ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির ও চরমোনাই পীর মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম সরকারের উদ্দেশে কঠোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, “কুমিরকে সর্দির ভয় দেখাবেন না। ১৯৮৭ সালে দল প্রতিষ্ঠার পর থেকেই আমরা নানা ভয়ভীতি, হুমকি ও হামলার মুখে থেকেও সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছি। অনেক রক্ত ঝরিয়েছি, অনেক ত্যাগ স্বীকার করেছি। আজ আমরা এমন জায়গায় পৌঁছে গেছি, যেখানে কোনো হুমকিতেই ভয় পাই না। কুমির পানিতেই থাকে, তাকে আবার পানিতে নামাবেন কী?
শনিবার (৪ অক্টোবর) বিকেল ৩টায় ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুরের মওলাগঞ্জ বাজার মাঠে এক বিশাল গণসমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন। সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন উপজেলা ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সভাপতি সামসুল হক সুমন। অনুষ্ঠানে বাঞ্ছারামপুর আসনের জন্য হাফেজ কাজী মোহাম্মদ আলীর হাতে হাতপাখা প্রতীক তুলে দিয়ে আগামী জাতীয় নির্বাচনের প্রার্থী ঘোষণা করেন চরমোনাই পীর।
সরকার ও প্রশাসনের উদ্দেশে তিনি আরও বলেন, “ড. ইউনূস ওয়াদা করেছিলেন যে বিচার ও সংস্কার শেষে নির্বাচন দেবেন। কিন্তু এখন কেন প্রথম দুটি ধাপ বাদ দিয়ে সরাসরি নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করা হলো? জনগণের সঙ্গে প্রতারণা করে কোনো নির্বাচনী নাটক মেনে নেওয়া হবে না।
দেশের অতীত শাসন ব্যবস্থার কঠোর সমালোচনা করে তিনি বলেন, “স্বাধীনতার পর যারা দেশ শাসন করেছে তারা একের পর এক দেশকে দুর্নীতি ও চুরির শীর্ষে নিয়ে গেছে। দেশের অর্থ বিদেশে পাচার করে কানাডাসহ বিভিন্ন দেশে বেগমপাড়া তৈরি করেছে। দেশকে গুম ও খুনের রাজ্যে পরিণত করেছে। সারা বিশ্বে বাংলাদেশকে লজ্জাজনক অবস্থানে ঠেলে দিয়েছে। এই ভয়াবহ পরিস্থিতির মূল কারণ হলো আল্লাহর আইন পরিহার করে মানুষের বানানো কুফরি আইন বাস্তবায়ন করা।
তিনি আরও বলেন, “দেশের মানুষ এখন পরিবর্তনের জন্য প্রস্তুত। তারা আর জুলুম-ফ্যাসিবাদের শাসন সহ্য করতে পারছে না। জনগণ এখন ইসলামি শাসনের দাবি তুলছে। ইসলামি আন্দোলন সেই দাবিকেই শক্তিশালী করছে। আমরা জনগণের পাশে আছি, এবং জনগণের অধিকার আদায়ে যেকোনো ত্যাগ স্বীকার করতে প্রস্তুত।
চরমোনাই পীর সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, “দেশকে সত্যিকার অর্থে উন্নতির পথে নিতে হলে আল্লাহর আইন প্রতিষ্ঠা ছাড়া বিকল্প নেই। জনগণকে ভয় দেখিয়ে বা হুমকি দিয়ে ইসলামি শক্তিকে থামানো যাবে না। কুমিরকে ভয় দেখিয়ে যেমন কিছু হয় না, তেমনি ইসলামি আন্দোলনকেও ভয় দেখিয়ে দমন করা যাবে না।
তিনি বিশ্বাস করেন, দেশের মানুষ সত্য ও ন্যায়ের পক্ষে ঐক্যবদ্ধ হচ্ছে এবং ইসলামি আন্দোলনের পতাকাতলে সমবেত হয়ে একটি ন্যায়ভিত্তিক সমাজ গঠনের আন্দোলনকে সফল করবে।