কোচিং সেন্টারে শেখ মুজিবুরের শোক দিবসের আয়োজন, আটক ২ শিক্ষক..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
Police have detained two teachers in Pakundia, Kishoreganj, for organizing a prayer program marking Bangabandhu Sheikh Mujibur Rahman’s death anniversary, sparking wide discussions in the area.

কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়ায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শাহাদাতবার্ষিকীতে দোয়া মাহফিল আয়োজন করায় কোচিং সেন্টারের দুই শিক্ষককে আটক করেছে পুলিশ। ঘটনাটি এলাকায় আলোচনার ঝড় তুলেছে।

কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়ায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৫০তম শাহাদাতবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজন করা হয় দোয়া ও মিলাদ মাহফিল। তবে এই আয়োজনকে কেন্দ্র করে স্থানীয় একটি কোচিং সেন্টার থেকে দুই শিক্ষককে আটক করেছে পুলিশ। ঘটনাটি শুক্রবার (১৫ আগস্ট) দুপুরে হোসেন্দী পূর্বপাড়া এলাকায় ঘটে এবং মুহূর্তেই পুরো এলাকায় আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়।

পুলিশ জানিয়েছে, দুপুরে আওয়ামী লীগের কয়েকজন কর্মী ওই কোচিং সেন্টারে শোক দিবস উপলক্ষে মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করেন। মাহফিল শেষে অতিথিদের জন্য রান্না করা হয় খিচুড়ি, যা গণভোজে বিতরণ করা হচ্ছিল। ঠিক সেই সময় খবর পেয়ে পুলিশ সেখানে অভিযান চালায়। এ সময় উপস্থিতদের মধ্যে বিশৃঙ্খলা দেখা দিলে বেশ কয়েকজন পালিয়ে যায়। তবে ঘটনাস্থল থেকে দুইজন শিক্ষককে আটক করতে সক্ষম হয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

আটক হওয়া দুই শিক্ষক হলেন—জাঙ্গালিয়া ইউনিয়ন স্কুল অ্যান্ড কলেজের প্রভাষক সারোয়ার জাহান নাঈম (৪০), তিনি হোসেন্দী পূর্বপাড়া গ্রামের আবদুল হান্নানের ছেলে। অপরজন হলেন ঝাউগারচর হাজী আফসার উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক রাসেল শিকদার (৩২), তিনি পাকুন্দিয়া পৌরসদরের চরপাকুন্দিয়া গ্রামের মজিদ মিয়ার ছেলে।

স্থানীয়রা জানিয়েছেন, শোক দিবসের আয়োজনটি ছিল ছোট পরিসরে, যেখানে স্থানীয় কিছু আওয়ামী লীগ কর্মী ও এলাকাবাসী উপস্থিত ছিলেন। দোয়া ও মিলাদ মাহফিল শেষে তারা খিচুড়ি রান্না করে বিতরণ শুরু করেন। কিন্তু পুলিশ হঠাৎ অভিযান চালালে পুরো অনুষ্ঠান স্থবির হয়ে যায়।

পাকুন্দিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সাখাওয়াৎ হোসেন বলেন, “শেখ মুজিবুর রহমানের শাহাদাতবার্ষিকী উপলক্ষে অনুমতি ছাড়াই কোচিং সেন্টারে রাজনৈতিক আয়োজন করা হয়েছিল। খবর পেয়ে আমরা সেখানে অভিযান চালাই এবং দুজনকে আটক করি। তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।”

এ ঘটনায় এলাকায় মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। কেউ কেউ পুলিশের পদক্ষেপকে যথাযথ বলে মন্তব্য করেছেন, আবার অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন—শোক দিবসের মতো একটি রাষ্ট্রীয় স্মৃতিচারণ অনুষ্ঠান আয়োজনের কারণে শিক্ষকদের কেন আটক করা হলো? এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও ব্যাপক আলোচনা চলছে।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, রাজনৈতিক উদ্দেশ্য বা অনুমতি ছাড়া কোনো প্রতিষ্ঠান বা কোচিং সেন্টারে জনসমাবেশ করা আইনত দণ্ডনীয়। তবে স্থানীয়দের দাবি, এটি ছিল কেবল দোয়া মাহফিল ও শোক দিবসের স্মরণ, যেখানে রাজনৈতিক বক্তব্যের পরিবর্তে বঙ্গবন্ধুর আত্মার মাগফিরাত কামনা করা হচ্ছিল।

এখন দেখার বিষয়—আটক হওয়া দুই শিক্ষকের বিরুদ্ধে আদালতে কী ধরনের পদক্ষেপ নেয়া হয় এবং এই ঘটনা স্থানীয় পর্যায়ে কী ধরনের রাজনৈতিক বা সামাজিক প্রতিক্রিয়া তৈরি করে। ইতোমধ্যেই অনেকে বলছেন, শোক দিবসের মতো দিনে শিক্ষকদের এভাবে গ্রেপ্তার হওয়া অস্বাভাবিক একটি দৃষ্টান্ত।

ঘটনার জেরে পাকুন্দিয়া উপজেলা ও আশপাশের এলাকায় টানটান উত্তেজনা বিরাজ করছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নজরদারি বাড়িয়েছে যাতে ভবিষ্যতে এ ধরনের আয়োজন কেন্দ্র করে কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে।

Nenhum comentário encontrado