কারাগারে কোরআন শরীফ এক খতম দিয়েছি: পলক

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
Former state minister Zunaid Ahmed Palak has reportedly completed a full recitation of the Quran in prison. A Dhaka court has granted a plea to show him arrested in the murder case of Rasel Gazi, who ..

আশুলিয়ায় সরকারবিরোধী আন্দোলনের সময় নিহত রাসেল গাজী হত্যা মামলায় পলককে গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন মঞ্জুর করেছে আদালত। কারাগারে থেকে তিনি কোরআন শরীফ খতম দিয়েছেন বলে জানান।

সাবেক তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বর্তমানে কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দি রয়েছেন। সেখানে অবস্থানকালীন সময় তিনি নিয়মিত কোরআন তেলাওয়াত করছেন এবং ইতোমধ্যে পুরো একটি খতম শেষ করেছেন বলে জানিয়েছেন।

২৪ জুলাই বৃহস্পতিবার ঢাকার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট তাজুল ইসলাম সোহাগ শুনানি শেষে আশুলিয়ায় রাসেল গাজী হত্যাকাণ্ডের মামলায় পলককে গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন মঞ্জুর করেন। এই মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আশুলিয়া থানার উপপরিদর্শক মো. আনোয়ার হোসেন আদালতে পলককে হাজির করে গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন জানান। আদালতের শুনানিতে পলকের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন তার আইনজীবী অ্যাডভোকেট ফারজানা ইয়াসমিন রাখী।

আদালতে উপস্থিত থাকা অবস্থায় পলকের শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, “কারাগারে কোরআন পড়ছি নিয়মিত। ইতোমধ্যে এক খতম শেষ করেছি।” এ সময় পলকের কোমরে একটি সাপোর্ট বেল্ট পরা ছিল, যা তার ব্যাকপেইনের জন্য ব্যবহৃত হচ্ছে। আইনজীবীর প্রশ্নে পলক জানান, ‘শারীরিকভাবে কোনোভাবে আছি।’

আইনজীবী ফারজানা ইয়াসমিন রাখী জানান, “তিনি শারীরিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়েছেন। তার কোমরে ব্যথা রয়েছে এবং এজন্য সাপোর্ট বেল্ট ব্যবহার করতে হচ্ছে। তবে তিনি মানসিকভাবে দৃঢ় থাকছেন এবং নিয়মিত ধর্মীয় চর্চা করছেন, যা তাকে মানসিক শান্তি দিচ্ছে।”

মামলার অভিযোগপত্র অনুযায়ী, ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট রাজধানীর উপকণ্ঠ আশুলিয়ার গাজীরচট এলাকায় সরকারবিরোধী একটি বিক্ষোভ চলাকালে গুলিবিদ্ধ হন রাসেল গাজী (২৭)। গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। নিহত রাসেল গাজীর গ্রামের বাড়ি ছিল আশুলিয়ার গাজীরচট মধ্যপাড়ায়। তার পিতার নাম বেলায়েত গাজী এবং মায়ের নাম সেলিনা বেগম।

এই ঘটনায় দায়ের করা মামলায় ১৫ আগস্ট পলককে প্রথমবারের মতো গ্রেপ্তার করা হয়। এরপর থেকে তিনি একাধিক হত্যা, হত্যাচেষ্টা ও দুর্নীতির মামলায় গ্রেপ্তার থাকায় বারবার রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে। বর্তমানে তিনি গাজীপুরের কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দি।

উল্লেখযোগ্য যে, একই মামলায় সাবেক তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনুকেও গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন মঞ্জুর হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।

নিরাপত্তা বাহিনী ও রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এই মামলাটি সরকারের প্রতি রাজনৈতিক বিরোধীদের দমননীতির একটি বড় উদাহরণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। পলকের মতো একজন সাবেক মন্ত্রীর বিরুদ্ধে এ ধরনের মামলার বিষয়টি রাজনৈতিক অঙ্গনেও ব্যাপক আলোচনা তৈরি করেছে।

সাধারণ মানুষের একাংশ এই ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করলেও, অপর পক্ষের মতে— আইনের শাসনের আওতায় সবাই সমান এবং অপরাধ প্রমাণিত হলে দোষী যেই হোক তাকে বিচারের সম্মুখীন হতেই হবে।

পলকের বিরুদ্ধে আদালতের গ্রেপ্তার দেখানো আদেশ তার রাজনৈতিক ভবিষ্যৎকে বড় ধরনের চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলতে পারে বলেও মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। তবে পলক কারাগারে থেকে যে আত্মিকভাবে পরিবর্তনের দিকে মনোযোগী হয়েছেন— তা তার কোরআন খতমের কথায়ই স্পষ্ট।

Nenhum comentário encontrado