close

ভিডিও আপলোড করুন পয়েন্ট জিতুন!

কিলাউয়া আগ্নেয়গিরিতে বিক্ষিপ্ত অগ্ন্যুৎপাত, লাভা উঠে গেল ১০০ তলা উচ্চতায়..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
বিশ্বের অন্যতম সক্রিয় আগ্নেয়গিরি কিলাউয়ায় আবারও অগ্ন্যুৎপাত শুরু হয়েছে। লাভার শিখা ছুঁয়েছে এক হাজার ফুট উচ্চতা—যা প্রায় ১০০ তলার সমান! এই দৃশ্য দেখতে হাওয়াইয়ের আগ্নেয়গিরি উদ্যান ভরে উঠেছে শত শত পর্যটক..

হাওয়াইয়ের আগ্নেয়গিরিতে প্রলয়! ১০০ তলা ভবনের সমান উচ্চতায় লাভার শিখা, আতঙ্ক ছড়িয়েছে স্থানীয়দের মধ্যে

হাওয়াই দ্বীপপুঞ্জে অবস্থিত বিশ্বের অন্যতম সক্রিয় আগ্নেয়গিরি কিলাউয়া-তে ফের শুরু হয়েছে ভয়াবহ অগ্ন্যুৎপাত। আগ্নেয়গিরিটি থেকে উদগিরণ হওয়া লাভার উল্লম্ব শিখা উঠে গেছে প্রায় ১ হাজার ফুটেরও বেশি, যা প্রায় ১০০ তলা ভবনের সমান উচ্চতা। রোববার রাত ৯টা ৪৫ মিনিটে এই অগ্ন্যুৎপাতের চূড়ান্ত ধাপটি ঘটে, বলে জানিয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইউএস জিওলজিক্যাল সার্ভে (USGS)

বিশাল এই অগ্ন্যুৎপাতের দৃশ্য দেখে বিস্মিত পর্যটকরা ভিড় জমিয়েছেন হাওয়াই ভলকানোস ন্যাশনাল পার্কে। রেডিয়েন্ট লাভা, আগুনের গোলা আর ছাইয়ের ছড়িয়ে পড়া এই ঘটনা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বিষয়টি শুধু দেখার জন্য নয়, এতে রয়েছে চরম স্বাস্থ্যঝুঁকি

অগ্ন্যুৎপাতের ছাই ও পাথর ছড়িয়ে পড়েছে পাঁচ হাজার ফুট উচ্চতায়

যুক্তরাষ্ট্রের আগ্নেয়গিরি পর্যবেক্ষণ সংস্থা জানায়, অগ্ন্যুৎপাতের সময় শুধু লাভাই নয়, **কমপক্ষে পাঁচ হাজার ফুট উচ্চতায় একটি বিশাল প্লাম্প (ধোঁয়ার স্তম্ভ)**ও তৈরি হয়। এই প্লাম্পে ছিল ছাই, আগ্নেয়গিরির কঠিন পাথর এবং 'পেলের চুল' নামে পরিচিত সূক্ষ্ম কাচের টুকরো। এসব উপাদান বাতাসে ভেসে দূরবর্তী অঞ্চলেও পৌঁছাতে পারে, যা মানুষের চোখ ও শ্বাসনালীর জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর

'পেলের চুল': ঝুঁকিপূর্ণ আগ্নেয় কাচের সূক্ষ্ম কণা

‘পেলের চুল’ হলো আগ্নেয়গিরির গলিত কাচ থেকে তৈরি হওয়া সূক্ষ্ম ও সূঁচালো কণার মতো উপাদান, যা বাতাসে ভেসে গিয়ে ফুসফুসে ঢুকলে দীর্ঘমেয়াদি স্বাস্থ্য সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। এটি দেখতে যেমন চমকপ্রদ, তেমনি মানবদেহের জন্য ভয়ংকর বিপদজনক। তাই বিজ্ঞানীরা সতর্ক করছেন, দর্শনার্থী ও স্থানীয়দের অবশ্যই মাস্ক ব্যবহার ও নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখতে হবে

কিলাউয়া: বিশ্বের সবচেয়ে সক্রিয় আগ্নেয়গিরিগুলোর একটি

কিলাউয়া হাওয়াই রাজ্যের ছয়টি সক্রিয় আগ্নেয়গিরির একটি এবং এটি দীর্ঘ সময় ধরে সক্রিয় রয়েছে। এটি হোনোলুলু থেকে প্রায় ২০০ মাইল দূরে অবস্থিত। ২০২৪ সালের ডিসেম্বর মাস থেকেই এই আগ্নেয়গিরি ঘন ঘন অগ্ন্যুৎপাত করছে। আগ্নেয়গিরিটির সাম্প্রতিক অগ্ন্যুৎপাত পর্যবেক্ষকদের মতে, এটি সামনের দিনে আরও বড় ধরণের বিপর্যয়ের ইঙ্গিত দিচ্ছে।

পর্যটকদের জন্য বিস্ময়, স্থানীয়দের জন্য আতঙ্ক

যেখানে পর্যটকেরা এই ভয়াবহ অগ্ন্যুৎপাতের দৃশ্য দেখতে এসে উল্লসিত, সেখানে হাওয়াইয়ের স্থানীয় বাসিন্দারা রয়েছেন আতঙ্কে। কেউ কেউ ইতিমধ্যেই ঘর ছাড়ছেন, অনেকে দোকানপাট বন্ধ করে দিয়েছেন। কয়েকটি এলাকায় ছাইয়ের স্তর পড়ে রাস্তাঘাট ঢেকে যাচ্ছে বলেও জানিয়েছেন স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলো।

মাউনা লোয়া: আরও একটি অগ্ন্যুৎপাত-প্রবণ দৈত্য ঘুমিয়ে রয়েছে কাছেই

হাওয়াইয়ের আরেকটি বৃহৎ সক্রিয় আগ্নেয়গিরি মাউনা লোয়া-ও অবস্থিত একই জাতীয় উদ্যানে। শেষবার ২০২২ সালে এই আগ্নেয়গিরি অগ্ন্যুৎপাত করেছিল। যদিও সেটি বর্তমানে নিষ্ক্রিয় রয়েছে, তবে কিলাউয়ার ক্রমাগত অগ্ন্যুৎপাতের কারণে আশঙ্কা করা হচ্ছে, এই নিষ্ক্রিয় দৈত্যও যেকোনো সময় জেগে উঠতে পারে


 

কিলাউয়ার বর্তমান অগ্ন্যুৎপাতের ঘটনাটি শুধু হাওয়াই নয়, বরং বিশ্বব্যাপী আগ্নেয়গিরি বিজ্ঞানীদের জন্যও একটি গুরুত্বপূর্ণ পর্যবেক্ষণীয় ঘটনা। পর্যটকদের মনোমুগ্ধকর এই দৃশ্য দেখার উচ্ছ্বাসের পাশাপাশি বিজ্ঞানীদের সতর্কতা আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয়—প্রকৃতির সৌন্দর্য যেমন বিস্ময়কর, তেমনি এর শক্তি ভয়ংকর

Ingen kommentarer fundet