close

ভিডিও আপলোড করুন পয়েন্ট জিতুন!

জুলাই ঘোষণাপত্রে বাংলাদেশের গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার আহ্বান..

Mahamud Mithu avatar   
Mahamud Mithu
জুলাই ঘোষণাপত্রে বাংলাদেশের ফ্যাসিবাদী শাসনের অবসান ও গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার গুরুত্ব তুলে ধরা হয়েছে।..

জুলাই ঘোষণাপত্রের মাধ্যমে বাংলাদেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে একটি নতুন দিগন্ত উন্মোচনের আহ্বান জানানো হয়েছে। এই ঘোষণাপত্রটি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আট বছরের শাসনের পতনের বার্ষিকীতে জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজায় পাঠ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। 

ঘোষণাপত্রের মূল বক্তব্যে উঠে এসেছে গত ষোল বছরের ফ্যাসিবাদী, অগণতান্ত্রিক এবং গণবিরোধী শাসনের বিরুদ্ধে জনগণের সংগ্রামের কথা। ঘোষণাপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে যে, ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্য যে ত্যাগ স্বীকার করা হয়েছিল, তা আজও গণতন্ত্র, মানবাধিকার ও সাম্য প্রতিষ্ঠার জন্য প্রাসঙ্গিক। 

ঘোষণাপত্রে বলা হয়েছে, স্বাধীন বাংলাদেশের ১৯৭২ সালের সংবিধান প্রণয়ন পদ্ধতি এবং এর কাঠামোগত দুর্বলতার কারণে মুক্তিযুদ্ধের জনআকাঙ্ক্ষা পূরণে ব্যর্থতা ঘটেছে। এ কারণে আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে বাকশাল প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে একদলীয় শাসন ব্যবস্থা চালু হয়েছিল, যা পরবর্তীতে ১৯৯০ সালে গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে পুনরায় সংসদীয় গণতন্ত্রের পথে ফিরে আসে। 

একইসঙ্গে, ঘোষণাপত্রে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শাসনের পরবর্তী সময়ে স্বাধীনতার মূলমন্ত্র গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থার বিপরীতে একদলীয় শাসনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার পেছনে অভিযোগ তুলে ধরা হয়েছে। 

ঘোষণাপত্রে আরও বলা হয়েছে, গত কয়েক বছর ধরে দেশে চরম দুর্নীতি, অর্থ পাচার, গুম-খুন, এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ উঠেছে। এ কারণে দেশের আন্তর্জাতিক ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়েছে এবং অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত হয়েছে। 

প্রধান উপদেষ্টা ইউনূস ঘোষণাপত্রে বলেন, "বাংলাদেশের জনগণের দীর্ঘদিনের সংগ্রামের ফসল এই দিন। আমরা ফ্যাসিবাদী শাসনের অবসান চাই এবং গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা করতে চাই।" 

ঘোষণাপত্রে বাংলাদেশের জনগণকে একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন পরিচালনার মাধ্যমে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ব্যবস্থা পুনঃপ্রতিষ্ঠার আহ্বান জানানো হয়েছে। একইসঙ্গে, ফ্যাসিবাদী শাসনের পুনরাবৃত্তি রোধ, আইনের শাসন এবং মানবাধিকারের সুরক্ষা নিশ্চিত করার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে। 

এছাড়াও, ঘোষণাপত্রে ফ্যাসিবাদী শাসনের সময় সংঘটিত গুম-খুন, হত্যা, এবং মানবতা বিরোধী অপরাধের দ্রুত বিচার দাবি করা হয়েছে। 

ঘোষণাপত্রের মাধ্যমে বাংলাদেশের জনগণের আকাঙ্ক্ষা এবং ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনের সফলতার প্রতিফলন ঘটেছে। ভবিষ্যতে একটি পরিবেশ ও জলবায়ু সহিষ্ণু সমাজ এবং টেকসই উন্নয়নের মাধ্যমে বর্তমান ও ভবিষ্যত প্রজন্মের অধিকার সংরক্ষণের জন্যও আহ্বান জানানো হয়েছে। 

জুলাই ঘোষণাপত্রের মাধ্যমে বাংলাদেশের জনগণ একটি নতুন রাজনৈতিক ও সাংবিধানিক সময়ের সূচনা করতে চায়, যেখানে গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ, মানবাধিকার এবং সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত হবে।

Keine Kommentare gefunden