ এবং প্রচণ্ড আতঙ্কে রয়েছে।

বিষয়টি জানাজানি হলে ছাত্রটির অভিভাবকসহ স্থানীয়দের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। অনেকেই ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়ায় বলেন, “ধর্মীয় শিক্ষা দেওয়ার নামে শিশুদের উপর এমন নির্যাতন কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না।” অভিভাবকরা অভিযুক্ত শিক্ষকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি এবং মাদ্রাসার সার্বিক ব্যবস্থাপনায় নজরদারি বৃদ্ধির দাবি জানান।

অভিযুক্ত শিক্ষক আব্দুল আল মামুন নিজের দোষ স্বীকার করে বলেছেন, তিনি একটু রাগী বেশি এবং শাসনও বেশি করেন। তিনি রাকিবকে মেরেছেন, তবে রাকিব ঠেকাতে গেলে তার হাতে লেগেছে। তিনি পরে দেখেননি যে রাকিবের হাতে এতটা লেগেছে। আগের অভিযোগ সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি কোনো উত্তর দিতে পারেননি, তবে এলাকাবাসীর কাছে ক্ষমা চেয়েছেন এবং বলেছেন এরকম আর কোনোদিন হবে না।

মাদ্রাসার সেক্রেটারি বুলবুল স্যার জানিয়েছেন, তাদের সুস্পষ্ট নির্দেশনা আছে যে কোনো শিক্ষার্থীর গায়ে হাত তোলা যাবে না, বরং ভালোবাসা ও ভয় দেখিয়ে পড়া আদায় করতে হবে। তিনি আরও বলেন, ছাত্রদের গায়ে হাত তোলার জন্য তিনি এ পর্যন্ত পাঁচজন শিক্ষককে বরখাস্ত করেছেন। তিনি অভিযুক্ত শিক্ষক আব্দুল আল মামুনের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেবেন

উল্লেখ্য  অভিযুক্ত শিক্ষক আব্দুল আল মামুন এর আগে ফরিদপুরের একটি মাদ্রাসায় শিক্ষকতা করতেন। সেখান থেকে জানা গেছে, তিনি উগ্র মেজাজের মানুষ।

স্থানীয় সচেতন মহল ও শিশু অধিকার সংগঠনগুলো দ্রুত তদন্ত করে অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন। তারা বলেন, “এমন অপরাধীরা যদি পার পেয়ে যায়, তবে ধর্মীয় শিক্ষার পরিবেশ আরও ভয়ঙ্কর হয়ে উঠবে।”

ধর্মীয় শিক্ষার নামে শিশুদের ওপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের ঘটনা দেশে অহরহ ঘটছে। কুষ্টিয়ার এই ঘটনা তার আরও একটি নির্মম উদাহরণ। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও প্রশাসনের উচিত এমন ঘটনার দ্রুত তদন্ত করে অভিযুক্তদের বিচারের মুখোমুখি করা।

कोई टिप्पणी नहीं मिली