আন্দোলনে নিহত শহীদদের স্মরণে কুমিল্লার আলেখারচরে নির্মাণ হচ্ছে 'জুলাই শহীদ স্মৃতিস্তম্ভ'। জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে স্থাপন হলো ভিত্তিপ্রস্তর।
কুমিল্লা এবার ইতিহাসকে স্মরণীয় করে রাখতে এগিয়ে গেল আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপে। ১৩ জুলাই, সোমবার সকাল ১০টার দিকে কুমিল্লা জেলার আলেখারচর বিশ্বরোড এলাকায় ‘জুলাই শহীদ স্মৃতিস্তম্ভ’-এর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করে জেলা প্রশাসন। উদ্বোধন করেন কুমিল্লার জেলা প্রশাসক মো. আমিরুল কায়ছার।
এই স্থানটি কেবল আরেকটি ভাস্কর্য স্থাপনের জায়গা নয়—এটি সেই মাটির অংশ, যেখানে ২০২৩ সালের ৪ আগস্ট, ছাত্র ও জনতার ওপর চালানো হয়েছিল নির্মম হামলা। সেই হামলায় যারা শহীদ হয়েছিলেন, তাদের স্মরণেই এই স্মৃতিস্তম্ভের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।
জেলা প্রশাসক বলেন,গত বছরের ৪ আগস্ট এই স্থানেই ছাত্র-জনতার ওপর নির্মমভাবে হামলা চালানো হয়েছিল। যারা প্রাণ দিয়েছেন, তাদের প্রতি চিরস্থায়ী শ্রদ্ধা জানাতেই এই স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
তিনি আরও জানান,স্মৃতিস্তম্ভের ফলকে শহীদদের নাম তালিকাভুক্ত থাকবে। শুধু তাই নয়, শহীদরা যেসব এলাকায় প্রাণ হারিয়েছেন, সেসব জায়গায় ‘রোড মেমোরি স্ট্যান্ড’ স্থাপন করা হবে, যা ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে স্মরণ করাবে সেই আত্মত্যাগের ইতিহাস।
প্রতি বছরের ৫ আগস্ট ‘জুলাই স্মৃতিস্তম্ভ’ চত্বরে পুষ্পস্তবক অর্পণ ও শ্রদ্ধা নিবেদনের অনুষ্ঠান আয়োজন করা হবে। এটি কেবল একটি আনুষ্ঠানিকতা নয়, বরং শহীদদের আত্মত্যাগকে চিরস্মরণীয় করে রাখার এক ঐতিহাসিক পদক্ষেপ।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা
উদ্বোধনী আয়োজনে উপস্থিত ছিলেন জেলার গুরুত্বপূর্ণ প্রশাসনিক ও রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বরা।
উপস্থিত ছিলেন—
-
কুমিল্লা জেলা পুলিশ সুপার মো. নাজির আহমদ খান
-
মহানগর বিএনপির সভাপতি উদবাতুল বারী আবু
-
দক্ষিণ জেলা বিএনপির সদস্যসচিব আশিকুর রহমান মাহমুদ ওয়াসিম
-
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক পঙ্কজ বড়ুয়া
-
গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী রাশেদুল ইসলাম
-
সিভিল সার্জন ডা. মো. আলী নূর মোহাম্মদ বশির
-
এনসিপি নেতা মাছুমুল বারী কাউসার
-
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফাতেমাতুজ জোহরা
এই স্মৃতিস্তম্ভ শুধু একটি প্রতীক নয়, এটি এ প্রজন্মের কাছে অতীতের অন্যায়ের প্রতিরোধ ও আত্মত্যাগের বার্তা পৌঁছে দেবে। এটি কুমিল্লাবাসী তথা দেশের মানুষের জন্য গর্বের বিষয়।
এই উদ্যোগ প্রমাণ করে—কুমিল্লা ভুলে যায় না। যারা জীবন দিয়েছেন, তারা ইতিহাসে অমর হয়ে থাকবেন। এই স্মৃতিস্তম্ভ হবে তাঁদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর স্থায়ী প্রতীক।