close

ভিডিও আপলোড করুন পয়েন্ট জিতুন!

কাল পল্টনে জামায়াতসহ ৮ দলের সমাবেশ

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
সংবাদ সম্মেলনে হামিদুর রহমান আযাদ জুলাই সনদ, গণভোট এবং দেশের সাংবিধানিক পরিস্থিতি নিয়ে কয়েকটি বিস্ফোরক মন্তব্য করেন:..

আগামীকাল মঙ্গলবার (১১ নভেম্বর) রাজধানীর পল্টনে যুগপৎ আন্দোলনে অংশ নেওয়া আট দলের গণসমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। এই সমাবেশে ‘হাজার হাজার নয়, বরং লাখ লাখ মানুষের’ সমাগম হবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল হামিদুর রহমান আযাদ। তিনি বলেন, এই জনসমাবেশের মাধ্যমে সরকারের কাছে জনগণের মৌলিক দাবিগুলোর বিষয়ে একটি ‘বড় ধরনের মতামত’ তুলে ধরা হবে।

আজ সোমবার রাজধানীর পল্টনে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের কার্যালয়ে আট দলের বৈঠক শেষে এক সংবাদ সম্মেলনে এই ঘোষণা দেওয়া হয়। এই কর্মসূচিকে তারা আন্দোলনের একটি চলমান প্রক্রিয়া হিসেবে দেখছেন।

  • লক্ষ্য: জামায়াত নেতা হামিদুর রহমান আযাদ আশা প্রকাশ করেন, এই সমাবেশে লাখ লাখ মানুষের জমায়েত হবে এবং "লোকে লোকারণ্য হবে"।

  • অঞ্চল: তিনি জানান, দেশব্যাপী সমাবেশের ডাক না দিলেও, আগামীকাল শুধু রাজধানী ও আশপাশের জনবল নিয়েই সমাবেশ হবে।

  • বার্তা: এই সমাবেশ থেকেই সরকার যদি জনগণের দাবি বুঝতে পারে, তাহলে একটি বড় ধরনের মতামত উঠে আসবে বলে তারা মনে করছেন।

  • সময়সূচি: জনদুর্ভোগ এড়াতে তারা সমাবেশের সময় দুপুর ২টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত সীমিত করেছেন।

সংবাদ সম্মেলনে হামিদুর রহমান আযাদ জুলাই সনদ, গণভোট এবং দেশের সাংবিধানিক পরিস্থিতি নিয়ে কয়েকটি বিস্ফোরক মন্তব্য করেন:

১. সনদ বাস্তবায়ন পদ্ধতি নিয়ে সংকট

ঐকমত্য কমিশনের আলোচনা ভেস্তে গেছে কিনা—এই প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আলোচনা ভেস্তে যায়নি, বরং একটি চার্টার তৈরি হয়েছে এবং স্বাক্ষরিত হয়েছে।

"মূলত সনদ নিয়ে নয়, সনদ বাস্তবায়ন পদ্ধতি নিয়ে সংকট তৈরি হয়েছে।"

এই বক্তব্যটি মূলত বিএনপি এবং অন্যান্য দলের সঙ্গে তাদের মতপার্থক্যের কেন্দ্রবিন্দুকে নির্দেশ করে।

২. গণভোট: সাংবিধানিক অধিকারের প্রশ্ন

গণভোট নিয়ে যারা প্রশ্ন তুলছেন, তাদের কঠোর সমালোচনা করেন জামায়াত নেতা।

"গণভোট সংবিধানে ছিল, ফ্যাসিস্টরা বাদ দিয়েছে। যারা সংবিধানে গণভোট নেই বলে বলছেন, তারা ফ্যাসিস্টের কাজকে সমর্থন করছে।"

৩. বর্তমান সরকারের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন

তিনি বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের বৈধতা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন এবং বলেন, সংবিধানে ৫ বছর পর নির্বাচনের কথা আছে। সেই যুক্তিতে নির্বাচন ২০২৬ সালে হওয়ার কথা।

"সংবিধানে ৫ বছর পর নির্বাচনের কথা আছে। তাহলে কি সংবিধান অনুযায়ী ২০২৬ সালে নির্বাচন হওয়ার কথা? বর্তমান সরকারও তো সংবিধান অনুযায়ী ক্ষমতা পায়নি।"

বিএনপির সঙ্গে আলোচনার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বিএনপি প্রকাশ্যে ঘোষণা করেছে যে তারা জামায়াতের ডাকে সাড়া দেবে না। এর জবাবে তিনি বলেন:

"আমরাও প্রকাশ্যে বলে দিলাম, উনারা আমাদের ডাকুক, আমরা অবশ্যই সাড়া দেব। আমরা আলোচনা এবং আন্দোলন উভয় চেষ্টা অব্যাহত রাখব।"

এই বক্তব্যে একদিকে বিএনপির প্রতি কিছুটা নমনীয় মনোভাব দেখা গেলেও, অন্যদিকে আলোচনার জন্য বল এখন বিএনপির কোর্টে ঠেলে দেওয়ার কৌশল লক্ষ্যণীয়।

একজন জ্যেষ্ঠ সংবাদ বিশ্লেষক হিসেবে বলা যায়, ডিএমপি কর্তৃক সুপ্রিম কোর্ট ও প্রধান বিচারপতির বাসভবন এলাকায় সমাবেশ নিষিদ্ধ করার ঠিক একদিন আগে জামায়াতের পক্ষ থেকে এই ‘লাখ লাখ’ মানুষের জমায়েতের ঘোষণাটি সরকারের ওপর চরম চাপ সৃষ্টির একটি কৌশল। জামায়াত চাইছে, তাদের এই জনশক্তির প্রদর্শন দিয়ে গণভোটের দাবি এবং সনদ বাস্তবায়নের বিষয়ে তাদের অবস্থানকে প্রতিষ্ঠিত করতে।

এই সমাবেশটি ঢাকা শহরে সংঘাত ও জনদুর্ভোগের আশঙ্কা তৈরি করলেও, জামায়াত নেতা তার বক্তব্যে জনগণের মৌলিক দাবির প্রতি তাদের আন্দোলনকে নিবেদিত বলে দাবি করেছেন। এই সমাবেশ এবং এর পরের রাজনৈতিক পরিস্থিতিই বলে দেবে, সরকার সংঘাত এড়িয়ে সমঝোতার পথে হাঁটবে, নাকি দুই পক্ষের অনড় অবস্থানের কারণে দেশের রাজনৈতিক অস্থিরতা আরও বাড়বে।

कोई टिप्पणी नहीं मिली


News Card Generator