close

ভিডিও আপলোড করুন পয়েন্ট জিতুন!

জুলাই ঘোষণাপত্র দেবে অন্তর্বর্তী সরকার, কোনো দল বা ব্যক্তি নয় , জুলাই ঐক্য..

আই নিউজ বিডি ডেস্ক  avatar   
আই নিউজ বিডি ডেস্ক
জুলাই ঘোষণাপত্রের দাবিতে তীব্র অবস্থান জুলাই ঐক্যের। বলছে, এখন আর কোনো দল নয়, সরকারকেই দিতে হবে সনদ—না হলে ছাত্র-জনতা নিজেই আদায় করবে।..

একটি প্রতিশ্রুতি, একটি চুক্তি, একটি দাবির কেন্দ্রে এখন পুরো একটি প্রজন্ম—আর সেই চুক্তির নাম “জুলাই সনদ”। দীর্ঘ ১১ মাসেও সরকার তা না দেওয়ায় ‘জুলাই ঐক্য’ নামে ছাত্র ও নাগরিক আন্দোলনের প্ল্যাটফর্ম নতুন করে উত্তাল হয়ে উঠেছে।
মঙ্গলবার দুপুর ১২টায় রাজধানীর জাতীয় জাদুঘরের সামনে ‘মার্চ ফর জুলাই রিভাইভস’ কর্মসূচি থেকে এই দাবি তোলেন তারা।

জুলাই ঐক্যের সংগঠক এবি জুবায়ের বলেন,১১ মাস কেটে গেলেও আমরা সেই বহুল প্রতীক্ষিত জুলাই সনদ পেলাম না। এখন আর কোনো দল বা ব্যক্তি নয়—এই সরকারকেই সনদ ও ঘোষণাপত্র দিতে হবে। তা না হলে ছাত্র-জনতা রাজপথে আদায় করে নেবে। আর যদি কেউ এককভাবে সনদ দিতে চায়, আমরা কঠোরভাবে প্রত্যাখ্যান করব।

এখানেই শেষ নয়, এবি জুবায়ের সরকারকে স্পষ্ট করে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন,ব্যর্থতা দেখালে সরকারকে দ্রুত নির্বাচন দিয়ে বিদায় নিতে হবে।

জুলাই ঐক্যের আরেক সংগঠক মুসাদ্দেক আলী ইবনে মোহাম্মদ বলেন ,আমরা অনেক দিন অপেক্ষা করেছি। এবার আর নয়। অবিলম্বে জুলাই ঘোষণাপত্র দিন। না দিলে ইতিহাসের বাঁকে এই আন্দোলনকে সন্ত্রাসী বলে ঘোষণা দেওয়ার সুযোগ তৈরি হবে, যা আমরা চাই না।

তিনি আরও বলেন,এই জুলাই যোদ্ধারা সাংবিধানিক স্বীকৃতি দাবি করছে। সরকার কালক্ষেপণ না করে দ্রুত পদক্ষেপ নিক।

গত বছর একটি গণঅভ্যুত্থানের পরিপ্রেক্ষিতে ছাত্র-জনতা ও নাগরিক সমাজের পক্ষ থেকে জুলাই মাসকে নতুন বাংলাদেশের সূচনাক্ষণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। সেই প্রেক্ষিতেই একটি ঘোষণাপত্র বা ‘সনদ’ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল সরকার। কিন্তু আজও তা বাস্তবায়ন না হওয়ায় ছাত্র-জনতা ক্ষুব্ধ।

জুলাই ঐক্যের সংগঠক ইসরাফিল ফরাজী আরও কড়া ভাষায় সরকারের সমালোচনা করে বলেন,১১ মাসেও সরকার কোনো সংস্কার আনতে পারেনি। সচিবালয় থেকে গণমাধ্যম—সব জায়গায় ফ্যাসিবাদের দোসররা বিশৃঙ্খলা তৈরি করে রেখেছে।

তিনি আরও বলেন,এনাআরবি থেকে শুরু করে দেশের প্রতিটি জায়গায় সাংবাদিকদের নামে মামলা হয়েছে, ৩২ জনের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ—কিন্তু সরকার কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না! তাহলে কি এসব দোসরদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে চলছে সরকার?

তিনি বলেন,ছাত্র-জনতা এবার সিদ্ধান্ত নেবে—ফ্যাসিবাদ থেকে দেশকে মুক্ত করতেই হবে।

এই ঘোষণার পাশাপাশি ‘নতুন বাংলাদেশ’ গঠনের দাবিতে একটি পূর্ণাঙ্গ কর্মসূচিও ঘোষণা করা হয়েছে। নিচে তা তুলে ধরা হলো—

আন্দোলনের পর্যায়ক্রমিক কর্মসূচি:

১. ১ জুলাই:
সকাল ১০:৪৫ মিনিটে ‘মার্চ ফর জুলাই রিভাইভস’ পদযাত্রা (প্রেস ক্লাব → শাহবাগ)।
দাবি: গণমাধ্যমে সংস্কার, ভারতের প্রক্সি শাসনের অবসান, ঘোষণাপত্র প্রকাশ।

২. ২-৯ জুলাই:
দেশব্যাপী অনলাইন ও সরাসরি গণসংযোগ। বিভিন্ন রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক সংগঠনকে ঐক্যে যুক্ত করার উদ্যোগ।

  1. ১০ জুলাই:
    সকাল ৯টা–২টা: প্রতিনিধি সম্মেলন।

  2. ১১ জুলাই:
    শহীদ পরিবার ও আহতদের সঙ্গে সাক্ষাৎ।

  3. ১৫ জুলাই:
    রাত ৭:৩০টায় প্রতীকী কফিন মিছিল (ঝিগাতলা → কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার)।

  4. ১৬ জুলাই:
    সারা দেশে শহীদদের স্মরণে দোয়া ও কবর জিয়ারত।

  5. ১৭ জুলাই – ১ আগস্ট (৩২ জুলাই):
    দেশব্যাপী জুলাইয়ের শপথ।

  6. ২ আগস্ট (৩৩ জুলাই):
    দুপুর ২:৩০ মিনিটে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে গণশপথ

  7. ৩ আগস্ট (৩৪ জুলাই):
    জুলাইয়ের তথ্যচিত্র প্রকাশ

  8. ৪ আগস্ট (৩৫ জুলাই):
    জুলাই বিষয়ক ভিডিও প্রকাশনা ও শেয়ারিং ক্যাম্পেইন

  9. ৫ আগস্ট (৩৬ জুলাই):
    গণঅভ্যুত্থান ও নতুন বাংলাদেশ দিবস উদযাপন।

এক বছরের অপেক্ষা, এক অসহিষ্ণু সময়। এখন আর প্রতীক্ষার প্রহর নয়—‘জুলাই ঐক্য’-এর ঘোষণা অনুযায়ী, এখন সময় ঘোষণাপত্রের বাস্তবায়ন
ছাত্র-জনতার কণ্ঠে একটাই স্লোগান:জুলাই সনদ চাই, এখনই চাই!

সরকার যদি সত্যিই গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে—তবে সেই কণ্ঠস্বরকে অবহেলা নয়, প্রাতিষ্ঠানিক স্বীকৃতি দিতে হবে।
তা না হলে, ইতিহাস নিজেই তৈরি হবে রাজপথে।

No se encontraron comentarios


News Card Generator