জুলাই কেবল আবেগ নয়, গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের ডাক, প্রধান উপদেষ্টা..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস জানান, জুলাই মাস গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের লড়াইয়ের প্রতীক, যেখানে দেশের মানুষ ঐক্যবদ্ধ হয়ে স্বৈরাচার মোকাবেলায় সজাগ থাকার শপথ নিচ্ছে।..

জুলাই মাস কেবল আবেগের সময় নয়, বরং এটি গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের একটি শক্তিশালী ডাক। দেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস মঙ্গলবার (১ জুলাই) ‘জুলাই অভ্যুত্থান’ স্মরণে মাসব্যাপী কর্মসূচির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এই বক্তব্য রাখেন।

তিনি বলেন, ‘জুলাই ছিল মর্মস্পর্শী, ফ্যাসিবাদী শাসনের বিরুদ্ধে কঠোর প্রতিবাদের মাস। এটি ছিল নতুন বাংলাদেশ গঠনের সংকল্পের মাস, যেখানে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের জন্য জনগণ ঐক্যবদ্ধ হয়েছিল।’ ড. ইউনূস আরও বলেন, ‘আমাদের এখন কাজ হলো যেন আমরা আরেকটি গণঅভ্যুত্থানের অপেক্ষায় না থাকতে হয়। স্বৈরাচারী শাসনের নতুন কোনো চক্রান্ত মাথাচাড়া দেওয়ার আগেই তা রুখে দিতে হবে।’

অনুষ্ঠানে প্রধান উপদেষ্টা উল্লেখ করেন, ‘এই কর্মসূচির মূল লক্ষ্য হলো জনগণকে তাদের গণতান্ত্রিক অধিকার সম্পর্কে সচেতন করা, রাজনৈতিক দায়বদ্ধতার দাবি তোলা এবং কাঙ্ক্ষিত সংস্কারের সুযোগ যাতে হারিয়ে না যায়, তা নিশ্চিত করা। যারা ছাত্রজনতার নেতৃত্বে শহীদ হয়েছেন, তাদের লক্ষ্য বাস্তবায়নে আমাদের আবার শপথ নিতে হবে। প্রতি বছর যেন জুলাই মাস উদযাপিত হয়, যাতে স্বৈরাচার কোনোভাবে মাথাচাড়া দিতে না পারে।’

প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে আয়োজিত অনুষ্ঠানে মাসব্যাপী কর্মসূচির সূচনা করা হয় এবং আনুষ্ঠানিকভাবে ‘জুলাই ক্যালেন্ডার’ প্রকাশ করা হয়। এছাড়া, নিহত শহীদদের স্মরণে দেশের সব ধর্মীয় উপাসনালয়ে বিশেষ দোয়া ও প্রার্থনা অনুষ্ঠিত হয়।

এই দিন থেকে শুরু হয়েছে ‘জুলাই খুনিদের’ বিচারের দাবিতে গণস্বাক্ষর অভিযান, যা চলবে ১ আগস্ট পর্যন্ত। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্যোগে শহীদদের স্মরণে শিক্ষাবৃত্তি কার্যক্রমও চালু করা হয়েছে।

অনুষ্ঠানসূচি অনুযায়ী, জুলাই মাসজুড়ে আরও কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ কর্মসূচি পালিত হবে। ৫, ৭ ও ১৪ জুলাই বিশেষ কর্মসূচি থাকবে। মাসজুড়ে এসব কর্মসূচি জাতীয় ঐক্যের প্রতীক হিসেবে গণ্য হবে। মাসের চূড়ান্ত দিন ৫ আগস্ট, যাকে ‘৩৬ জুলাই’ নামে স্মরণ করা হয়, কেন্দ্রে রেখে বিশেষ আয়োজন করা হবে। ওইদিন স্মৃতিস্তম্ভে শ্রদ্ধা নিবেদন, শহীদ পরিবারের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার সাক্ষাৎ, বিজয় মিছিল, এয়ার শো, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, ভিডিও-ডকুমেন্টারি প্রদর্শনী ও ড্রোন শো অনুষ্ঠিত হবে।

জানানো হয়, ২০২৪ সালের জুলাই মাসে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকে ছাত্র-জনতা দেশজুড়ে ব্যাপক গণঅভ্যুত্থান গড়ে তোলে। সেই আন্দোলনের চূড়ান্ত রূপ হলো ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতন। এই ঐতিহাসিক ঘটনার স্মৃতিচারণ করে এটি এখন ‘জুলাই বিপ্লব’ বা ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান’ নামে পরিচিত।

Tidak ada komentar yang ditemukan