ঢাকা, ২৪ অক্টোবর ২০২৩: উত্তরা মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের সামনে বিমান দুর্ঘটনায় হতাহতদের পরিবারের সদস্যরা মঙ্গলবার একটি মানববন্ধন ও কাফন মিছিল আয়োজন করেন। এই কর্মসূচির মাধ্যমে তারা আট দফা দাবি উত্থাপন করেন, যার মধ্যে অন্যতম ছিল ক্ষতিপূরণ প্রদান এবং কলেজ ক্যাম্পাস স্থানান্তর।
দাবি অনুযায়ী, প্রতিটি নিহত শিশুর জন্য পাঁচ কোটি টাকা এবং আহতদের সুচিকিৎসা নিশ্চিত করে এক কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে। এছাড়া দুর্ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত এবং বিচার নিশ্চিত করার দাবি জানান অভিভাবকরা। মাইলস্টোন স্কুলসহ দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কোচিং বাণিজ্য বন্ধের দাবি জানানো হয়েছে।
মাইলস্টোন দুর্ঘটনায় নিহত তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী ফাতেমা আক্তারের মামা লিয়ন মীর বলেন, 'সরকারি প্রশিক্ষণের যুদ্ধবিমান আমাদের বাচ্চাদের ওপর পড়েছে। পুড়ে কয়লা হয়ে আমাদের বাচ্চাগুলো মারা গেছে।'
এই সময় অভিভাবকরা দাবি করেন, স্কুলের একজন শিক্ষককে অপসারণ করতে হবে এবং এজন্য ৭২ ঘণ্টার সময় বেঁধে দেওয়া হয়েছে।
প্রসঙ্গত, গত ২১ জুলাই উত্তরায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ ক্যাম্পাসে বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর একটি যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হয়। এ দুর্ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৩৪ জন মারা গেছেন। আহত অনেকেই এখনও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। এই দুর্ঘটনা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নিরাপত্তা ব্যবস্থা এবং কোচিং বাণিজ্য নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন তুলেছে।
এই ঘটনা শিক্ষাক্ষেত্রে নিরাপত্তা বিধান এবং কোচিং সেন্টারগুলোর নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নতুন করে আলোচনা উত্থাপন করেছে। সরকারের পক্ষ থেকে এখনও পর্যন্ত এই বিষয়ে কোনো প্রতিক্রিয়া জানানো হয়নি। তবে শিক্ষাবিদ এবং সমাজ বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং কোচিং বাণিজ্য নিয়ন্ত্রণ করা এখন সময়ের দাবি।
এই দুর্ঘটনা শিক্ষার্থীদের মানসিক স্বাস্থ্য এবং তাদের পরিবারের উপর দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব ফেলেছে। তাই একটি যথাযথ এবং সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে দায়ীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত। সরকারের উচিত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা পুনর্বিবেচনা করা এবং এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা।
ভবিষ্যতে এ ধরনের দুর্ঘটনা এড়াতে বিমানবাহিনী এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে সমন্বয় বৃদ্ধি করা এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের আশেপাশে বিমান চলাচলের বিষয়ে সুনির্দিষ্ট নীতিমালা প্রণয়ন করা গুরুত্বপূর্ণ হবে।