মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে সবজি বাগানের জন্য মাটি খুঁড়তে গিয়ে হঠাৎ বেরিয়ে এলো একটি পুরনো গ্রেনেড। স্থানীয়দের ধারণা, এটি ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের সময়কার অস্ত্র।
মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার একটি গ্রামে সবজি চাষের জন্য মাটি খোঁড়ার সময় মাটির নিচে পাওয়া গেছে একটি পুরনো গ্রেনেড। সোমবার (১৪ জুলাই) সকালে পতনউষার ইউনিয়নের শ্রীসূর্য্য নোয়াগাঁও এলাকায় এই ঘটনাটি ঘটেছে।
ঘটনাস্থলটি স্থানীয় বাসিন্দা ওমর মিয়ার বাড়ির পাশে পরিত্যক্ত জমি। পরিবারটির এক নারী সদস্য সেখানে সবজির বীজ রোপণের জন্য মাটি খুঁড়তে গেলে আচমকা বেরিয়ে আসে একটি ছোট আকৃতির লোহার বস্তুর মতো বস্তু, যা পরে গ্রেনেড বলে শনাক্ত হয়। পাশেই থাকা প্রতিবেশী আবু বক্কর বিষয়টি প্রথমে লক্ষ্য করেন এবং মুঠোফোনে ছবি তুলে তা স্থানীয়দের মধ্যে ছড়িয়ে দেন।
খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে আসে কমলগঞ্জ থানা পুলিশ। তারা পুরো এলাকা ঘিরে নিরাপদ ঘোষণা করে এবং গ্রেনেডটি নিষ্ক্রিয় করার জন্য সেনাবাহিনীর বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিটকে জানানো হয়।
কমলগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু জাফর মো. মাহফুজুল কবির বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, “গ্রেনেডটির সন্ধান পাওয়ার খবর পেয়ে আমরা সঙ্গে সঙ্গে ঘটনাস্থলে যাই এবং এলাকা ঘিরে ফেলি। সেনাবাহিনীর বোমা নিষ্ক্রিয়কারী দলকে অবহিত করা হয়েছে। তারা এলে গ্রেনেডটি নিরাপদভাবে নিষ্ক্রিয় করবে।”
স্থানীয় বাসিন্দাদের অনেকেই মনে করছেন, গ্রেনেডটি ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের সময়কার। কারণ, ওই এলাকায় রয়েছে শমশেরনগর বিমানবাহিনীর পুরোনো ঘাঁটি। ধারণা করা হচ্ছে, স্বাধীনতা যুদ্ধ চলাকালে পাকিস্তানি বাহিনী এই গ্রেনেডটি ব্যবহার বা সংরক্ষণের উদ্দেশ্যে এনেছিল এবং তা হয়তো বিস্ফোরিত না হয়ে মাটির নিচে চাপা পড়ে যায়।
এই ঘটনার পর এলাকায় কিছুটা আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। তবে পুলিশ ও স্থানীয় প্রশাসনের তৎপরতায় পরিস্থিতি দ্রুত নিয়ন্ত্রণে আসে এবং সবাইকে নিরাপদে সরিয়ে নেয়া হয়।
স্থানীয়রা জানান, এমন ঘটনা অবাক করলেও এটিকে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসের অংশ হিসেবে দেখছেন তারা। অনেকে ঘটনাস্থল দেখতে ভিড় করছেন, আবার কেউ কেউ বলছেন—এমন পুরনো যুদ্ধাস্ত্র আমাদের স্বাধীনতার ইতিহাসের জীবন্ত প্রমাণ।
বর্তমানে গ্রেনেডটি নিষ্ক্রিয় করার অপেক্ষায় রয়েছে এবং ঘটনাস্থল পুলিশ পাহারায় রয়েছে। স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে নিরাপত্তার স্বার্থে ওই এলাকা ঘিরে রাখা হয়েছে।