কাজ ছাড়া এক মুহূর্তও নয়’: অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি কঠোর বার্তা দিল এনসিপি..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) জানিয়ে দিয়েছে, কেবলমাত্র বিচার ও রাষ্ট্র সংস্কার দৃশ্যমান করলেই নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হবে। অন্তর্বর্তী সরকারকে সময় দেওয়া যেতে পারে, তবে কোনোভাবেই তা ‘কাজ ব্যতীত’ নয়।..

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সদস্য সচিব আখতার হোসেন সাফ জানিয়ে দিয়েছেন—বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারকে কোনোভাবেই ‘কাজ ছাড়া’ সময় দেওয়া যাবে না।
তিনি বলেন, “বিচার ও রাষ্ট্র সংস্কার দৃশ্যমান করতে সরকারকে যুক্তিসংগত সময় দেওয়া যেতে পারে। তবে সেটি যেন একমাত্র কাজের ভিত্তিতেই হয়।”

শনিবার দুপুর দেড়টার দিকে জাতীয় সংসদের এলডি হলে জাতীয় ঐক্যমত কমিশনের সঙ্গে এনসিপির বৈঠকের মধ্যবর্তী বিরতিতে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি। এর আগে সকাল ১০টার দিকে সংলাপের শুরুতে এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম রাষ্ট্র কাঠামোর আমূল সংস্কার এবং তা বাস্তবায়নের পথ তৈরির আহ্বান জানান ঐক্যমত কমিশনের কাছে।

আখতার হোসেন বলেন, “আমরা বিচার ও সংস্কারের বিষয়গুলোকে অগ্রাধিকার দিচ্ছি। সাবেক প্রধানমন্ত্রীসহ বিভিন্ন ব্যক্তির বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া হত্যা ও দমন-পীড়নের মামলার বিচারের জন্যই আমরা অন্তর্বর্তী সরকারকে যৌক্তিক সময় দেওয়ার পক্ষপাতী। তবে আমরা স্পষ্ট করছি—এই সময় যেন বিচার ও সংস্কার কাজের অগ্রগতিতে ব্যবহৃত হয়, অপচয় নয়।”

এনসিপি মনে করে, অন্তর্বর্তী সরকার যে এজেন্ডা ও ম্যান্ডেট নিয়ে ক্ষমতায় এসেছে, সেটিকে দৃশ্যমান করতে হবে। “নির্বাচন অবশ্যই প্রয়োজনীয়, তবে তার আগে বিচার ও রাষ্ট্র সংস্কারের রূপরেখা সুস্পষ্টভাবে জনগণের সামনে আসতে হবে।”

আলোচনার একপর্যায়ে আখতার হোসেন আরও জানান, তারা এখন পর্যন্ত সংবিধান সংশোধন সংক্রান্ত আলোচনা করেছেন, তবে বিচার বিভাগ, নির্বাচন কমিশন, জনপ্রশাসন, দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক), এবং পুলিশ সংস্কার কমিশনের বিষয়ে আলোচনা শুরু করতে পারেননি। তবে পুলিশ সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন সংলাপে অন্তর্ভুক্ত না হওয়া নিয়ে তারা প্রশ্ন তুলেছেন।

তিনি বলেন, “আমরা আমাদের মতামত তুলে ধরতে চেয়েছি, যাতে রাষ্ট্রব্যবস্থার ভারসাম্য রক্ষা করা যায়। বর্তমানে সংবিধান এমনভাবে গঠিত হয়েছে যে, একজন প্রধানমন্ত্রীকে একচ্ছত্র ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। এতে স্বৈরতান্ত্রিক প্রবণতা তৈরি হচ্ছে। তাই আমরা মৌলিক সংবিধান সংস্কারের দাবি জানাচ্ছি।”

আখতার হোসেন আরও বলেন, “আমরা ক্ষমতার ভারসাম্যের পক্ষে। সংবিধান পুনর্লিখনের প্রয়োজন রয়েছে। সেই সঙ্গে গণপরিষদ নির্বাচনের বাস্তবতা নিয়ে খোলামেলা আলোচনা প্রয়োজন।”

এনসিপির পক্ষ থেকে বৈঠকে অংশ নেন আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম, সদস্য সচিব আখতার হোসেন, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন, জ্যেষ্ঠ সদস্য সচিব নাহিদা সারোয়ার নিভা, মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) হাসনাত আব্দুল্লাহ, মুখ্য সমন্বয়ক মুহাম্মদ নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী, যুগ্ম-আহ্বায়ক সারোয়ার তুষার এবং জাবেদ রাসিন।

এ বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি আলী রীয়াজ এবং সঞ্চালনায় ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার।
সংলাপে অংশ নেন বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ বদিউল আলম মজুমদার, সফর রাজ হোসেন ও ইফতেখারুজ্জামান।

এনসিপির অবস্থান স্পষ্ট—নির্বাচন একটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ হলেও সেটি হবে বিচার ও সংস্কার দৃশ্যমান হওয়ার পর। সরকারের প্রতি সতর্ক বার্তা দিয়ে দলটি জানিয়ে দিয়েছে—‘কাজ ছাড়া এক মুহূর্তও নয়।

کوئی تبصرہ نہیں ملا