যদিও পাকিস্তান সরকারের তরফে এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে এখনও কোনো বিবৃতি আসেনি, তবুও বিভিন্ন সূত্র থেকে পাওয়া তথ্য বলছে, এই পদক্ষেপের ফলে দক্ষিণ এশিয়ায় কূটনৈতিক টানাপড়েন আরও তীব্র হতে পারে। ভারতের কাশ্মীরের পহেলগামে সাম্প্রতিক হামলার জেরে ভারত যে কৌশলগত ও কূটনৈতিক পাল্টা ব্যবস্থা নিয়েছে, তার একদিন পরেই এই ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার সিদ্ধান্ত সামনে এলো।
কূটনৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকে উদ্বেগজনক ইঙ্গিত
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এবং বার্তা সংস্থা এএনআই জানিয়েছে, ইসলামাবাদের এই পদক্ষেপ ভারতসহ আঞ্চলিক অন্যান্য দেশের জন্য নতুন উদ্বেগ তৈরি করতে পারে। পাকিস্তানভিত্তিক একটি পর্যবেক্ষণমুলক এক্স (টুইটার) অ্যাকাউন্ট "পাক ইন্টেল মনিটর" থেকেও এই ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে।
কাশ্মীর হামলার প্রেক্ষাপটে ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক নতুন মোড় নিচ্ছে
কাশ্মীরের পহেলগামে সন্ত্রাসী হামলার পর, ভারত সরকার পাকিস্তানের প্রতি একাধিক কৌশলগত চাপ সৃষ্টি করে। আর এই ঘটনার প্রেক্ষিতেই ইসলামাবাদ দ্রুত জাতীয় নিরাপত্তা কমিটির (NSC) বৈঠক ডাকতে বাধ্য হয়। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফ। এতে অংশ নেন দেশের শীর্ষ সামরিক ও বেসামরিক নেতৃত্ব। স্থানীয় সূত্র অনুযায়ী, এই বৈঠকে ভারতের ‘তাড়াহুড়া করে নেয়া’ পদক্ষেপগুলোর গভীর পর্যালোচনা করা হয়।
পাকিস্তানের উপ-প্রধানমন্ত্রী এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার জিও নিউজকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে জানান, "জাতীয় নিরাপত্তা কমিটি এই পরিস্থিতির যোগ্য জবাব দেবে।"
তিনি আরও বলেন, "কাশ্মীরের সাম্প্রতিক সন্ত্রাসী ঘটনার সঙ্গে পাকিস্তানের সংশ্লিষ্টতা সম্পর্কে ভারত এখনো কোনো বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ উপস্থাপন করতে পারেনি। নয়াদিল্লির পদক্ষেপগুলো অযৌক্তিক এবং গুরুত্বহীন।"
আঞ্চলিক উত্তেজনার নতুন অধ্যায়?
এই ঘোষণার পর আন্তর্জাতিক মহলেও উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই সময়ে ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা রাজনৈতিক বার্তা পাঠানোর একটি কৌশল হিসেবেই দেখা হচ্ছে। ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সম্প্রতি যে ‘কল্পনাতীত জবাব’ দেয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, তার পাল্টা প্রতিক্রিয়া হিসেবেও এই পদক্ষেপ নিতে পারে পাকিস্তান।
বর্তমান পরিস্থিতিতে ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক আরও তলানিতে পৌঁছাচ্ছে বলেই মনে করছেন বিশ্লেষকরা। উভয় পক্ষের পাল্টাপাল্টি হুঁশিয়ারি ও প্রতিরক্ষা প্রদর্শন দুই দেশের মধ্যকার বিদ্যমান উত্তেজনাকে আরও জটিল করে তুলছে। এমন পরিস্থিতিতে দক্ষিণ এশিয়ায় কূটনৈতিক ভারসাম্য বজায় রাখা এবং আন্তর্জাতিক সংলাপের আহ্বানই হতে পারে সবচেয়ে বাস্তবসম্মত পথ।