close

লাইক দিন পয়েন্ট জিতুন!

খাদ্য পরিস্থিতি নিয়ে বড় ঘোষণা দিলেন উপদেষ্টা!

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
দেশে এবার বোরো ধানে রেকর্ড উৎপাদন হয়েছে, যা খাদ্য নিরাপত্তার দিক থেকে এক বিশাল স্বস্তির বার্তা। খাদ্য উপদেষ্টা আলী ইমাম মজুমদার জানালেন, চাহিদা অনুযায়ী মজুত নিশ্চিত হওয়ায় বিদেশ থেকে আর চাল আমদানির প্র..

বাংলাদেশের খাদ্য নিরাপত্তা পরিস্থিতি বর্তমানে অতীতের যেকোনো সময়ের তুলনায় অনেক বেশি স্বস্তিদায়ক ও স্থিতিশীল। দেশের অভ্যন্তরে বোরো ধানের রেকর্ড পরিমাণ উৎপাদন হওয়ায় সরকার আত্মবিশ্বাসী যে, এবার বিদেশ থেকে চাল আমদানির প্রয়োজন পড়বে না।

শুক্রবার (২০ জুন) সকালে পটুয়াখালী সার্কিট হাউসে পটুয়াখালী ও বরগুনা জেলার খাদ্য বিভাগের কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় এ তথ্য জানান খাদ্য ও ভূমি উপদেষ্টা আলী ইমাম মজুমদার।

খাদ্য উপদেষ্টা বলেন,-আমরা একটানা সন্তোষজনক অবস্থানে থাকতে পারি না, কারণ মজুত ও চাহিদার মাঝে একটা চলমান ভারসাম্য থাকে। তবে এবার বোরো আবাদের ফলাফল অত্যন্ত আশাব্যঞ্জক। এখন আমনের ফলনও যদি ভালো হয়, তাহলে বিদেশ থেকে চাল আমদানির প্রয়োজনই হবে না।

এ সময় তিনি জানান, চলতি বোরো মৌসুমে দেশের অভ্যন্তরীণ বাজার থেকে মোট ১৭.৫ লাখ টন ধান ও চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এর মধ্যে সাড়ে ৩ লাখ টন ধান এবং ১৪ লাখ টন চাল কেনা হবে।

সরকার কৃষকদের ন্যায্য মূল্য নিশ্চিত করতে ধানের দাম ৪ টাকা বাড়িয়ে প্রতি কেজি ৩৬ টাকা এবং চালের দাম ৪৯ টাকা নির্ধারণ করেছে। এই সংগ্রহ অভিযান চলবে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত।

আলী ইমাম মজুমদার বলেন,-২০২৫-২৬ অর্থবছরে খাদ্য ভর্তুকির বাজেট ৮ হাজার ৫৯ কোটি টাকা থেকে বাড়িয়ে ৯ হাজার ৫০০ কোটি টাকা প্রস্তাব করা হয়েছে।

তিনি জানান, নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য ওএমএস ও টিসিবি’র মাধ্যমে সাশ্রয়ী মূল্যে খাদ্য সরবরাহ অব্যাহত থাকবে। ২০২৫-২৬ অর্থবছরে এই কর্মসূচির আওতায় উপকারভোগীর সংখ্যা ৫০ লাখ থেকে বাড়িয়ে ৫৫ লাখ করা হচ্ছে।

প্রতি পরিবার মাসে ৩০ কেজি চাল মাত্র ১৫ টাকা কেজি দরে পাবে। বর্তমানে এই কার্যক্রম বছরে ৫ মাস চলে, তবে আগামী অর্থবছর থেকে তা ৬ মাস চালু থাকবে।

পটুয়াখালী জেলার বোরো মৌসুমের লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী

  • ধান সংগ্রহ: ১,৯২৫ মেট্রিক টন (ইতোমধ্যে সম্পূর্ণ সংগ্রহ শেষ)

  • চাল সংগ্রহ: ৫,৬৯৫ মেট্রিক টন, এর মধ্যে ৪,৯৯৭ মেট্রিক টন সংগ্রহ ইতোমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে।

অন্যদিকে বরগুনা জেলার লক্ষ্যমাত্রা:

  • ধান: ৫০০ মেট্রিক টন (সম্পূর্ণ সংগ্রহ সম্পন্ন)

  • চাল: ১,৫১৩ মেট্রিক টন, যার মধ্যে ১,৩৪৯ মেট্রিক টন ইতোমধ্যে সংগ্রহ হয়েছে।

খাদ্য উপদেষ্টার মতে, দেশীয় উৎপাদন, ন্যায্য মূল্য ও সরকারি খাদ্য মজুত— এই তিনটি স্তম্ভ মজবুত থাকায় দেশে খাদ্য নিরাপত্তা নিয়ে আতঙ্কের কিছু নেই। তাছাড়া সরকারি পরিকল্পনায় দরিদ্র জনগোষ্ঠী আরও বেশি সুবিধাভোগী হবে, যা অর্থনৈতিক ভারসাম্য রক্ষাতেও সহায়ক হবে।

বাংলাদেশের কৃষি ও খাদ্যনীতি গত কয়েক বছরে উল্লেখযোগ্য উন্নতি করেছে। চাল আমদানিনির্ভরতা কমে যাওয়ায় বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয় হবে, আর স্থানীয় কৃষকরা পাবেন ন্যায্য দাম ও সহায়তা। সরকারের টার্গেটেড ভর্তুকি এবং বিতরণ ব্যবস্থা দেশের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করার পথে এক যুগান্তকারী পদক্ষেপ হিসেবে চিহ্নিত হতে চলেছে।

Aucun commentaire trouvé