close

কমেন্ট করুন পয়েন্ট জিতুন!

জুলাই সনদের বাইরে নিবন্ধিত ৩০ দল

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
দেশের রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে বিবেচিত ‘জুলাই সনদ’-এর বাইরে অবস্থান করছে নিবন্ধিত প্রায় ৩০টি রাজনৈতিক দল; যা বৃহত্তর ঐক্যের পথে বাধা।..

দেশের রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে বিবেচিত ‘জুলাই সনদ’-এর বাইরে অবস্থান করছে নিবন্ধিত প্রায় ৩০টি রাজনৈতিক দল; যা বৃহত্তর ঐক্যের পথে বাধা।

দেশের বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে এক বড় ধরনের বিভাজন বা অনৈক্যের চিত্র স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। তথ্য অনুযায়ী, নিবন্ধিত প্রায় ৩০টি রাজনৈতিক দল একটি গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক সমঝোতা বা জোটবদ্ধতা—যা ‘জুলাই সনদ’ নামে পরিচিত—তার বাইরে অবস্থান করছে। এই বিশাল সংখ্যক দলের জোট থেকে দূরে থাকার বিষয়টি দেশের বৃহত্তর রাজনৈতিক ঐক্যের পথে একটি বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখা দিচ্ছে।

এই ৩০ দলের জোটবহির্ভূত অবস্থান ইঙ্গিত দেয় যে, জাতীয় রাজনীতিতে এখনো একটি সুস্পষ্ট বিভাজন বিদ্যমান। এটি শুধু ক্ষমতার বাইরে থাকা দলগুলোর মধ্যেই নয়, বরং একটি বৃহত্তর রাজনৈতিক পরিকল্পনার ক্ষেত্রেও ব্যাপক ভিন্নমত এবং মতাদর্শিক দূরত্ব নির্দেশ করে। ‘জুলাই সনদ’ বা এই সমঝোতার মূল বিষয়বস্তু যাই হোক না কেন, ৩০টি দলের তাতে যুক্ত না হওয়া তাদের নিজস্ব রাজনৈতিক স্বাতন্ত্র্য ও ভিন্ন কৌশল অবলম্বনের প্রমাণ দেয়।

জুলাই সনদের বাইরে থাকা এই দলগুলোর তালিকায় দেশের অনেক গুরুত্বপূর্ণ এবং পরিচিত রাজনৈতিক দলের নাম উঠে এসেছে। এই তালিকায় নাম রয়েছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি), জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ), এবং লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এলডিপি)-এর মতো প্রধান দলগুলোর। এসব দলের অনুপস্থিতিই প্রমাণ করে যে সনদের গুরুত্ব থাকা সত্ত্বেও একটি বৃহৎ রাজনৈতিক অংশ এর থেকে নিজেদের দূরে রেখেছে।

এছাড়াও, এই ৩০ দলের মধ্যে বিভিন্ন মতাদর্শের ছোট এবং মাঝারি মাপের দলগুলোরও উপস্থিতি লক্ষ্যণীয়। যেমন: ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক মুভমেন্ট (এনডিএম) পার্টি, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, বাংলাদেশ মুসলিম লীগ, বাংলাদেশ লেবার পার্টি, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি), বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, সাম্যবাদী দল, ভাসানী পার্টি এবং বাংলাদেশ সাম্যতন্ত্রী দল (বিএসপি)

এই দলগুলোর উপস্থিতি স্পষ্ট করে যে সনদের বিরোধিতা কোনো একক রাজনৈতিক আদর্শের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, বরং এটি বিভিন্ন ধরনের ডান, বাম, মধ্যপন্থী ও ইসলামপন্থী দলগুলোর মধ্যে ছড়িয়ে আছে। এটি দেশের রাজনৈতিক ঐক্যের পরিবর্তে একটি বহুমুখী রাজনৈতিক মেরুকরণের চিত্র তুলে ধরে।

নিবন্ধিত ৩০টি দলের এই জোটবহির্ভূত অবস্থান একটি সংখ্যাগত গুরুত্ব বহন করে। দেশের মূল রাজনৈতিক স্রোতে এই বিশাল সংখ্যক দলের অনাগ্রহ প্রমাণ করে যে, রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ায় এই সনদ হয়তো সকলের কাছে গ্রহণযোগ্যতা পায়নি, অথবা এতে এমন কিছু শর্ত আছে যা এই দলগুলোর মূল লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যের পরিপন্থী।

এই অ-অংশগ্রহণের রাজনৈতিক তাৎপর্য অত্যন্ত গভীর। এটি ভবিষ্যৎ নির্বাচন, সরকার গঠন প্রক্রিয়া এবং চলমান রাজনৈতিক সংকট নিরসনের প্রচেষ্টাগুলোকে প্রভাবিত করতে পারে। এই দলগুলো যদি সম্মিলিতভাবে সনদের বাইরে থেকে কোনো ভিন্ন পথ বা জোট গঠন করে, তবে তা দেশের ক্ষমতার ভারসাম্যে বড় ধরনের পরিবর্তন আনতে সক্ষম।

এই জোটবহির্ভূত দলগুলোর নেতৃত্বদানকারী কিছু ব্যক্তিত্বের নামও আলোচনায় এসেছে, যেমন বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট পার্টির চেয়ারম্যান এবং চেয়ারম্যান আবু জাফর। এই নেতারা এবং তাদের দলগুলো তাদের স্বাতন্ত্র্য বজায় রেখে জাতীয় রাজনীতিতে কী ধরনের প্রভাব ফেলেন, তা এখন দেখার বিষয়।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এই বৃহৎ সংখ্যক দলের সনদ থেকে বাইরে থাকা একটি গুরুত্বপূর্ণ বার্তা বহন করে। যদি এই দলগুলো ঐক্যবদ্ধ হয়ে একটি সম্মিলিত বিরোধী রাজনৈতিক শক্তি তৈরি করতে পারে, তবে তা ভবিষ্যতে যেকোনো জাতীয় ইস্যুতে সরকারকে তীব্র চাপের মুখে ফেলতে সক্ষম হবে।

‘জুলাই সনদ’কে কেন্দ্র করে দেশের নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলোর এই সুস্পষ্ট বিভাজন আগামী দিনের রাজনীতিতে অনিশ্চয়তা এবং নতুন জোট-সমীকরণের জন্ম দেবে বলে মনে করা হচ্ছে।

Aucun commentaire trouvé


News Card Generator