পবিত্র কোরআন শরিফ অবমাননার অভিযোগে নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটি প্রশাসন তাদের শিক্ষার্থী অপূর্ব পালকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করেছে। গত ৫ অক্টোবর, রোববার বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃঙ্খলা কমিটির এক জরুরি বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। একই সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ঘোষণা করেছে যে, অভিযুক্ত শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক মামলা দায়ের করা হবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তর থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, শনিবার বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে পবিত্র কোরআন শরিফ অবমাননার সময় অপূর্ব পালকে প্রত্যক্ষদর্শীরা হাতে নাতে ধরে ফেলে। ঘটনার পরপরই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডি ও নিরাপত্তা বিভাগ দ্রুত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, এ ঘটনার সময় সাধারণ শিক্ষার্থীরা অত্যন্ত ধৈর্য ও সংযমের পরিচয় দিয়ে ক্যাম্পাসে সম্প্রীতি, সৌহার্দ্য ও সহাবস্থানের পরিবেশ অটুট রেখেছেন। প্রশাসন তাদের এই ভূমিকার প্রশংসা করেছে।
অভিযুক্ত অপূর্ব পালকে শনিবার রাতেই পুলিশ গ্রেপ্তার করে থানায় নিয়ে যায়। তবে থানায় নেওয়ার সময় জনতার একাংশের রোষানলে পড়ে সে কিছুটা আহত হয়। পরে তাকে দ্রুত ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে রবিবার ভোরে তাকে আদালতে হাজির করা হয় এবং ধর্ম অবমাননার অভিযোগে আনুষ্ঠানিকভাবে গ্রেপ্তার দেখানো হয়।
ভাটারা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মোস্তাফিজুর রহমান জানিয়েছেন, “রাতে অপূর্বকে থানায় আনার সময় কয়েকজন উত্তেজিত ব্যক্তি হামলা চালায়। এতে সে সামান্য আহত হয়। থানায় এনে মামলা রেকর্ডের পর তাকে হাসপাতালে পাঠানো হয়। চিকিৎসা শেষে ভোরেই আদালতে তোলা হয়।”
ঘটনার পর থেকেই অভিযুক্ত অপূর্ব পালকে নিয়ে নানা আলোচনা চলছে। অনেকেই দাবি করছেন, সে মানসিক রোগে ভুগছে। তবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বলছে, এ বিষয়ে তদন্ত চলবে এবং তদন্তের ফলাফলের ভিত্তিতে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটি প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, পবিত্র ধর্মগ্রন্থের প্রতি অবমাননাকর আচরণ বিশ্ববিদ্যালয়ের নীতিমালা ও সমাজের মৌলিক মূল্যবোধের পরিপন্থী। তাই এমন অপরাধের জন্য কোনওভাবেই ছাড় দেওয়া হবে না।
এই ঘটনার পর ক্যাম্পাসজুড়ে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে শিক্ষার্থীদের শান্ত থাকার আহ্বান জানানো হয়েছে এবং যেকোনো গুজবে কান না দেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।