স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী স্পষ্ট করে জানালেন, বাংলাদেশে কোনো চাঁদাবাজের ঠাঁই হবে না। আইন ভঙ্গকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বাংলাদেশে চাঁদাবাজদের কোনো স্থান হবে না—এমন কঠোর হুঁশিয়ারি দিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। শনিবার (১৬ আগস্ট) রাজধানীর মোহাম্মদপুরের কৃষি মার্কেট পরিদর্শন শেষে তিনি সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, “চাঁদাবাজ যত বড় প্রভাবশালী বা রাজনৈতিকভাবে শক্তিশালী হোক না কেন, তাকে আইনের আওতায় আনা হবে। কোনো অবস্থাতেই ছাড় দেওয়া হবে না। বাংলাদেশকে সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি ও অনিয়মমুক্ত রাখতে সরকার সর্বোচ্চ দৃঢ়তার সঙ্গে কাজ করছে।”
সাংবাদিকরা প্রধান উপদেষ্টার ঘোষিত নির্বাচন তারিখ নিয়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের মন্তব্য প্রসঙ্গে জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, “রাজনৈতিক বিষয়ে আমাদের কোনো মন্তব্য করার প্রয়োজন নেই। নির্বাচনের ব্যাপারে প্রধান উপদেষ্টা যা বলেছেন, সেটিই চূড়ান্ত। তিনি যে তারিখ ঘোষণা করেছেন, সেই তারিখেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। কে কী বলছে বা কী ধরনের বক্তব্য দিচ্ছে, সেটা শোনার দরকার নেই। আমাদের জন্য প্রধান উপদেষ্টার সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত।”
তিনি আরও উল্লেখ করেন, দেশের রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা রক্ষায় আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী সর্বোচ্চ সতর্ক রয়েছে। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে কোনো ধরনের অরাজকতা বা চাঁদাবাজি সহ্য করা হবে না। দেশের মানুষ যাতে শান্তিপূর্ণভাবে ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারে, সেই নিশ্চয়তা দিতে সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।
এ সময় বাজার পরিস্থিতি নিয়েও কথা বলেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা। তিনি বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে প্রচুর বৃষ্টিপাতের কারণে শাক-সবজির উৎপাদনে কিছুটা সমস্যা তৈরি হয়েছে। ফলে বাজারে দামের ঊর্ধ্বগতি দেখা দিয়েছে। তিনি দাবি করেন, বাজারে পর্যাপ্ত পরিমাণে আলু মজুত রয়েছে। তবে পাইকারি থেকে খুচরা পর্যায়ে আসার পথে মধ্যস্বত্বভোগীদের কারণে দাম বেড়ে যাচ্ছে। কৃষকরা তাদের প্রাপ্য দাম পাচ্ছে না, অথচ মুনাফা কুড়োচ্ছে ব্যবসায়ী মহলের একাংশ।
এ প্রসঙ্গে তিনি জনগণকে আশ্বস্ত করে বলেন, “বাজার নিয়ন্ত্রণে সরকার সক্রিয়ভাবে কাজ করছে। যেসব অসাধু ব্যবসায়ী কৃত্রিম সংকট তৈরি করছে বা দাম বাড়াচ্ছে, তাদের চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সাধারণ মানুষকে স্বস্তি দিতে সরকার প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিচ্ছে।”
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জোর দিয়ে বলেন, সরকার জনগণের স্বার্থে কঠোর অবস্থানে রয়েছে। চাঁদাবাজি, দুর্নীতি কিংবা অবৈধ কর্মকাণ্ড—কোনো কিছুই বরদাশত করা হবে না। তিনি আবারও পুনর্ব্যক্ত করেন, “চাঁদাবাজদের ঠাঁই বাংলাদেশে হবে না।”
তার এই বার্তাকে সাধারণ মানুষ একটি ইতিবাচক অঙ্গীকার হিসেবে দেখছে। অনেকেই মনে করছেন, যদি কথামতো সত্যিকার অর্থে চাঁদাবাজ ও দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়, তবে দেশের অর্থনীতি ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অনেকটাই উন্নত হবে।