close

লাইক দিন পয়েন্ট জিতুন!

কারফিউ শিথিলের কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই গোপালগঞ্জে ফের ১৪৪ ধারা জারি, আতঙ্কে জনসাধারণ..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
Just hours after curfew relaxation, Gopalganj faces reimposed Section 144 due to ongoing tension surrounding the NCP rally. Authorities urge caution amid rising unrest.

তিন দিন ধরে চলা কারফিউ সাময়িকভাবে শিথিল করার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই গোপালগঞ্জে আবারো ১৪৪ ধারা জারি করেছে প্রশাসন। এনসিপির সমাবেশকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত পরিস্থিতি রয়ে গেছে।

গোপালগঞ্জে রাজনৈতিক উত্তেজনার আগুন যেন নিভছেই না। জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)-র পূর্বঘোষিত সমাবেশকে ঘিরে সহিংসতার জেরে টানা তিন দিনের কারফিউ সাময়িক শিথিল করা হলেও, এর পরপরই আবারও ১৪৪ ধারা জারি করেছে জেলা প্রশাসন।

গতকাল শনিবার (১৯ জুলাই) রাত সাড়ে ১১টায় গোপালগঞ্জের জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মুহম্মদ কামরুজ্জামান এক সরকারি আদেশে জানান, জেলার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি বিবেচনায় আজ রোববার (২০ জুলাই) সকাল ৬টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত গোপালগঞ্জ শহরে ১৪৪ ধারা বলবৎ থাকবে।

এই নতুন নির্দেশনার ফলে, জনসমাবেশ, মিছিল, সভা বা চার বা ততোধিক লোকের জমায়েত নিষিদ্ধ করা হয়েছে। জেলা প্রশাসন বলছে, জনগণের জানমাল রক্ষা এবং শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রাখতেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

এর আগে শনিবার রাত ৮টা থেকে রোববার সকাল ৬টা পর্যন্ত কারফিউ জারি ছিল। দিনভর কিছুটা স্বস্তি মিললেও, পরিস্থিতি যে এখনও পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আসেনি, সেটাই প্রমাণ করে ফের ১৪৪ ধারা জারির সিদ্ধান্ত।

উল্লেখ্য, গত বুধবার (১৭ জুলাই) এনসিপি আয়োজিত সমাবেশ ঘিরে গোপালগঞ্জ শহরের বিভিন্ন এলাকায় ব্যাপক সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে। সংঘর্ষে অংশ নেয়া দলীয় কর্মী-সমর্থকদের সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সংঘর্ষ হয়। এতে ককটেল বিস্ফোরণ, অগ্নিসংযোগ, সরকারি স্থাপনায় হামলার মতো ঘটনা ঘটে।

এই ঘটনায় গোপালগঞ্জের জেলা প্রশাসক প্রথম দফায় ১৪৪ ধারা জারি করেন এবং সন্ধ্যা ৬টা থেকে শহরে কারফিউ জারি হয়। এরপর থেকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে প্রশাসনের একাধিক দফা ঘোষণা আসে।

বৃহস্পতিবার (১৮ জুলাই) সকালে ঢাকা বিভাগের বিভাগীয় কমিশনার শরফ উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে কারফিউর মেয়াদ বাড়িয়ে শুক্রবার সন্ধ্যা পর্যন্ত কার্যকর রাখার ঘোষণা দেন।

শুক্রবার (১৯ জুলাই) বেলা ১১টা থেকে ২টা পর্যন্ত তিন ঘণ্টার জন্য কারফিউ শিথিল করা হলেও বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যায় তা আবার বাড়িয়ে শনিবার সকাল ৬টা পর্যন্ত কার্যকর রাখা হয়। এরপরও পরিস্থিতির উত্তেজনা প্রশমিত না হওয়ায় শনিবার সন্ধ্যায় আবার ঘোষণা আসে—রাত ৮টা থেকে রোববার সকাল ৬টা পর্যন্ত নতুন করে কারফিউ জারি থাকবে।

এ পরিস্থিতিতে জনসাধারণের মধ্যে এক ধরনের আতঙ্ক বিরাজ করছে। দোকানপাট, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সবই বন্ধ। জনগণ জরুরি প্রয়োজন ছাড়া বাসা থেকে বের হচ্ছেন না।

জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থার সঙ্গে পরামর্শ করে গোপালগঞ্জের সার্বিক পরিস্থিতি মূল্যায়ন করা হবে এবং পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

এনসিপির পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, তারা শান্তিপূর্ণ সমাবেশ করতে চেয়েছিল, কিন্তু প্রশাসন ও ক্ষমতাসীন দলের উস্কানিতেই এই সহিংসতা ছড়িয়েছে। অন্যদিকে, স্থানীয় প্রশাসনের দাবি, জনশৃঙ্খলা ও নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করেই কঠোর পদক্ষেপ নিতে বাধ্য হয়েছে তারা।

সর্বশেষ পাওয়া খবরে জানা গেছে, পরিস্থিতি যাতে নিয়ন্ত্রণের বাইরে না যায়, সেজন্য শহরের গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে মোড়ে অতিরিক্ত পুলিশ, র‌্যাব ও বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে।

Walang nakitang komento