close

লাইক দিন পয়েন্ট জিতুন!

কক্সবাজারে ‘ডেভিল হান্ট’ অভিযানে গ্রেপ্তার ৫৭

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
‘মিথ্যা মামলায় গ্রেপ্তারের’ প্রতিবাদে ঝটিকা মিছিল—তারপরই জেলাজুড়ে র‌্যাডিক্যাল অভিযানে কাঁপছে কক্সবাজার। এক রাতে জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে গ্রেপ্তার ৫৭ প্রভাবশালী আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগ নেতা। পু..

কক্সবাজারে এক রাতে চালানো হয়েছে নজিরবিহীন এক অভিযান—‘অপারেশন ডেভিল হান্ট’।
গত ১৮ জুন বিকেল থেকে ১৯ জুন সকাল পর্যন্ত টানা ১৫ ঘণ্টার এই অভিযানে জেলার বিভিন্ন উপজেলা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে ৫৭ জন আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ ও শ্রমিক লীগ নেতাকে। এই অভিযান কক্সবাজারের রাজনীতিতে যেন এক ভূমিকম্পের সঞ্চার করেছে।

কক্সবাজার জেলা পুলিশের মুখপাত্র ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ট্রাফিক) মো. জসীম উদ্দিন চৌধুরী সংবাদমাধ্যমকে জানান, গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে আছেন—

  • রামু উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সামশুল আলম মণ্ডল

  • রাজারকুল ইউনিয়নের যুগ্ম সম্পাদক শফিকুল ইসলাম

  • চাকমারকুল ও ফতেখারকুলের সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন ও শাহ আলম

  • খুনিয়াপালংয়ের সাবেক মেম্বার আবু তাহের টুনু

  • উখিয়া উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মকবুল হোসাইন মিথুন

  • উখিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এম মনজুর

  • সাবেক মেম্বার সিরাজুল বশর, দানু মিয়া চৌধুরী, আবুল মনজুর, রিদুয়ান ইসলাম

  • চকরিয়া যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক অহিদুজ্জামান অহিদ

  • সাবেক এমপি জাফর আলমের ভাগিনা হাসান আল বশির

  • নেতা নুর মোহাম্মদ মাদু মেম্বার, মোস্তাক মিয়া, যুবলীগ নেতা সাদ্দাম হোসেন

  • কুতুবদিয়ার বড়ঘোপ ও লেমশীখালীর আওয়ামী ও শ্রমিক লীগ নেতা গিয়াস উদ্দিন, নুরুল আমিন

এ ছাড়া কক্সবাজার পৌরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের আওয়ামী লীগ ইউনিটের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ ইমরানসহ আরও তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

গতকাল সকাল ৮টায় সাবেক সংসদ সদস্য ও চকরিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জাফর আলমকে আদালতে হাজির করা হয়।
চকরিয়ার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আনোয়ারুল কবির তাঁর বিরুদ্ধে দায়ের করা ৭টি মামলায় ১৮ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

  • চকরিয়া থানার ৫ মামলায়: ১৪ দিন

  • পেকুয়া থানার ২ মামলায়: ৪ দিন

সাবেক এমপি জাফর আলমকে “মিথ্যা মামলায় হয়রানি” করা হচ্ছে—এই অভিযোগ তুলে প্রতিবাদে ঝটিকা মিছিল বের করে স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতারা।
১৯ জুন সকাল সাড়ে ৯টার দিকে চকরিয়া পৌরসভার মগবাজার এলাকায় ঝটিকা মিছিলে নেতৃত্ব দেন:

  • চকরিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক জামাল উদ্দিন জয়নাল

  • খুটাখালী ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি তৌহিদুল ইসলাম

  • পৌরসভা যুবলীগের কর্মী এনামুল হক

এই মিছিলের পর থেকেই জেলার আইনশৃঙ্খলা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করে, যার জবাব ছিল ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট’।

এই ধরনের অভিযান এটি প্রথম নয়। এর আগেও ৬ মে কক্সবাজার শহরের কলাতলী সৈকত এলাকায় যুবলীগ নেতা মোনাফ সিকদারের নেতৃত্বে ঝটিকা মিছিলের পর পুলিশ একদিনে গ্রেপ্তার করেছিল ৩২ জন

এই ঘটনার পরপরই কক্সবাজারে রাজনৈতিক উত্তেজনা তীব্র আকার ধারণ করেছে। আওয়ামী লীগের একাংশ বলছে—“এটি রাজনৈতিক প্রতিহিংসা।”
অন্যদিকে প্রশাসনের বক্তব্য, “আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি বজায় রাখতে এবং বিচারাধীন মামলায় আসামিদের ধরতেই এই অভিযান।

‘অপারেশন ডেভিল হান্ট’ শুধু একটি পুলিশি অভিযান নয়—এটি কক্সবাজারের রাজনীতিতে ক্ষমতা, প্রতিবাদ, প্রতিশোধ ও নিয়ন্ত্রণের এক জটিল খেলা।
আর এই খেলার পরিণতিতে গ্রেপ্তার হওয়া ৫৭ নেতার ভবিষ্যৎ কি হবে, সেটাই এখন সবার চোখে প্রশ্ন।

कोई टिप्पणी नहीं मिली