জুলাই শহীদদের জন্য ২৫ কোটি টাকার মানবিক তহবিল ঘোষণা করলো বাংলাদেশ ব্যাংক..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
Bangladesh Bank allocates Tk 25 crore fund to support the families of July Movement martyrs and the injured. The fund will aid treatment and provide financial relief.

বাংলাদেশ ব্যাংক জুলাই আন্দোলনের শহীদ ও আহতদের সহায়তায় গঠন করছে ২৫ কোটি টাকার তহবিল। শহীদ পরিবার ও আহতদের চিকিৎসা সহায়তায় ব্যবহার হবে এই অর্থ।

বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে 'জুলাই আন্দোলন' একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। এই আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী শহীদ ও আহতদের সম্মান জানাতে এবার ব্যতিক্রমী এক পদক্ষেপ নিচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংক। শহীদদের পরিবার এবং আহতদের চিকিৎসা ও পুনর্বাসনে সহায়তা প্রদানের লক্ষ্যে গঠিত হচ্ছে ২৫ কোটি টাকার একটি বিশেষ তহবিল

মঙ্গলবার (৮ জুলাই) রাজধানীর বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে এক উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর। সভায় উপস্থিত ছিলেন ব্যাংকের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্তরা। সভা শেষে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান সাংবাদিকদের বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

তিনি বলেন, “বাংলাদেশ ব্যাংক নিজস্ব তহবিল থেকে ১৪ কোটি টাকা দেবে। পাশাপাশি ভালো পারফর্ম করা ১১টি বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংক এক কোটি টাকা করে অর্থ দেবে। প্রতিটি ব্যাংক তাদের বোর্ড সভার মাধ্যমে এই অর্থ অনুমোদন করে প্রদান করবে।

জানা গেছে, এই তহবিল স্থানান্তর করা হবে ‘জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশন’-এর অধীনে। সেখান থেকেই শহীদদের পরিবার এবং আহতদের সহায়তা প্রদানের জন্য ব্যয় করা হবে অর্থ। বাংলাদেশ ব্যাংকের একাধিক কর্মকর্তা দীর্ঘদিন ধরেই এই দাবিকে সামনে রেখে তৎপর ছিলেন। অবশেষে তাঁদের এই চেষ্টাকে বাস্তব রূপ দিতে যাচ্ছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, এ উদ্যোগ শুধুমাত্র একটি অর্থনৈতিক সহায়তা নয় বরং এটি রাষ্ট্রায়ত্ত মানবিক দায়বদ্ধতার একটি গুরুত্বপূর্ণ নিদর্শন। এই তহবিলের মাধ্যমে যারা দেশের গণতন্ত্র ও মানুষের অধিকারের জন্য জীবন উৎসর্গ করেছেন বা আহত হয়েছেন, তাদের আত্মত্যাগকে রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে স্বীকৃতি দেওয়া হলো।

অর্থনীতিবিদ ও মানবাধিকার বিশ্লেষকদের মতে, এই তহবিল রাজনৈতিক সহিংসতায় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর জন্য বড় ধরনের প্রেরণা হয়ে উঠবে। তারা আরও বলেন, সরকারি বা বেসরকারি উভয় ক্ষেত্রেই এমন মানবিক সহায়তা কার্যক্রম বাড়ানো উচিত, যাতে মানুষের ভোগান্তি লাঘবের পাশাপাশি দেশব্যাপী নৈতিকতা ও সহমর্মিতা বাড়ে।

এদিকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এই ঘোষণাকে ঘিরে ইতোমধ্যেই ব্যাপক আলোচনা শুরু হয়েছে। অনেকেই বলছেন, দীর্ঘদিনের অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে অবশেষে শহীদ পরিবারগুলো রাষ্ট্রের কাছ থেকে কিছুটা হলেও মর্যাদা পাচ্ছে।

বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই উদ্যোগ শুধু বর্তমান প্রজন্মের নয়, ভবিষ্যৎ প্রজন্মকেও অনুপ্রাণিত করবে জাতির জন্য কাজ করতে এবং আত্মত্যাগীদের স্মরণে মানবিক মূল্যবোধ জাগিয়ে তুলবে।

Nenhum comentário encontrado