বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের দীর্ঘ প্রতীক্ষিত ওয়ানডে সিরিজের যাত্রা শুরু হলো শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে, যেখানে প্রথম ম্যাচে কলম্বোর আর প্রেমাদাসা স্টেডিয়ামে মুখোমুখি হয়েছে দুই দল। আজ বুধবার দুপুর ৩টায় শুরু হওয়া ম্যাচে টস ভাগ্যে সায় দেয়নি বাংলাদেশকে। নতুন অধিনায়ক মেহেদী হাসান মিরাজ টস করার সুযোগ পেয়েও ভাগ্যে শ্রীলঙ্কা জিতে আগে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির পর দীর্ঘ চার মাস পর ওয়ানডে ক্রিকেটে ফিরছে বাংলাদেশ। এই সিরিজের মাধ্যমে শুরু হচ্ছে বাংলাদেশ ক্রিকেটে এক নতুন অধ্যায়। কারণ, দল থেকে বাদ পড়েছে প্রথিতযশা পাঁচ মোড়লের সবাই। মুশফিকুর রহিম, তামিম ইকবাল, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ সর্বশেষ ওয়ানডে থেকে অবসর নিয়েছেন। আর সাকিব আল হাসান ও মাশরাফি মুর্তজাও যদিও আনুষ্ঠানিক বিদায় না জানিয়েছে, তবে দলের দলে ফেরার কোনো সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না।
তাদের অভাবে একদিকে যেমন শেষ হলো একটি যুগ, অন্যদিকে শুরু হলো এক নতুন যুগ। যেখানে দায়িত্ব নিতে হয়েছে তরুণ ও উদ্যমী মেহেদী হাসান মিরাজকে। প্রথমবারের মতো জাতীয় দলের আনুষ্ঠানিক অধিনায়ক হিসেবে নেতৃত্ব দিচ্ছেন মেহেদী। এটি তার ক্যারিয়ারের জন্য একটি বড় সাফল্য এবং একই সঙ্গে দায়িত্বের বহন।
শুধু অধিনায়কের পরিবর্তনই নয়, দলে এসেছে নতুন মুখ। অভিষেক হয়েছে পারভেজ হোসেন ইমন ও তানভীর ইসলামের মতো তরুণ ক্রিকেটারদের। সেই সঙ্গে পুরনো কিছু খেলোয়াড়েরও চোট কাটিয়ে দলে ফিরে আসা নজরকাড়া। যেমন তাসকিন আহমেদ ও মোস্তাফিজুর রহমান। ফলে দলে এসেছে মিশ্র অভিজ্ঞতা ও নবীন শক্তির সমন্বয়।
বাংলাদেশ দলের একাদশে আজ দেখা যাবে:
-
তানজিদ হাসান তামিম
-
পারভেজ হোসেন ইমন
-
নাজমুল হোসেন শান্ত
-
লিটন দাস
-
তাওহীদ হৃদয়
-
মেহেদী হাসান মিরাজ (অধিনায়ক)
-
জাকের আলী অনিক
-
তাসকিন আহমেদ
-
তানভীর ইসলাম
-
মোস্তাফিজুর রহমান
-
তানজিম হাসান সাকিব
অন্যদিকে শ্রীলঙ্কা দল স্কোয়াডে ছিলেন:
-
পাথুম নিশাঙ্কা
-
নিশান মাদুশকা
-
কুশল মেন্ডিস
-
কামিন্দু মেন্ডিস
-
চারিথ আসালাঙ্কা (অধিনায়ক)
-
জানিথ লিয়ানাগে
-
ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা
-
মিলান রত্নায়েকে
-
মাহিশ থিকশানা
-
এসান মালিঙ্গা
-
আসিথা ফার্নান্দো
শ্রীলঙ্কার অধিনায়ক চারিথ আসালাঙ্কার নেতৃত্বে ব্যাট করতে নামা দল শুরুতেই লক্ষ্য থাকবে ভালো স্কোর গঠন করা এবং বাংলাদেশের তরুণদের চাপ দেওয়া। নতুন অধিনায়ক মেহেদীর অধীনে বাংলাদেশের তরুণ দল কীভাবে প্রতিক্রিয়া দেখায়, সেটাই এখন ম্যাচের প্রধান আকর্ষণ।
বাংলাদেশ ক্রিকেটপ্রেমীরা এই সিরিজ থেকে অনেক আশা রাখছেন। কারণ এটি হতে যাচ্ছে ভবিষ্যতের জন্য একটি রোডম্যাপ, যেখানে নতুন তরুণরা নিজেদের স্থান করে নেবে এবং জাতীয় ক্রিকেটের নতুন যুগ শুরু হবে। সিরিজ শেষে এই তরুণদের পারফরম্যান্স মূল্যায়ন করা হবে এবং ভবিষ্যতের পরিকল্পনা নির্ধারণ করা হবে।
এই সিরিজের মাধ্যমে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের নতুন অধিনায়কের নেতৃত্বে তরুণ প্রজন্ম কীভাবে খেলবে, সেই দিকে থাকবে সবার নজর। আশা করা যাচ্ছে তারা নিজেদের মেধা ও দক্ষতা প্রমাণ করে সাফল্যের পথে এগিয়ে যাবে।
এই সিরিজের প্রতিটি ম্যাচই হবে বাংলাদেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষা, যেখানে নতুন নেতৃত্ব ও নতুন খেলোয়াড়দের অভিজ্ঞতা লাভের সুযোগ থাকবে।
বাংলাদেশ ক্রিকেটের ইতিহাসে একটি নতুন অধ্যায় শুরু হয়েছে এবং এই যাত্রার সফলতা নির্ভর করবে তরুণদের আত্মবিশ্বাস ও প্রস্তুতির উপর।
এখনও বাকী রয়েছে আরো দুই ম্যাচ, যেখানে বাংলাদেশের তরুণেরা নিজেদের দক্ষতা প্রদর্শন করে দেশের গর্ব বৃদ্ধি করবে এমন প্রত্যাশাই।