কুষ্টিয়ার ঐতিহ্যবাহী লালন মেলায় মাদক ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটের সন্ত্রাসীদের হামলায় গুরুতর আহত হয়েছেন অনলাইন নিউজ পোর্টাল ঢাকা পোস্ট ও বাংলা এডিশন-এর কুষ্টিয়া প্রতিনিধি রাজু আহমেদ। মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর) দুপুর ১টার দিকে কুমারখালীর ছেঁউড়িয়া লালন মেলার মাঠে এ ন্যক্কারজনক ঘটনা ঘটে।
পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে রাজুর ওপর একদল মাদক ব্যবসায়ী পরিকল্পিতভাবে বেপরোয়া হামলা চালায়। প্রকাশ্যে মারধর করে তাকে রক্তাক্ত করে ফেলে রাখে মেলার মাঠেই। পরে সহকর্মী সাংবাদিক ও স্থানীয়রা উদ্ধার করে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করেন।
আহত সাংবাদিক রাজু আহমেদ জানান, “লালন মেলায় অন্তত ৩০০টি গাঁজার দোকান বসেছে। দিবালোকে চলছে মাদক বিক্রি ও সেবন। আমি সংবাদ সংগ্রহ করতে গেলে মাদক সিন্ডিকেটের লোকজন পরিকল্পিতভাবে আমার ওপর হামলা করে। আমি এর আগেও জেলা প্রশাসকের উপস্থিতিতে বিষয়টি জানিয়েছিলাম। আজ সেই অভিযোগের প্রতিশোধই নিয়েছে তারা।
রাজু আরও জানান, এক সপ্তাহ ধরে শত শত মাদক ব্যবসায়ী প্রকাশ্যে দোকান বসিয়ে বেচাকেনা করছে। প্রশাসনের চোখের সামনে মেলা মাদক ব্যবসায়ীদের স্বর্গরাজ্যে পরিণত হয়েছে। সাংবাদিক হিসেবে দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে আজ আমাকে রক্তাক্ত হতে হলো।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রাজু ঘটনাস্থলে ভিডিও ফুটেজ ধারণ করছিলেন। হঠাৎ মঞ্চের পাশে থাকা মাদক কারবারিদের একটি দল তার ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। বেধড়ক পিটিয়ে আহত করে। লালনের মাঠ এখন মাদক সিন্ডিকেটের দখলে,বলেন এক প্রত্যক্ষদর্শী। “তারা যাকে খুশি হুমকি দেয়, ভয় দেখায়। প্রশাসন যেন নীরব দর্শক।
সহকর্মী সাংবাদিকরা বলেন, আমরা রাজুর ওপর হামলার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। এটি শুধু একজন সাংবাদিকের ওপর হামলা নয়, গণমাধ্যমের স্বাধীনতার ওপর বর্বর আঘাত। তারা দোষীদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও শাস্তির দাবি জানান।
কুষ্টিয়া প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক আবু মনি জুবায়েদ রিপন বলেন, “রাজুর ওপর হামলার ঘটনায় আমরা গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছি। এটি স্পষ্টতই পূর্বপরিকল্পিত। দোষীদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে।
কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা ডা. হোসেন ইমাম বলেন, “রাজু আহমেদ হামলার ঘটনায় মাথা ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত পেয়েছেন। তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে, চিকিৎসা চলছে।
পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান বলেন, “বিষয়টি আমরা গুরুত্বসহকারে দেখছি। তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
অন্যদিকে জেলা প্রশাসক ও লালন একাডেমির সভাপতি আবু হাসনাত মোহাম্মদ আরেফীন বলেন, “সাংবাদিকের ওপর হামলার ঘটনা অত্যন্ত দুঃখজনক। তদন্ত করে জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
সচেতন নাগরিক সমাজ বলছেন, “প্রশাসনের সামনেই যদি গাঁজার দোকান বসে, তাহলে জনগণ বিচার চাইবে কার কাছে? লালন মেলা মাদকমুক্ত করা হোক, সাংবাদিক নির্যাতনের বিচার হোক।
close
লাইক দিন পয়েন্ট জিতুন!
Geen reacties gevonden